শিরোনাম
◈ দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনায় ১৯ বিষয়ে ঐকমত্য: আলী রিয়াজ ◈ শেয়ারবাজারে শৃঙ্খলা ফেরাতে বিএসইসি আইনে বড় পরিবর্তন আসছে ◈ অবৈধ পথে আমেরিকা পাড়ি: ফিরলেন কেবল হতাশা নিয়ে ◈ জরুরি নির্দেশনা সরকারি চাকরিজীবীদের বাসা বরাদ্দ নিয়ে ◈ গোপন বৈঠকে সরকার উৎখাতের ছক নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ-আ.লীগ নেতা-কর্মীদের, গ্রেপ্তার ২২, সেনা হেফাজতে মেজর ◈ ত্রিদেশীয় সিরিজে এবার হে‌রেই গে‌লো বাংলাদেশ ◈ নারী এশিয়ান কাপ অনূর্ধ্ব ২০ বাছাইয়ের জন্য বাংলা‌দেশ দল ঘোষণা ◈ আয়-ব্যয়ের হিসাব জমা দিয়েছে বিএনপি জামায়াতসহ ২৯ রাজনৈতিক দল, ১১ দল অনুপস্থিত ◈ ডেঙ্গুর ভয়াবহতা বাড়ছে: জুলাইয়ে মৃত্যু ৪১ জন, আক্রান্ত ছাড়াল ১০ হাজার ◈ ১০০ আসনের উচ্চকক্ষে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের সিদ্ধান্ত কমিশনের

প্রকাশিত : ৩১ জুলাই, ২০২৫, ০৯:২৬ সকাল
আপডেট : ০১ আগস্ট, ২০২৫, ০৪:০০ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

গাজায় ক্ষুধা একটি অস্ত্র: ইসরাইল কীভাবে খাদ্যকে যুদ্ধের হাতিয়ার বানিয়েছে

পার্স টুডে- গাজার বিরুদ্ধে ইসরায়েলের যুদ্ধ অব্যাহত থাকায়, সেখানে তীব্র খাদ্যাভাব অব্যাহত রয়েছে এবং এরফলে এই অঞ্চলের বহু নারী ও শিশু প্রাণ হারিয়েছে।

গাজা উপত্যকার জরুরি কমিটি জানিয়েছে, এই অঞ্চলে যে পরিমাণ সাহায্য পৌঁছেছে তা পরিস্থিতির কোনও পরিবর্তন করেনি, কারণ ৮৭টি ট্রাকের বেশিরভাগই গাজায় ইসরায়েলের সাথে যুক্ত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো ইসরায়েলের প্রত্যক্ষ যোগসাজশ এবং পরিকল্পনায় চুরি করে নিয়ে গেছে।

জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য ত্রাণ ও কর্ম সংস্থা (UNRWA) এক বিবৃতিতে জোর দিয়ে বলেছে যে গাজার জীবন বর্তমানে ধ্বংসের মুখে রয়েছে এবং এই অঞ্চলে বসবাসকারী সমস্ত মানুষ তীব্র ক্ষুধার মুখোমুখি। UNRWA সতর্ক করে বলেছে যে গাজার মানবিক সংকট আরও খারাপ হচ্ছে এবং দুর্যোগের বিস্তার রোধ করার একমাত্র উপায় হল জরুরিভাবে এবং বৃহৎ পরিসরে মানবিক সহায়তা পৌঁছানো। আন্তর্জাতিক সংস্থার মতে, গাজার প্রতি পাঁচজন শিশুর মধ্যে একজন বর্তমানে অপুষ্টিতে ভুগছে। একই সাথে, ক্ষুধার কারণে মৃত্যুর সংখ্যাও বৃদ্ধি পাচ্ছে।

গাজার সম্পূর্ণ অবরোধ এবং ইহুদিবাদী সরকারের খাদ্য, ওষুধ এবং মানবিক সাহায্য এই অঞ্চলে প্রবেশে বাধা দেওয়ার ফলে ক্ষুধা, দুর্ভিক্ষ এবং অপুষ্টির কারণে অনেক ফিলিস্তিনি মারা যাচ্ছে।

ইহুদিবাদী ইসরায়েল গাজার জনগণের বিরুদ্ধে অনাহারকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে, অথচ এই পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন এবং যুদ্ধাপরাধ। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো একে আন্তর্জাতিক আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন, যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধ বলে মনে করে।

