শিরোনাম
◈ প্রবাসীরা পোস্টাল ব্যালটে কীভাবে ভোট দেবেন, জানালেন ইসি ◈ তারুণ্যের শক্তি আমাদের জাতির চালিকাশক্তি : প্রধান উপদেষ্টা ◈ দেশে নিবন্ধিত কোচিং সেন্টার ৬,৫৮৭, অনিয়ন্ত্রিত আরো বহু; নীতিমালা শূন্যতায় বাড়ছে বাণিজ্যিকীকরণ ◈ অনলাইন জুয়ার অর্থ লেনদেনে দুই অভিনেত্রী গোয়েন্দা নজরে ◈ রাবি হল সংসদ নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী ৩৯ প্রার্থী ◈ জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনে যেভাবে ধরা পড়ল ৫০ প্রতারক! (ভিডিও) ◈ জামায়াত, ইসলামী আন্দোলন ও খেলাফত মজলিসসহ কয়েকটি দল যুগপৎ আন্দোলনে নাম‌ছে, কিন্তু কেন ◈ ভ্যালেন্সিয়ার জা‌লে বার্সেলোনার ৬ গোল ◈ পিআর আদায়ে আন্দোলনে রাজনৈতিক দলগুলোতে মতভেদ ◈ বাংলাদেশ রেলওয়ের বহরে যুক্ত হচ্ছে ভারতীয় ২০০ কোচ

প্রকাশিত : ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ১২:৩৫ দুপুর
আপডেট : ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ০২:০০ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

দেশে নিবন্ধিত কোচিং সেন্টার ৬,৫৮৭, অনিয়ন্ত্রিত আরো বহু; নীতিমালা শূন্যতায় বাড়ছে বাণিজ্যিকীকরণ

বণিক বার্তা প্রতিবেদন: দেশে নিবন্ধিত কোচিং সেন্টারের সংখ্যা ৬ হাজার ৫৮৭। এর মধ্যে একাডেমিক ৬ হাজার ৩১২টি ও বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি প্রস্তুতি বা চাকরিসংক্রান্ত কোচিং সেন্টার রয়েছে আরো ২৭৫টি। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) প্রকাশিত ‘বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জরিপ ২০২৪’-এ উল্লেখ করা হয়েছে এ তথ্য। শিক্ষাসংশ্লিষ্টরা যদিও বলছেন, নিবন্ধনহীন কোচিং সেন্টারের সংখ্যা আরো কয়েক গুণ। রাজধানীর পাশাপাশি প্রায় প্রতিটি জেলা ও উপজেলা শহরে স্কুল-কলেজের আশপাশে দেখা মিলছে এ ধরনের প্রতিষ্ঠানের। এসব কোচিং সেন্টার শিক্ষাসংশ্লিষ্ট হলেও নিবন্ধন বা অনুমোদন দেয়া হচ্ছে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান—সিটি করপোরেশ, পৌরসভা কিংবা ইউনিয়ন পরিষদ থেকে। ফলে শিক্ষা মন্ত্রণালয় কিংবা মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের কোনো তদারকি নেই বললেই চলে। 

স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) আইন ২০০৯-এর ১১১ নং ধারা, স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) আইন ২০০৯-এর ৭৯ নং ধারা এবং স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন ২০০৯-এর ৮২ নং ধারায় এসব প্রতিষ্ঠানকে নিবন্ধন দেয়ার বিধান রয়েছে। এর সুযোগ নিয়েই কোচিং সেন্টারগুলো ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের মতো নিবন্ধন নিচ্ছে এবং নিজেদের কার্যক্রমকে বৈধ দাবি করছে। তবে এসব প্রতিষ্ঠান কীভাবে চলবে, শিক্ষার্থী অনুপাতে শিক্ষক কত হবে, সে বিষয়ে কোনো নীতিমালা নেই।

রাজশাহী মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আ.ন.ম. মোফাখখারুল ইসলাম বলেন, ‘বর্তমানে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো নির্দিষ্ট শর্ত পূরণ করে বোর্ডের মাধ্যমে নিবন্ধন নিয়ে থাকে। বোর্ডের পক্ষ থেকে এসব প্রতিষ্ঠানের মান বজায় রাখার জন্য পরিদর্শনেরও নিয়ম রয়েছে। তবে কোচিং সেন্টারগুলো শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নীতিমালার আওতায় না থাকায় এগুলোয় তেমন কোনো পরিদর্শন হয় না।’

