শিরোনাম
◈ যে ৩ শ্রেণীর মানুষের জন্য অনলাইন ই-রিটার্ন বাধ্যতামূলক নয় ◈ মার্কিন ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে এনসিপির শীর্ষ নেতাদের বৈঠক ◈ সংস্কারের অভাবে মোংলা-খুলনা মহাসড়ক এখন মরণফাঁদ: বাড়ছে জনদুর্ভোগ ও দুর্ঘটনা ◈ বেহাল দশা বাংলা‌দেশ দ‌লের, ওয়ানডে র‌্যাঙ্কিংয়ের অবস্থান ১০ নম্ব‌রে ◈ ইতালি গমনেচ্ছুদের জন্য সুখবর: বাংলাদেশ-ইতালি অভিবাসন চুক্তি স্বাক্ষরিত, বৈধ পথে কর্মী প্রেরণার দ্বার উন্মোচিত ◈ ভারতে আটক ৫ বাংলাদেশি, বললেন ‘আমরা শেখ হাসিনার দল করতাম’ ◈ বিএনপির ফজলুর রহমানকে নিয়ে যা বললেন সারজিস ◈ খায়রুল হকের জামিন শুনানি: ‘গণতন্ত্র ধ্বংসকারী’ মন্তব্যে এজলাস কক্ষে হট্টগোল-হাতাহাতি ◈ মালয়েশিয়ায় পৌঁছেছেন প্রধান উপদেষ্টা ◈ দুর্বল ৫ ইসলামী ব্যাংক একীভূত করাসম্ভব, প্রক্রিয়া শুরু সপ্তাহের মধ্যে: গভর্নর

প্রকাশিত : ১১ আগস্ট, ২০২৫, ০৩:৫৭ দুপুর
আপডেট : ১১ আগস্ট, ২০২৫, ১১:০০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

যুক্তরাজ্যে নির্বাসন নীতি কঠোর হচ্ছে, ঝুঁকিতে বাংলাদেশি অভিবাসনপ্রত্যাশীরা

যুক্তরাজ্যে নির্বাসন নীতি, ঝুঁকিতে বাংলাদেশি অভিবাসনপ্রত্যাশীরা

কঠোর ও বিতর্কিত নতুন নীতির আওতায় যুক্তরাজ্য সরকার এখন থেকে আরও ১৫টি দেশের দণ্ডপ্রাপ্ত বিদেশি নাগরিকদের মানবতাবাদী আপিল সম্পূর্ণ শেষ হওয়ার আগেই নির্বাসিত করবে। এই সিদ্ধান্তের ফলে বিচার প্রক্রিয়া দ্রুত হবে বলে দাবি করেছে সরকার।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইভেত কুপারের নেতৃত্বে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, যার লক্ষ্য হলো অভিবাসন ব্যবস্থার কথিত 'অপব্যবহার' বন্ধ করা। এর মাধ্যমে অপরাধীরা আপিলের সুযোগ নিয়ে বছরের পর বছর যুক্তরাজ্যে থাকার সুযোগ পাবে না।


এই নীতি সম্প্রসারণের ফলে ভারতসহ মোট ১৫টি দেশের দণ্ডপ্রাপ্ত বিদেশি অপরাধীদের তাদের মানবতাবাদী আপিলের শুনানি সম্পন্ন হওয়ার আগেই নির্বাসিত করা হবে।

এর আগে মাত্র আটটি দেশের ক্ষেত্রে এই নীতি প্রযোজ্য ছিল। এখন এই তালিকায় যুক্ত হয়েছে ভারত, বুলগেরিয়া, অস্ট্রেলিয়া, অ্যাঙ্গোলা, বতসোয়ানা, ব্রুনাই, কানাডা, গায়ানা, ইন্দোনেশিয়া, কেনিয়া, লাটভিয়া, লেবানন, মালয়েশিয়া, উগান্ডা এবং জাম্বিয়া।

