ইরানি পেট্রোলিয়াম, পেট্রোলিয়ামজাত পণ্য বা পেট্রোকেমিক্যাল ব্যবসার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের নজরদারির আওতায় এসেছে ৬ ভারতীয় কোম্পানি। বুধবার (৩০ জুলাই) যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতর ২০টি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। এর মধ্যে ছয়টি ভারতীয় কোম্পানি রয়েছে, যারা ইরানের সঙ্গে ব্যবসা করছে। ভারতের সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এ খবর জানিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, ইরানি সরকার এই রাজস্ব মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাত উসকে দেওয়া, সন্ত্রাসে অর্থায়ন এবং নিজের জনগণকে দমন করার কাজে ব্যবহার করে।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের এক মুখপাত্র এক বিবৃতিতে বলেন, “ইরানি সরকার এখনও মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাত উসকে দিতে তহবিল জোগাড় করছে, যার মাধ্যমে তারা তাদের অস্থিতিশীল কার্যক্রম পরিচালনা করে। যুক্তরাষ্ট্র এমন পদক্ষেপ নিচ্ছে যাতে ইরানি সরকার এই আয়ের মাধ্যমে বিদেশে সন্ত্রাসে সহায়তা এবং নিজের জনগণকে দমন করতে না পারে।”
নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা ৬ ভারতীয় কোম্পানিগুলো হলো:
আলকেমিক্যাল সল্যুশনস প্রাইভেট লিমিটেড (আলকেমিক্যাল সল্যুশনস)
এই কোম্পানির বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় অভিযোগ আনা হয়েছে। ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে তারা একাধিক কোম্পানি থেকে ৮৪ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি মূল্যের ইরানি উৎপত্তির পেট্রোকেমিক্যাল পণ্য আমদানি ও ক্রয় করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
গ্লোবাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল কেমিক্যালস লিমিটেড (গ্লোবাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল)
এই কোম্পানির বিরুদ্ধে ২০২৪ সালের জুলাই থেকে ২০২৫ সালের জানুয়ারির মধ্যে ৫১ মিলিয়ন ডলারের বেশি মূল্যের ইরানি পণ্য, যার মধ্যে মিথানল রয়েছে, আমদানি ও ক্রয়ের অভিযোগ রয়েছে।
জুপিটার ডাই কেম প্রাইভেট লিমিটেড (জুপিটার ডাই কেম)
ভারতভিত্তিক এই পেট্রোকেমিক্যাল ট্রেডিং কোম্পানির বিরুদ্ধে ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৫ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত সময়ে টলুইনসহ ৪৯ মিলিয়ন ডলারের বেশি মূল্যের ইরানি পণ্য আমদানি ও ক্রয়ের অভিযোগ রয়েছে।
রামনিকলাল এস গোসালিয়া অ্যান্ড কোম্পানি (রামনিকলাল)
২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৫ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত এই পেট্রোকেমিক্যাল কোম্পানিটি মিথানল ও টলুইনসহ ২২ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি মূল্যের ইরানি পণ্য আমদানি ও ক্রয় করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
পারসিস্টেন্ট পেট্রোকেম প্রাইভেট লিমিটেড
এই কোম্পানি ১৪ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি মূল্যের ইরানি পেট্রোকেমিক্যাল, যেমন: মিথানল, আমদানি করেছে বলে অভিযোগ।
কাঞ্চন পলিমার্স
এই কোম্পানি তানাইস ট্রেডিং থেকে পলিইথিলিনসহ ১.৩ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি মূল্যের ইরানি পেট্রোকেমিক্যাল পণ্য আমদানি ও ক্রয় করেছে বলে অভিযোগ।
ইরানি পেট্রোকেমিক্যাল পণ্য কেনা, অর্জন, বিক্রয়, পরিবহণ বা বিপণনের ক্ষেত্রে সচেতনভাবে গুরুত্বপূর্ণ লেনদেনে জড়িত থাকার কারণে এই কোম্পানিগুলোকে নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনা হয়েছে। এই নিষেধাজ্ঞার আওতায়, যুক্তরাষ্ট্রে বা যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের নিয়ন্ত্রণাধীন যেকোনও সম্পদ এই কোম্পানিগুলোর থাকলে তা অবরুদ্ধ) করা হবে।
তবে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতর স্পষ্ট করেছে, এই নিষেধাজ্ঞার লক্ষ্য শাস্তি দেওয়া নয়, বরং আচরণে ইতিবাচক পরিবর্তন আনা।