মনিরুল ইসলাম: জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেছেন, ড. ইউনূস কোনো আইনের জোরে নয়, বরং ছাত্রজনতা ও তরুণ প্রজন্মের রক্তের বিনিময়ে রাষ্ট্রক্ষমতায় এসেছেন। তাই তাঁকে কোনো বিশেষ দল বা ব্যক্তির প্রতি নয়, বরং দায়িত্ববোধের প্রতি দায়বদ্ধ থাকতে হবে। সেই দায়িত্ব হলো—একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন করা।
তিনি বলেন, নির্বাচন আয়োজনের আগে সরকারের মধ্যে থাকা দলীয় উপদেষ্টা ও প্রশাসনের ব্যক্তিদের পরিবর্তন করতে হবে। দলনিরপেক্ষ প্রশাসন ছাড়া অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।
বুধবার রাজধানীর গুলশানের হাওলাদার টাওয়ারে উপজেলা দিবস উপলক্ষে জাতীয় পার্টি আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এর আগে সরকারের তথ্য উপদেষ্টা দাবি করেন, প্রশাসন বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যে ভাগ হয়ে গেছে। এ প্রসঙ্গে ব্যারিস্টার আনিস বলেন, “আমাদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে হাত-পা বেঁধে রাখা হয়েছে। সভা-সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না। এ অবস্থায় নির্বাচন অংশগ্রহণ কঠিন।”
তিনি আরও বলেন, “প্রধান উপদেষ্টা বারবার বলছেন, আগামী নির্বাচন সবচেয়ে সুন্দর ও গ্রহণযোগ্য হবে। আমরা তাঁর প্রতি আস্থা রাখতে চেয়েছিলাম, কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে তা নিয়ে সন্দেহ থেকেই যাচ্ছে।”
সভায় জাতীয় পার্টির মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন না হলে নির্বাচনের পর গঠিত সংসদ দীর্ঘস্থায়ী হবে না। তিনি দ্রুত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও সব দলের জন্য প্রচারণার সুযোগ নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
হাওলাদার বলেন, “প্রফেসর ইউনূস জাতিসংঘে বলেছেন, ছাত্ররা তাঁকে ক্ষমতায় বসিয়েছে। কিন্তু এখন সেই ছাত্ররাই তাঁর সরকারের সমালোচনা করছে। তাই আমি তাঁকে অনুরোধ করব, তিনি যেন কোনো বিশেষ পক্ষ না নিয়ে জাতির স্বার্থে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন উপহার দেন।”
তিনি স্মরণ করিয়ে বলেন, “এরশাদ সাহেব আপনাকে গ্রামীণ ব্যাংক দিয়েছিলেন, যার মাধ্যমে আপনি নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন। দেশও সম্মানিত হয়েছে। সেই কৃতজ্ঞতার জায়গা থেকে অন্তত জাতীয় পার্টির বিষয়ে আপনি নিরপেক্ষ থাকবেন—এটাই আমাদের প্রত্যাশা।”
সভায় আরও বক্তব্য দেন জাতীয় পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান এডভোকেট কাজী ফিরোজ রশিদ, নির্বাহী চেয়ারম্যান মুজিবুল হক চুন্নু, কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক নূরুল ইসলাম মিলন, মোবারক হোসেন আজাদ প্রমুখ।
সভা পরিচালনা করেন প্রেসিডিয়াম সদস্য ফখরুল আহসান শাহজাদা ও মো. বেলাল হোসেন। পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত ও দোয়া পরিচালনা করেন গুলশান আজাদ মসজিদের খতিব হাফেজ মাওলানা আহসান উল্লাহ।