সূত্র: অপটোমেট্রিটস নিউইয়র্ক: চোখে সমস্যা হলেও শিশুরা তা ঠিক সময়ে বুঝে উঠতে পারে না। বাইরে থেকে দেখে অভিভাবকেরাও সমস্যা ধরতে পারেন না। ফলে চিকিৎসা নিতে দেরি হয়ে যায়। আন্তর্জাতিক অন্ধত্ব প্রতিরোধ সংস্থার (আইএপিবি) তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বব্যাপী চোখের বিভিন্ন রোগে ভুগছে প্রায় ৪৫ কোটি শিশু, যেসবের বেশির ভাগই প্রতিরোধ এবং নিরাময়যোগ্য। তাই শিশুর চোখের বড় ক্ষতি এড়াতে প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ নির্ণয় করে দ্রুত চিকিৎসা করা জরুরি। শিশুরা বেশি আক্রান্ত হয়, এমন সাতটি চোখের রোগ এবং সেসবের লক্ষণ এখানে দেওয়া হলো।
১. রিফ্রেকটিভ এরর
এ রোগে আলো ঠিকমতো রেটিনায় ফোকাস হয় না। এ কারণে ঝাপসা দেখে শিশু। শিশুদের মধ্যে সবচেয়ে সাধারণ তিনটি রিফ্রেকটিভ এরর হলো—
•এসটিগমাটিজম বা কর্নিয়া বাঁকা বা অনিয়মিত হওয়া
•মায়োপিয়া বা দূরের জিনিস ঝাপসা দেখা
•হাইপারোপিয়া বা কাছের জিনিস ঝাপসা দেখা।
লক্ষণ: বারবার চোখ ছোট করে তাকানো বা মাথা কাত করা, অনেকক্ষণ ধরে পড়াশোনা করার পর বা ডিভাইস দেখার পর মাথাব্যথা হওয়া এবং চোখে চাপ অনুভব করা, বই বা মোবাইল খুব কাছে নিয়ে দেখা, টিভি বা কম্পিউটার খুব কাছে বসে দেখা।
২. অ্যামব্লিওপিয়া বা লেজি আই
এ রোগে যেকোনো একটি চোখ দুর্বল হয়ে পড়ে। ব্যাহত হয় স্বাভাবিক দৃষ্টিশক্তি। শিশু সাধারণত ভালো চোখেটির ওপর নির্ভর করায় রোগটি সহজে ধরা পড়ে না।
লক্ষণ: পড়াশোনা বা খেলাধুলায় সমস্যা, মনোযোগে অসুবিধা, প্রায়ই এক চোখ বন্ধ করে দেখা, বারবার চোখ রগড়ানো, বারবার মাথা কাত করা, চোখ ছোট করে তাকানো।
৩. বাইনোকুলার ভিশন ডিসফাংশন (বিভিডি)
স্বাভাবিক অবস্থায় দুটি চোখ মিলিতভাবে একটি দৃশ্য ফোকাস করে। এ রোগে দুই চোখের সমন্বয় বা অক্ষ ঠিক থাকে না। দুটি চোখ একসঙ্গে কাজ করতে পারে না। ফলে মস্তিষ্ক বিভ্রান্ত হয়, দেখার সমস্যা তৈরি হয়।
লক্ষণ: উদ্বেগ বা চাপ, মাথা ঘোরা, দুটো দেখা, ক্লান্তি, মাথাব্যথা, আলোতে সংবেদনশীলতা, চলাচলে অসুবিধা।
৪. কনভারজেন্স ইনসাফিসিয়েন্সি
এটিও এক প্রকার বাইনোকুলার ভিশন সমস্যা, যা চোখের পেশির সমন্বয় নষ্ট করে। এ কারণে শিশু কাছের জিনিস ঠিকমতো দেখতে পায় না।
লক্ষণ: কোনো কিছুতে মনোযোগ না থাকা, চোখে ঝাপসা দেখা, দুটো দেখা, পড়াশোনার সময় ক্লান্তি এবং মাথাব্যথা, হোমওয়ার্ক করতে না চাওয়া, চলাচলে অসুবিধা বা ভার্টিগো, লেখা ঝাপসা দেখা এবং মাথা কাত করে দেখার চেষ্টা করা।
৫. নিসট্যাগমাস
এ রোগে শিশুর চোখ নিয়ন্ত্রণহীনভাবে চারদিকে নড়তে থাকে, ফলে দৃষ্টি ঝাপসা বা অস্থির হয়ে ওঠে। জন্মগত নিসট্যাগমাস জীবনের প্রথম কয়েক মাসে দেখা দেয়, আর প্রাপ্ত নিসট্যাগমাস জন্মের ছয় মাসের পরে দেখা দেয়।
লক্ষণ: চোখ দ্রুত এবং অনবরত নড়তে থাকা।
৬. প্যাডিয়াট্রিক ক্যাটার্যাক্টস
এ রোগে শিশুর চোখে ছানি পড়ে। বিশ্বব্যাপী প্রতিবছর আনুমানিক ২০ থেকে ৪০ হাজার শিশু এ রোগ নিয়ে জন্মায়।
লক্ষণ: চোখের মণির রং ধূসর বা সাদা, মুখ বা জিনিস চিনতে অসুবিধা, ভিন্ন দিকে তাকানো এবং চোখ দ্রুত বা অনবরত নড়তে থাকা।
৭. স্ট্রেবিসমাস বা ট্যারা চোখ
চোখের এমন একটি অবস্থা, যেখানে দুটি চোখ সঠিকভাবে একটি নির্দিষ্ট বিন্দুতে ফোকাস করতে পারে না, ফলে একটি চোখ অন্য চোখ থেকে ভিন্ন দিকে তাকিয়ে থাকে।
লক্ষণ: চঞ্চল চোখের মণি, বারবার চোখ ছোট করে তাকানো (বিশেষ করে উজ্জ্বল আলোতে), মাথা কাত করে তাকানো। অনুবাদ: প্রথম আলো