সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে ১৯৩৮ সালের হজযাত্রার একটি বিরল ভিডিও। এতে পবিত্র নগরী মক্কার অভিমুখে হজযাত্রীদের একটি ঐতিহাসিক চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। ভিডিওটি এমন এক সময়ের দৃশ্য ধারণ করে যখন অনেক হজযাত্রী পায়ে হেঁটে, উটের পিঠে কিংবা গাড়িতে করে দীর্ঘপথ পাড়ি দিচ্ছেন। আধুনিক যান্ত্রিক সুবিধা তখনো ছিল সীমিত, আর এ যাত্রা ছিল একধরনের কঠোর আত্মত্যাগ ও গভীর নিষ্ঠার বহিঃপ্রকাশ।
ভিডিওতে দেখা যায়, তপ্ত মরুভূমিতে খোলা আকাশের নিচে হজযাত্রীদের জন্য খাবার প্রস্তুত ও বিতরণ করছেন স্থানীয় মানুষরা। এই মানবিক সহায়তা এবং সম্প্রীতির দৃশ্য গুলোই হজের প্রকৃত চেতনাকে আরও গভীরভাবে ফুটিয়ে তোলে। খবর গালফ নিউজের।
পাশাপাশি, ভিডিওতে দেখা গেছে হজ পালনকারীদের কঠোর শারীরিক পরিশ্রমের কিছু মুহূর্ত-যা প্রমাণ করে, ধর্মীয় কর্তব্য পালন করতে তাদের কী দৃঢ়তা ও সহনশীলতার দরকার হতো।
১৯৩৮ সালের সেই সময়ে হজে অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা ছিল মাত্র কয়েক হাজার। অথবা সর্বোচ্চ ২০-৩০ হাজার। তুলনামূলকভাবে আজকের দিনে হজে অংশ নেন ৪০-৫০ লাখের বেশি মুসলমান। আধুনিক অবকাঠামো, বিমানযাত্রা ও স্বাস্থ্যসেবা সুবিধা পর্যাপ্ত হওয়ায় বাড়ছে হজযাত্রীর সংখ্যা।
এই ভিডিওচিত্র শুধুমাত্র একটি স্মৃতি নয়, বরং ইসলামী ঐতিহ্য ও ইতিহাসের এক মূল্যবান দলিল। এটি দেখলে বর্তমান প্রজন্ম উপলব্ধি করতে পারবে, প্রযুক্তিহীন যুগে কতটা ত্যাগ ও কষ্ট সহ্য করে মুসলমানরা হজ পালন করতেন। এই ধরনের দুষ্প্রাপ্য ফুটেজ শুধু ইতিহাসকে জীবন্ত করে তোলে না, বরং বর্তমান মুসলমানদের মনে হজের প্রতি শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা আরও গভীর করে তোলে। ৮৭ বছর আগের সেই হজযাত্রা আজও বলে যায়-বিশ্বাস ও নিষ্ঠা থাকলে পথ যত কঠিন হোক, গন্তব্যে পৌঁছানো সম্ভব।