এই নীতির অধীনে যেসব অপরাধীর মানবতাবাদী আবেদন প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে, তাদের অবিলম্বে নির্বাসিত করা হবে। পরবর্তী যেকোনো আপিল ভিডিও লিংকের মাধ্যমে বিদেশ থেকে সম্পন্ন করতে হবে। এর উদ্দেশ্য হলো আদালতের দীর্ঘসূত্রিতা এবং নির্বাসনে বিলম্ব দূর করা।

যদিও বর্তমানে এই তালিকায় বাংলাদেশ অন্তর্ভুক্ত নয়, তবে ভারতসহ অন্যান্য কমনওয়েলথ ও দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোকে অন্তর্ভুক্ত করা ব্রিটিশ অভিবাসন নীতির একটি বড় পরিবর্তন নির্দেশ করে। এই কঠোর নীতি গ্রহণের পেছনে সরকারের অন্যতম কারণ হলো ছোট নৌকায় করে হাজার হাজার অভিবাসীর আগমন ঠেকানো। চলতি বছরে এই সংখ্যা ২৫ হাজার ছাড়িয়েছে, যা কারাগারগুলোতে স্থানের সংকট তৈরি করেছে।

যুক্তরাজ্যের এই আগ্রাসী নির্বাসন নীতির সরাসরি প্রভাব এরই মধ্যে বাংলাদেশি কমিউনিটির ওপর পড়তে শুরু করেছে। গত বছর মে মাসে যুক্তরাজ্য এবং বাংলাদেশ একটি আনুষ্ঠানিক চুক্তি স্বাক্ষর করে, যার মাধ্যমে যেসব ব্যক্তির যুক্তরাজ্যে থাকার বৈধ অধিকার নেই, তাদের নির্বাসন প্রক্রিয়া সহজ করা হবে।

এর মধ্যে ব্যর্থ আশ্রয়প্রার্থী এবং দণ্ডপ্রাপ্ত বিদেশি নাগরিকরাও অন্তর্ভুক্ত। এই সমঝোতা স্মারক অনুযায়ী, নির্বাসনের জন্য যথেষ্ট প্রমাণ থাকলে বাধ্যতামূলক সাক্ষাৎকার বাতিল করা হবে।

অবৈধ অভিবাসন দমন বিষয়কমন্ত্রী মাইকেল টমলিনসন তখন বলেছিলেন, এই চুক্তি নির্বাসন প্রক্রিয়াকে ‘আরও দ্রুত’ করবে এবং বাংলাদেশ যুক্তরাজ্যের একটি ‘মূল্যবান অংশীদার’।

এই চুক্তি বাংলাদেশি কমিউনিটি এবং আইনি বিশেষজ্ঞদের মধ্যে তখন উদ্বেগ সৃষ্টি করে। ব্যারিস্টার মো. ইকবাল হোসেন বলেন, বিগত শেখ হাসিনা সরকার ত‌ড়িঘড়ি ক‌রে এ চুক্তিটি করার ফলে ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষকে দ্রুত জরুরি ভ্রমণ নথি সরবরাহে সহায়তা ক‌র‌তে হ‌বে বাংলাদেশ হাইকমিশনকে। তিনি সতর্ক করে বলেন, এই দ্রুত প্রক্রিয়া প্রকৃত আশ্রয়প্রার্থীদের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে।

‘আপিল পরে, নির্বাসন আগে’ এই নীতিটির একটি বিতর্কিত ইতিহাস রয়েছে। ২০১৭ সালে সুপ্রিম কোর্ট এটিকে বেআইনি ঘোষণা করেছিল। পরে ভিডিও লিংকের মাধ্যমে আপিলের সুযোগ দিয়ে এতে সংশোধন আনা হয়।

যদিও নতুন নিয়মে কত সংখ্যক নির্বাসন হবে, সে সম্পর্কে স্বরাষ্ট্র দফতর নির্দিষ্ট কোনও সংখ্যা জানায়নি। তবে নির্বাসন ‘বাড়ানো’ এই প্রতিশ্রুতি এবং বাংলাদেশের সঙ্গে বিদ্যমান চুক্তি যুক্তরাজ্যের অভিবাসন নীতির একটি স্পষ্ট এবং তীব্র দিক পরিবর্তন নির্দেশ করে। উৎস: বাংলাট্রিবিউন।

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়