পার্সটুডে- একজন আরব বিশ্লেষক ফিলিস্তিনিদের দুর্দশার ব্যাপারে ইহুদিবাদীদের উদাসিনতা, অভিন্ন অবস্থান বা একই দৃষ্টিভঙ্গিকে "নৈতিক অন্ধত্ব" বলে অভিহিত করেছেন।
গাজা উপত্যকায় ইহুদি বন্দীদের পরিবারগুলো গত সপ্তাহে তেল আবিবে আবারও বিক্ষোভ করেছে, তাদের মুক্তির দাবিতে। ইসরায়েলি বিক্ষোভকারীরা গাজা যুদ্ধের অবসান এবং ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ যোদ্ধাদের সাথে বন্দী বিনিময় চুক্তিতে পৌঁছানোর আহ্বান জানিয়ে স্লোগান দিয়েছে। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, ইহুদিবাদীদের বিক্ষোভকে গাজার জনগণের প্রতি তাদের সহানুভূতির চিহ্ন হিসাবে দেখা উচিত নয়, যদিও তারা গাজা যুদ্ধেরও অবসান চেয়েছে। কিন্তু তাদের এই চাওয়ার একটি কারণ রয়েছে আর তা হল হামাসের হাতে আটক ইহুদিবাদী বন্দীদের ভাগ্য সম্পর্কে তাদের উদ্বেগ। পার্সটুডে অনুসারে, আন্তর্জাতিক বিষয়ের একজন বিশিষ্ট বিশ্লেষক মুহাম্মদ আল-সেনুসি ফিলিস্তিনিদের দুর্দশার ব্যাপারে ইহুদিবাদীদের উদাসিনতা, অভিন্ন অবস্থান বা একই দৃষ্টিভঙ্গিকে "নৈতিক অন্ধত্ব" বলে অভিহিত করেছেন।
আল জাজিরার ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক নিবন্ধে, মরক্কোর পঞ্চম মোহাম্মদ বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক বিষয়ক অধ্যাপক আল-সেনুসি বলেছেন, ইহুদিবাদ কেবল একটি জাতিগত ও রাজনৈতিক মতাদর্শ যা বিংশ শতাব্দীতে এসে ইহুদি ধর্মকে নতুন করে চিত্রায়িত করেছিল এবং ফিলিস্তিনি ভূমিতে একচেটিয়া আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করেছি। তার মতে, "ফিলিস্তিনের" অস্তিত্ব অস্বীকারের উপর ভিত্তি করে ইসরায়েল নামক অবৈধ ইহুদি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা হয়।
বিশ্লেষক বিশ্বাস করেন যে ইসরায়েলি শাসনব্যবস্থার ভিত্তি সুদৃঢ় করার জন্য ফিলিস্তিনিদের ভূমি, সম্পদ এবং জনসংখ্যা পুনর্বণ্টন তাদের অনুকূলে আনার চেষ্টা করছে।
আল-সেনুসি লিখেছেন যে ইহুদিবাদী মিডিয়া, ইসরায়েলি স্কুলগুলোতে নেতিবাচক চিত্র তুলে ধরার মাধ্যমে যেমন ইসরায়েল প্রতিষ্ঠাকে "মুক্তি" বলে অভিহিত করে এমন একটি আখ্যান শেখানোর চেষ্টা করছে যাতে মনে হবে এখানে আদৌ ফিলিস্তিনিদের কোনো অস্তিত্বই ছিল না।
তিনি বলেন এই প্রক্রিয়ার ফলাফল স্বরূপ এমন এক মনোভাব সেখানে গড়ে উঠেছে যে একজন ফিলিস্তিনির মৃত্যুর খবর খুবই সাধারণ একটি বিষয় কিন্তু একজন ইহুদিবাদীর বন্দীর ঘটনা অনেক বড় এবং উদ্বেগের বিষয়।
আন্তর্জাতিক বিষয়ক এই বিশেষজ্ঞ আরো বলেছেন, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর নীতির বিরুদ্ধে ২০২৪ এবং ২০২৫ সালে যে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছে তা গাজায় বেসামরিক নাগরিকদের হত্যার নিন্দা করার জন্য ছিল না, বরং মূলত ইসরায়েলি বন্দীদের মুক্তির দাবিতে ছিল। এ থেকে বোঝা যায় ইসরায়েলিদের সম্মিলিত বিবেক তখনই সক্রিয় হয় যখন একজন "ইহুদিবাদী বিপদে থাকে" এবং অন্য কারো জন্য তাদের বিবেক বিন্দুমাত্র কোশার্ত নয়।