গাজায় রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ ও দীর্ঘদিনের অচলাবস্থার পর অবশেষে নতুন করে আলোচনার আভাস মিলেছে। হামাস জানিয়েছে, তারা আঞ্চলিক মধ্যস্থতাকারীদের সর্বশেষ যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি মুক্তি প্রস্তাবে সম্মতি দিয়েছে। বিষয়টি বিবিসিকে নিশ্চিত করেছে সংগঠনটির এক সূত্র।
ফিলিস্তিনি এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে বিবিসি জানিয়েছে, মিসর ও কাতারের উদ্যোগে যে প্রস্তাব আনা হয়েছে, তা যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফের প্রস্তাব করা কাঠামোর ওপর ভিত্তি করে তৈরি। প্রস্তাব অনুযায়ী, ৬০ দিনের অস্থায়ী যুদ্ধবিরতির মধ্যে হামাস দুই ধাপে তাদের হাতে থাকা প্রায় অর্ধেক ইসরায়েলি জিম্মি মুক্তি দেবে। ধারণা করা হচ্ছে, অবশিষ্ট ৫০ জিম্মির মধ্যে মাত্র ২০ জন জীবিত আছেন।
এই সময়ের মধ্যে স্থায়ী যুদ্ধবিরতি ও গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহারের বিষয়ে আলোচনার অগ্রগতি হবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে ইসরায়েলের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য আসেনি।
রোববার রাতে তেল আবিবে লাখো মানুষ রাস্তায় নেমে সরকারের কাছে আহ্বান জানিয়েছেন যেন তারা হামাসের সঙ্গে দ্রুত চুক্তি করে জিম্মিদের ফেরত আনে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বিক্ষোভকারীদের সমালোচনা করে বলেন, তাদের অবস্থান হামাসের আলোচনাকে আরও কঠিন করে তুলছে।
যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে হামাস রাজি হওয়ার এ ঘটনাটি ঘটল মাত্র দুই দিন পর, যখন নেতানিয়াহুর কার্যালয় জানায়—ইসরায়েল কেবল তখনই চুক্তি করবে যদি সব জিম্মিকে একসঙ্গে মুক্তি দেওয়া হয়। পাশাপাশি, এই সপ্তাহেই ইসরায়েলি মন্ত্রিসভা গাজায় সামরিক অভিযান সম্প্রসারণ এবং গাজা নগরী দখলের পরিকল্পনা অনুমোদন করতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
গত মাসে পরোক্ষ আলোচনার ভেঙে পড়ার পর নেতানিয়াহু ঘোষণা করেছিলেন, হামাস নিরস্ত্র না হওয়া পর্যন্ত এবং সব জিম্মিকে মুক্তি না দেওয়া পর্যন্ত যুদ্ধ থামবে না। অন্যদিকে হামাস বলেছিল, যুদ্ধের স্থায়ী অবসান ছাড়া তারা আর কোনো জিম্মি মুক্তি দেবে না।
বিশ্লেষকরা বলছেন, হামাসের নতুন প্রস্তাবে সম্মতি দিলেও ইসরায়েলের অনড় অবস্থান ও সামরিক পরিকল্পনা গাজায় যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনাকে এখনো অনিশ্চিত করে রেখেছে।