তিনি আরো বলেন, ‘কোচিং সেন্টারগুলো যে এভাবে অবাধে চলছে তার পেছনে নানামুখী কারণ রয়েছে। রাজনৈতিক প্রভাবশালী ব্যক্তিসহ অনেকেই এসবের সঙ্গে সম্পৃক্ত। এ কারণে কোচিং সেন্টার বন্ধ করতে কিংবা নীতিমালার আওতায় আনতে হলে রাজনৈতিক সদিচ্ছা জরুরি, অন্যথায় এগুলোর নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়।’

বিবিএসের জরিপে কোচিং সেন্টারগুলোকে চিহ্নিত করা হয়েছে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে। জরিপের তথ্য অনুযায়ী বর্তমানে যেসব কোচিং সেন্টার আছে সেগুলোর মধ্যে ৪ হাজার ৩১০টি ব্যক্তিমালিকানাধীন, ২ হাজার ২৬টি যৌথ মালিকানাধীন, ১১৬টি ট্রাস্টি বোর্ড বা ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে। এছাড়া ১৩৬টি পরিচালিত হচ্ছে বোর্ড অব ডিরেক্টরস বা ম্যানেজিং কমিটির মাধ্যমে। এসব প্রতিষ্ঠানে মোট শিক্ষার্থী সংখ্যা ৯ লাখ ১৭ হাজার এবং মোট জনবল ৬৬ হাজার ৭৫৪ জন। তাদের মধ্যে শিক্ষক রয়েছেন ৬১ হাজার ৮১২ জন।

অভিযোগ আছে, কোচিং সেন্টারগুলোর অধিকাংশেই বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি স্কুল-কলেজের শিক্ষকরা জড়িত। তাদের কোচিং বাণিজ্য বন্ধে ২০১২ সালে শিক্ষা মন্ত্রণালয় নীতিমালা জারি করলেও তা বন্ধ করা সম্ভব হয়নি। বরং অনেক শিক্ষক শ্রেণীকক্ষে পাঠদানের চেয়ে কোচিং সেন্টারেই বেশি সময় দেন। আবার অনেক ক্ষেত্রে বিদ্যালয়ের কক্ষই ভাড়া দেয়া হচ্ছে কোচিং কার্যক্রমে। বিবিএসের তথ্য বলছে, কোচিং সেন্টারগুলোর মোট জনবলের মধ্যে ২৬ হাজার ৯৭০ জনই পার্টটাইম কর্মজীবী।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. মো. আবদুস সালাম বলেন, ‘কোচিং সেন্টার থাকা উচিত নাকি বন্ধ করা উচিত তা দীর্ঘ আলোচনা। এখন যে কোচিং সেন্টারগুলো যেভাবে পরিচালিত হচ্ছে তাতে তাদের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বলা যায়। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বলার সুযোগ নেই। যেকোনো ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান স্থানীয় সরকার থেকে নিবন্ধন নিতে পারে। যদি এসব প্রতিষ্ঠানকে সহায়তামূলক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে বিবেচনা করতে হয়, তাহলে নিবন্ধনের বিষয়টি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আওতায় নেয়া উচিত। নিয়মিত মনিটরিং ও জবাবদিহির বিধানও থাকা উচিত।’

অভিভাবকরা জানান, বিদ্যালয় ও কলেজ পর্যায়ের শিক্ষা কার্যক্রম মানসম্পন্ন না হওয়ায় শিক্ষার্থীদের কোচিং সেন্টরের দিকে ঝুঁকতে হচ্ছে। পরীক্ষায় ভালো ফলাফল নিশ্চিত করতে সন্তানদের এসব প্রতিষ্ঠানে পাঠানো যেন এখন প্রায় বাধ্যতামূলক হয়ে উঠেছে। তবে বেশির ভাগেরই অনুমোদনের নামে কেবল নামমাত্র কাগজপত্র রয়েছে, কিন্তু পাঠদান বা শিক্ষার মান নিয়ন্ত্রণের কোনো তদারকি নেই। ফলে প্রত্যাশিত মানের শিক্ষা পাচ্ছে না শিক্ষার্থীরা, বরং বাড়তি আর্থিক চাপ বহন করতে হচ্ছে অভিভাবকদের। মাসিক ফি, ভর্তি ফি ও অন্যান্য খরচের কারণে পড়াশোনার ব্যয়ও বেড়ে যাচ্ছে বহুগুণ। নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো পড়ছে চরম আর্থিক চাপে।

