বাজারে পাওয়া যায় এমন টাটকা সবজির প্রায় সবগুলোতেই থাকে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টিগুণ। কোনোটিতে বেশি খনিজ, কোনোটিতে ভিটামিন, আবার কিছু সবজিতে থাকে প্রয়োজনীয় অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট ও ফাইবার। তবে গাজর একটু আলাদা, কারণ এটি বহু দিক থেকে শরীরের জন্য উপকারী। চলুন, জেনে নিই গাজর কেন উপকারী।
ভিটামিন এ-এর দারুণ উৎস
গাজরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ। যা চোখ, ত্বক এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অনেক সবজিতেই এই পরিমাণে ভিটামিন এ পাওয়া যায় না।
হৃদযন্ত্রের সুরক্ষা
গাজরের ফাইবার, পটাসিয়াম ও অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে ও খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়। ফলে হৃদরোগের ঝুঁকি হ্রাস পায়।
ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্যকারী উপাদান
গাজরে রয়েছে ক্যারোটিনয়েড ও ফলকারিনোল। যা ক্যান্সার সৃষ্টিকারী কোষের বৃদ্ধিকে ধীর করে দিতে পারে। বিশেষ করে প্রোস্টেট, কোলন, ফুসফুস, পাকস্থলী ও লিউকেমিয়ার ঝুঁকি কমাতেও এটি সহায়ক বলে জানিয়েছে সাউদার্ন ডেনমার্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণা।
চোখের যত্নে কার্যকর
এতে থাকা ভিটামিন এ চোখের দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখতে সাহায্য করে, বিশেষ করে রাতকানা রোগ প্রতিরোধে।
ত্বকের যত্নে
গাজরের বিটা-ক্যারোটিন সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে ত্বককে রক্ষা করে। এটি ত্বককে উজ্জ্বল ও মসৃণ করে তোলে এবং বয়সের ছাপ, বলিরেখা হ্রাস করতেও কার্যকর।
হজম ও রোগ প্রতিরোধে সহায়ক
গাজর হজমশক্তি উন্নত করে, ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
গাজর খাওয়ার সঠিক উপায়: কোনভাবে খেলে সবচেয়ে বেশি উপকার?
১।কাঁচা গাজর চিবিয়ে খাওয়া
কাঁচা গাজরে ভিটামিন সি ও ফাইবার অক্ষত থাকে। এতে থাকা অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট ও ক্যান্সার প্রতিরোধক উপাদান সবচেয়ে সক্রিয় থাকে চিবিয়ে খেলে। দাঁতের স্বাস্থ্য রক্ষায়ও কাঁচা গাজর উপকারী, কারণ এটি দাঁতের ময়লা দূর করে ও মাড়ি সুস্থ রাখে। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতেও ফাইবার সমৃদ্ধ কাঁচা গাজর উপকারী।
২। হালকা সিদ্ধ বা রান্না করে খাওয়া
রান্না করলে গাজরে থাকা বিটা-ক্যারোটিন আরও সক্রিয় হয়ে ওঠে, যা শরীরে ভিটামিন এ-তে পরিণত হয়। তবে বেশি সময় ধরে বেশি তাপে রান্না করলে কিছু পুষ্টি উপাদান নষ্ট হতে পারে। তাই হালকা সিদ্ধ বা ভাপে রান্না করে খাওয়াই ভালো।
গাজরের রস বানিয়ে খাওয়া
রস হিসেবে খেলে গাজরের পুষ্টি সহজে শরীরে শোষিত হয়। বিশেষত হার্টের রোগীদের জন্য এটি উপকারী। তবে এতে ফাইবার কমে যায়, তাই রস খাওয়ার সময় সামান্য নারকেল তেল মিশিয়ে নিলে শরীর বিটা-ক্যারোটিন শোষণ করতে সুবিধা পায়।
বিশেষ পরামর্শ
পুষ্টিবিদদের মতে, গাজরের পুষ্টিগুণ সম্পূর্ণ পেতে কাঁচা অবস্থায় সালাদ হিসেবে খাওয়া বা হালকা সেদ্ধ করে খাওয়াই সবচেয়ে ভালো। তবে যাদের হজম সমস্যা আছে বা যারা শিশু কিংবা বয়স্ক, তাদের জন্য কাঁচা গাজরের বদলে সিদ্ধ গাজরই বেশি উপযোগী।
সূত্র : আনন্দবাজার