থাইরয়েড ক্যান্সার: নীরব ঘাতক থেকে মুক্তির উপায়
থাইরয়েড ক্যান্সারকে অনেক সময় 'নীরব ঘাতক' বলা হয়, কারণ এর প্রাথমিক লক্ষণগুলো প্রায়শই নজরে আসে না বা গুরুত্বহীন মনে হয়। এটি সময়মতো শনাক্ত না হলে মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে। বিশেষ করে নারীদের মধ্যে থাইরয়েড সমস্যা ও ক্যান্সারের ঝুঁকি বেশি দেখা যায়। তবে আশার কথা হলো, সঠিক সময়ে চিকিৎসা শুরু করলে থাইরয়েড ক্যান্সার সম্পূর্ণ নিরাময়যোগ্য।
থাইরয়েড ক্যান্সারের ৬টি প্রধান লক্ষণ যা আপনাকে সতর্ক করবে:
১. গলায় গিট্টি বা ফোলা: থাইরয়েড গ্রন্থিতে একটি শক্ত বা অস্বাভাবিক গিট্টি অনুভব করা থাইরয়েড ক্যান্সারের অন্যতম প্রধান লক্ষণ। এটি সাধারণত ব্যথাহীন হয়।
২. কণ্ঠস্বরে পরিবর্তন: যদি আপনার কণ্ঠস্বর দীর্ঘদিনের জন্য কর্কশ হয়ে যায় বা গলার স্বর পরিবর্তিত হয়, তবে এটি থাইরয়েড ক্যান্সারের একটি ইঙ্গিত হতে পারে।
৩. গিলতে বা শ্বাস নিতে অসুবিধা: খাবার গিলতে কষ্ট হওয়া বা শ্বাসকষ্ট অনুভব করা থাইরয়েড গ্রন্থির ওপর চাপ পড়ার লক্ষণ, যা ক্যান্সারের কারণে হতে পারে।
৪. গলা বা ঘাড়ের ব্যথা: গলা বা ঘাড়ের অংশে ক্রমাগত অস্বস্তি বা ব্যথা অনুভব করা গেলে তা পরীক্ষা করা জরুরি।
৫. অস্বাভাবিক ওজন পরিবর্তন: হঠাৎ করে অপ্রত্যাশিতভাবে ওজন বেড়ে যাওয়া বা কমে যাওয়া থাইরয়েড গ্রন্থির কার্যকারিতার পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিতে পারে, যা ক্যান্সারের সাথে সম্পর্কিত হতে পারে।
৬. ঘাড়ের লিম্ফ নোড ফোলা: ঘাড়ের লসিকা গ্রন্থি (লিম্ফ নোড) যদি অকারণে ফুলে যায়, তবে তা থাইরয়েড ক্যান্সারের বিস্তার নির্দেশ করতে পারে।
কখন চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন?
যদি উপরের লক্ষণগুলোর মধ্যে কোনোটি আপনার মধ্যে দেখা যায়, তবে দ্রুত একজন এন্ডোক্রাইনোলজিস্ট বা অভিজ্ঞ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া অত্যন্ত জরুরি। প্রাথমিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার মধ্যে রক্ত পরীক্ষা, আল্ট্রাসাউন্ড এবং প্রয়োজনে বায়োপসি অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে।
প্রতিরোধ ও প্রতিকার:
জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আনা, নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো এবং থাইরয়েড গ্রন্থির কার্যকারিতা সম্পর্কে সচেতন থাকা এই রোগ প্রতিরোধে সহায়ক হতে পারে। মনে রাখবেন, যত দ্রুত থাইরয়েড ক্যান্সার শনাক্ত হবে, তত বেশি সুস্থ হয়ে ওঠার সম্ভাবনা থাকবে।