কোচিং সেন্টারগুলো নিয়ে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা না থাকাটা উদ্বেগজনক বলে মনে করছেন অভিভাবকরা। ঢাকার বাসিন্দা উম্মে হাবিবা বলেন, ‘আমার দুই সন্তানই স্কুলের বাইরে কোচিং সেন্টারে পড়ছে। কয়েক বছর ধরে কোচিং সেন্টার দ্রুত বাড়ছে। কিছুদিন পর পরই শোনা যায় অমুক কোচিং সেন্টার খুব ভালো, অভিভাবকরাও এসব শুনে সন্তানকে এক কোচিং সেন্টার থেকে অন্য কোচিং সেন্টারে নিয়ে ছোটেন। আমিও বেশ কয়েকবার এমন করেছি। তবে কিছুদিন আগে রাজশাহী নগরীর একটি কোচিং সেন্টার থেকে অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনার পর থেকে নতুন এমন প্রতিষ্ঠান নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে। যেহেতু কোচিং সেন্টার বন্ধ করা যাচ্ছে না, সরকারের উচিত এসব প্রতিষ্ঠানকে সুস্পষ্ট নীতিমালার আওতায় আনা এবং মনিটরিং বাড়ানো। যেন চাইলেই তারা ইচ্ছেমতো ফি বাড়াতে কিংবা শিক্ষার আড়ালে অন্য কার্যক্রম চালাতে না পারে।’

শিক্ষার্থীরা অবশ্য বলছে, পাঠ্যবইয়ের বিষয়গুলো ভালোভাবে আয়ত্ত করতেই তারা কোচিং সেন্টারে ভর্তি হচ্ছে। রাজশাহী নগরের একটি একাডেমিক কোচিং সেন্টারের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার সাকলাইন বলে, ‘ক্লাসে যা পড়ানো হয় অনেক সময় তা বুঝতে পারি না, তাছাড়া শিক্ষকদের সবসময় প্রশ্ন করাও সম্ভব হয় না। কিন্তু কোচিং সেন্টারের শিক্ষকরা অনেক বেশি আন্তরিক। ক্লাসের বাইরেও কোনো বিষয় বুঝতে সমস্যা হলে তাদের কাছ থেকে তাৎক্ষণিক কল বা মেসেজের মাধ্যমে জেনে নিতে পারি। এছাড়া ব্যক্তিগত জীবনের বিভিন্ন জটিলতা কাটিয়ে উঠতেও অনেক সময় তারা সহযোগিতা করেন।’

দেশের বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থা কোচিং সেন্টার বিস্তারে মূল ভূমিকা রাখছে বলে মনে করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. মো. আলী জিন্নাহ। তিনি বলেন, ‘একটি ব্যবস্থায় একই কাজের জন্য এমন দুই ধরনের প্রতিষ্ঠান গ্রহণযোগ্য নয়। কিন্তু আমাদের বিদ্যালয়গুলোর শ্রেণীকক্ষের পাঠদানে ঘাটতি থেকে যায়। আবার আমাদের উচ্চশিক্ষার ভর্তি প্রক্রিয়াও এমন যে কোচিং ছাড়া শিক্ষার্থীদের কাঙ্ক্ষিত প্রতিষ্ঠানে ভর্তির সুযোগ নেই। যদি শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়ন করতে হয় তাহলে আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো এমন অবস্থায় নিতে হবে যাতে শ্রেণীকক্ষের পাঠদানে কোনো ঘাটতি না থাকে। এজন্য বরাদ্দ বাড়াতে হবে, শিক্ষকদের বেতন-ভাতা ও সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে। ভর্তি প্রক্রিয়াও এমন হতে হবে যাতে শিক্ষার্থী তার আগের শ্রেণীগুলোয় যথাযথ জ্ঞান-দক্ষতা অর্জন করলেই পরবর্তী ধাপে উত্তীর্ণ হতে পারে। এজন্য যেন তাকে আলাদাভাবে কোনো প্রতিষ্ঠানে ভর্তির প্রয়োজন না হয়।’

