ভারতের ছত্তিশগড়ে এক চাঞ্চল্যকর ঘটনার উদ্ঘাটন করেছে পুলিশ। প্রিয় নারীর স্বামীকে হত্যা করতে ভয়ংকর ষড়যন্ত্র করেন বিনয় বর্মা নামের এক ব্যক্তি। তিনি বড়সড় একটি মিউজিক সিস্টেমের ভেতরে বোমা রেখে সেটি পার্সেল আকারে পাঠান ওই নারীর স্বামী আফসার খানের ঠিকানায়।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানায়, ঘটনার দিন একটি পার্সেল এসে পৌঁছায় আফসার খানের কাছে। কিন্তু তিনি কোনো অনলাইন অর্ডার করেননি। এত বড় উপহারও কেউ পাঠিয়েছে—এমন ধারণা তার ছিল না। তবে খামের উপর পোস্ট অফিসের লোগো দেখে সন্দেহ হওয়ায় তিনি দ্রুত পুলিশের দ্বারস্থ হন। বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দল এসে পার্সেলটি খোলার পর ভেতরে একটি মিউজিক সিস্টেম পান তারা। তবে সেটি পরীক্ষা করতে গিয়েই বেরিয়ে আসে ভয়াবহ সত্য।
তদন্তে জানা যায়, ওই মিউজিক সিস্টেমের ভেতরে প্রায় ২ কেজি বিস্ফোরক লুকানো ছিল। বিস্ফোরকটি এমনভাবে সংযুক্ত ছিল যে বিদ্যুতের সংযোগ দেওয়া মাত্রই তা বিস্ফোরিত হওয়ার মতো ব্যবস্থা করা হয়েছিল। সৌভাগ্যবশত সময়মতো তা শনাক্ত হওয়ায় ভয়াবহ দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব হয়।
ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ প্রথমে বিনয় বর্মাকে আটক করে। তিনি পেশায় ইলেকট্রিক মিস্ত্রি এবং খয়রাগড় গ্রামের বাসিন্দা। জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ জানতে পারে, বহুদিন ধরে আফসারের সদ্যবিবাহিত স্ত্রীকে পছন্দ করতেন তিনি। তবে নিজের ভালোবাসার পথে বাধা হয়ে দাঁড়ানো আফসারকে সরাতেই তিনি এই ভয়ংকর পরিকল্পনা করেন। তদন্তে আরও বেরিয়ে আসে, গুগল সার্চের সাহায্যে তিনি নিজেই বোমাটি তৈরি করে সেট করেন মিউজিক সিস্টেমের ভেতরে।
এই ঘটনায় অবৈধ বিস্ফোরক পাচারচক্রের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে পুলিশ ইতোমধ্যে আরও ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জানায়, আফসার খানকে হত্যার ষড়যন্ত্র বানচাল করার পাশাপাশি এ অভিযানে স্থানীয় একটি অবৈধ বিস্ফোরক পাচারচক্রকেও শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে।
ছত্তিশগড় পুলিশ জানিয়েছে, ষড়যন্ত্রের নেপথ্যে আরও বড় কোনো নেটওয়ার্ক রয়েছে কি না, তা জানতে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।