গাজা সম্পূর্ণভাবে অবরুদ্ধ করে এবং খাদ্য, পানি ও ওষুধ পাঠানোর ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা দিয়ে ইসরাইলি নেতারা ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতিরোধ ভেঙে ফেলার এবং তাদের আত্মসমর্পণে বাধ্য করার চেষ্টা করছে। পরিকল্পিত দুর্ভিক্ষ তৈরি করে, ইসরায়েল ফিলিস্তিনি জনসংখ্যা কমিয়ে আনা বা তাদের দেশত্যাগে বাধ্য করার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে।

তবে, সাম্প্রতিক মাসগুলিতে গাজার ঘটনাবলী থেকে বোঝা যায় এই অঞ্চলের মানুষ তাদের বৈধ অধিকার রক্ষায় ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ গোষ্ঠীগুলোর পাশে দাঁড়িয়ে আছে এবং ইহুদিবাদী ইসরায়েলের অমানবিক কর্মকাণ্ড তাদের দৃঢ় সংকল্পের উপর কোনও প্রভাব ফেলেনি।

জাতিসংঘের সাবেক প্রতিবেদক হিলাল আল-আউলুর জোর দিয়ে বলেছেন যে ইসরায়েল ২০০৭ সাল থেকে গাজার জনগণের জন্য প্রয়োজনের তুলনায় খুবই সীমিত পরিমাণ ক্যালোরি নির্ধারণ করে তাদেরকে কঠিন পরিস্থিতিতে ফেলেছে। এই অমানবিক নীতিকে তারা "গাজার খাদ্য" বলে অভিহিত করেছেন।

গাজার অবরোধ কঠোর করার ক্ষেত্রে ইহুদিবাদী ইসরায়েলের পদক্ষেপের ব্যাপক মানবিক, রাজনৈতিক এবং নিরাপত্তাগত পরিণতি হয়েছে, যা অনেক আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান একে গভীর সংকট হিসেবে বর্ণনা করেছে। গাজার লক্ষ লক্ষ মানুষ খাদ্য, পানি এবং ওষুধের তীব্র ঘাটতির সম্মুখীন। মৃত্যুর দ্বারপ্রান্তে অপুষ্টিতে ভোগা শিশু এবং পরিবারের ছবি বিশ্বব্যাপী প্রতিক্রিয়ার ঝড় তুলেছে।

চিকিৎসা সরঞ্জাম ও ওষুধের অভাবে গাজার হাসপাতালগুলো আহত ও অসুস্থদের চিকিৎসা করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছে এবং লক্ষ লক্ষ মানুষ তাদের বাড়িঘর থেকে বিতাড়িত হয়েছে এবং অত্যন্ত খারাপ পরিস্থিতিতে তাবুতে বসবাস করছে।

এই পরিস্থিতিতে, জাতিসংঘ, আরব পার্লামেন্ট এবং মানবাধিকার সংস্থাগুলি অবিলম্বে অবরোধের অবসান এবং ইহুদিবাদী ইসরাইলের নেতাদের যুদ্ধাপরাধী হিসেবে বিচারের আহ্বান জানিয়েছে। অনেক দেশ ইরায়েলের কর্মকাণ্ডকে যুদ্ধাপরাধের সাথে তুলনা করেছে। বিশ্ব জনমত, বিশেষ করে মুসলিম দেশগুলোর জনগণ ফিলিস্তিনি প্রতিরোধের প্রতি সমর্থন অব্যাহত রেখেছে।

গাজায় মানবিক সাহায্য প্রবেশে বাধা দেওয়ার জন্য ইহুদিবাদী ইসরাইলের সেনাবাহিনীর সাথে চরমপন্থী ইহুদিবাদীদের সহযোগিতা এবং খাদ্য সহায়তা কনভয় চুরির ঘটনায় এই অঞ্চলে আরো বিপর্যয়কর পরিস্থিতি তৈরি করেছে।

এ ঘটনায় বিশ্বব্যাপী প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। ইহুদিবাদী ইসরাইলের নেতারা স্বীকার করেছে যে গাজায় গণহত্যার  ঘটনা ইসরাইলকে বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে।

তবে গাজার বাসিন্দাদের জোরপূর্বক স্থানান্তরিত করার জন্য ইহুদিবাদী ইসরাইলের নেতাদের ভয়াবহ চক্রান্ত সফল হয়নি এবং এই তাদের অপরাধের দীর্ঘ তালিকায় অনাহার এবং মানবিক ত্রাণ পরিবহনের গাড়ি চুরিও যুক্ত হয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়