শিরোনাম
◈ জিম্বাবুয়েকে হা‌রি‌য়ে ত্রিদেশীয় সি‌রি‌জের ফাইনা‌লে বাংলা‌দেশ ◈ মির্জা আব্বাসের প্রশ্ন: অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কি ‘জাতীয় নাগরিক পার্টির’ (এনসিপি) সরকার? ◈ ফার্মেসির পরামর্শে শিশুর ডায়রিয়ায় অ্যান্টিবায়োটিক, গবেষণায় বিপদের ইঙ্গিত ◈ মার্কিন শুল্ক কমলো, যেসব চ্যালেঞ্জের মুখে বাংলাদেশ ◈ মার্কিন শুল্কছাড়ে লাভবান বাংলাদেশ, ধস নেমেছে ভারতের টেক্সটাইল শেয়ারবাজারে ◈ বিশ্বব্যাংকের পরবর্তী প্রকল্পে অগ্রাধিকার পাবে সোনামসজিদ স্থলবন্দর: নৌ উপদেষ্টা ◈ চাঁপাইনবাবগঞ্জে 'সমন্বয়ক' পরিচয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগে যুবক আটক ◈ শাহবাগে ‘জুলাই যোদ্ধাদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষ (ভিডিও) ◈ এনসিপির পদযাত্রা কতটা সাড়া ফেললো? ◈ কুমিল্লার চান্দিনায় সব্জি বাগানের আড়ালে গাঁজা চাষ

প্রকাশিত : ০১ আগস্ট, ২০২৫, ০২:১৩ রাত
আপডেট : ০২ আগস্ট, ২০২৫, ১২:০০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

সংসদ নির্বাচনে জয়-পরাজয় কি ৮৫টি আসনেই নির্ধারিত হয়? নতুন বিশ্লেষণ পিনাকী ভট্টাচার্যের (ভিডিও)

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক দলগুলো যখন সারা দেশে নিজেদের কৌশল সাজাতে ব্যস্ত, তখন এক নতুন রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সামনে এনেছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও লেখক পিনাকী ভট্টাচার্য। তার মতে, বাংলাদেশের সংসদ নির্বাচনে সরকার গঠনের চাবিকাঠি মূলত ৮৫টি নগর ও পৌরসভা-কেন্দ্রিক আসনের ফলাফলের ওপর নির্ভর করে। যে দল বা জোট এই আসনগুলোতে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে, তারাই সরকার গঠন করতে সক্ষম হয়।

তার ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশিত এক ভিডিওতে পিনাকী ভট্টাচার্য এই তত্ত্ব তুলে ধরে একে 'চোখ খুলে দেওয়ার মতো' বলে অভিহিত করেছেন। তিনি প্রচলিত ধারণা, যেখানে গ্রামীণ ভোটব্যাংককে নির্বাচনের মূল নিয়ামক হিসেবে দেখা হয়। তার মতে, এই ৮৫টি আসন হলো বাংলাদেশের নির্বাচনের 'বেলওয়েদার' বা নির্ধারক।

৮৫টি আসন যেভাবে চিহ্নিত করা হয়েছে:

পিনাকী ভট্টাচার্য এই গুরুত্বপূর্ণ আসনগুলোকে তিনটি শ্রেণীতে ভাগ করেছেন:

১. পূর্ণাঙ্গ নগর আসন (২৬টি): যেগুলো মূলত সিটি কর্পোরেশন এলাকা নিয়ে গঠিত। এর মধ্যে ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, সিলেট, বরিশাল, রংপুর ও ময়মনসিংহের সিটি কর্পোরেশনভুক্ত আসনগুলো রয়েছে।

২. পৌরসভা কেন্দ্রিক আসন (৫০টি): এগুলো মূলত জেলা শহরের পৌরসভা নিয়ে গঠিত। দেশের প্রায় প্রতিটি জেলার সদর আসনই এর অন্তর্ভুক্ত।

৩. মিশ্র প্রকৃতির আসন (৯টি): যেখানে উল্লেখযোগ্য শহর বা পৌর এলাকার পাশাপাশি একটি বড় অংশ গ্রাম নিয়ে গঠিত।

ঐতিহাসিক নির্বাচনের ফলাফল বিশ্লেষণ:

নিজের তত্ত্বের স্বপক্ষে পিনাকী ভট্টাচার্য ১৯৯১ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত চারটি অবাধ ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচনের ফলাফল তুলে ধরেন:

  • ১৯৯১ সালের নির্বাচন: এই ৮৫টি আসনের মধ্যে বিএনপি ৪৫-৫০টি আসনে জয়লাভ করে সরকার গঠন করে। আওয়ামী লীগ পেয়েছিল ৩০-৩৫টি আসন।

  • ১৯৯৬ সালের নির্বাচন: আওয়ামী লীগ এই আসনগুলোর মধ্যে ৫০-৫৫টিতে জয়ী হয়ে সরকার গঠন করে। অন্যদিকে বিএনপি ২৫-৩০টি আসন পায়।

  • ২০০১ সালের নির্বাচন: বিএনপি-জামায়াত জোট এই ৮৫টি আসনের মধ্যে ৭৩টি আসনে জয়লাভ করে ভূমিধস বিজয় অর্জন করে এবং সরকার গঠন করে।

  • ২০০৮ সালের নির্বাচন: আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট ৮৫টি আসনের মধ্যে ৭৭টিতে জয়ী হয়ে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতায় সরকার গঠন করে।

এই চারটি নির্বাচনের ফলাফল বিশ্লেষণ করে তিনি দেখান যে, যে দল বা জোট এই নগরকেন্দ্রিক আসনগুলোতে আধিপত্য বিস্তার করতে পেরেছে, তারাই জাতীয় পর্যায়ে সরকার গঠন করেছে।

কেন এই আসনগুলো গুরুত্বপূর্ণ?

পিনাকী ভট্টাচার্যের মতে, নগরকেন্দ্রিক আসনগুলোর ভোটাররা কোনো দলের একচেটিয়া নন। এর পেছনে কয়েকটি কারণ রয়েছে:

  • জাতীয় ইস্যুতে সংবেদনশীলতা: শহরের ভোটাররা জাতীয় পর্যায়ের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ইস্যুতে গ্রামের ভোটারদের চেয়ে বেশি সচেতন ও সংবেদনশীল।

  • মিডিয়ার প্রভাব: গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের প্রভাব শহরাঞ্চলে বেশি, যা জনমত গঠনে বড় ভূমিকা রাখে।

  • সুইং ভোটার: শহরাঞ্চলে "সুইং ভোটার" বা দোদুল্যমান ভোটারের সংখ্যা বেশি। এই ভোটাররা নির্দিষ্ট দলের প্রতি অনুগত না থেকে পরিস্থিতি অনুযায়ী ভোট দেন, যা নির্বাচনের ফলাফল নির্ধারণে বড় ভূমিকা রাখে।

পিনাকী ভট্টাচার্য মনে করেন, আগামী নির্বাচনে জয়ী হতে হলে রাজনৈতিক দলগুলোকে শুধুমাত্র গ্রামীণ ভোটব্যাংকের ওপর নির্ভর করলে চলবে না। বরং এই ৮৫টি নগরকেন্দ্রিক আসনের ভোটারদের মন জয় করার জন্য সুনির্দিষ্ট কৌশল, মেধা ও প্রখর রাজনৈতিক পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নামতে হবে। তার মতে, এবারের লড়াই শুধু সংখ্যার নয়, বরং বুদ্ধি, কৌশল এবং সাহসের লড়াই হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়