এদিকে বিভিন্ন সিটি করপোরেশনে যোগাযোগ করে জানা গেছে, কোচিং সেন্টারগুলোর বড় অংশই নিবন্ধিত নয়। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) তথ্য অনুযায়ী, সাম্প্রতিক সময়ে তাদের নিজস্ব জরিপে কোচিং সেন্টার পাওয়া গেছে ৪০১টি। এর মধ্যে মাত্র ১২০টি কোচিং সেন্টার নিবন্ধন নিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করছে। ৪০টির মতো প্রতিষ্ঠান কয়েক বছর ধরে লাইসেন্স নবায়ন করেনি। এছাড়া ব্যক্তি পর্যায়ের (শিক্ষক) কোচিং সেন্টারগুলোয় একই রুমে একাধিক শিক্ষক প্রাইভেট কোচিং করান। ফলে তাদের মধ্যে লাইসেন্স নেয়াসহ সরকারি নিয়ম মেনে চলার প্রবণতা খুবই কম।

চসিকের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা এসএম সরওয়ার কামাল বলেন, ‘চসিকের পক্ষ থেকে কোচিং সেন্টারগুলোর নিবন্ধন প্রদান একেবারেই সহজ। তবে কোচিং সেন্টারের নিবন্ধন প্রদানের ক্ষেত্রে বেশকিছু তথ্য, চুক্তিপত্রের বিষয় থাকায় অনেক সময় কোচিং সেন্টার মালিকরা লাইসেন্স নিতে চান না। আমরা এ বিষয়ে কোচিং সেন্টার মালিক সংগঠনের সঙ্গে বৈঠক করেছি। তারাও অবৈধ কোচিং সেন্টারগুলোর বিষয়ে একমত পোষণ করেছেন।’

একই চিত্র দেখা গেছে রংপুরেও। রংপুরে কোচিং সেন্টার আছে দেড় শতাধিক। তবে এর মধ্যে নিবন্ধিত ৩৫টি। রংপুর সিটি করপোরেশনের লাইসেন্স শাখার প্রধান মিজানুর রহমান মিজু বলেন, ‘প্রতি বছর ছোট কোচিং সেন্টারে ফি নেয়া হয় ৩ হাজার টাকা, মাঝারি কোচিং সেন্টারে ৪ হাজার, বড় কোচিং সেন্টারে নেয়া হয় ৭ হাজার টাকা। তবে অনেক কোচিং সেন্টার নিবন্ধন না করেই কার্যক্রম পরিচালনা করছে। অনিবন্ধিত কোচিং সেন্টারের তালিকা করার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আশা করছি ১০-১৫ দিনের মধ্যে অনিবন্ধিত কোচিং সেন্টার শনাক্ত করাসহ রাজস্ব আয় করা সম্ভব হবে।’

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে (ডিএনসিসি) কিছু কোচিং সেন্টার নিবন্ধিত থাকলেও বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষকদের ব্যক্তিগত উদ্যোগে পরিচালিত কোচিং সেন্টারগুলো নিবন্ধিত নয় বলে জানিয়েছেন ডিএনসিসির প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ। তিনি বলেন, ‘যেগুলো বৃহৎ পরিসরে কার্যক্রম চালাচ্ছে সেগুলো সিটি করপোরেশনে নিবন্ধিত। এমন অনেক কোচিং সেন্টার আছে যেগুলো বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষকরা ব্যক্তিগতভাবে নিজ বাসায় বা ভাড়া বাসায় পরিচালনা করছেন। এগুলো নিবন্ধিত নয়।’

শিক্ষাবিদরা বলছেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ও নিবন্ধন ছাড়া কোনো কোচিং সেন্টার চালানো যাবে না—এমন আইন কার্যকর করা জরুরি। পাশাপাশি স্থানীয় সরকারের অনুমোদনের ধারা সংশোধন করে শিক্ষা খাতের নিয়ন্ত্রণের সঙ্গে এর সংগতি আনতে হবে।

স্থানীয় সরকারের মাধ্যমে কোচিং সেন্টারের নিবন্ধন গ্রহণযোগ্য নয় বলে মনে করেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষার মানের অবনমনে বড় ভূমিকা রাখছে এসব কোচিং সেন্টার। অনেক শিক্ষক ক্লাসে পাঠদানে গুরুত্ব না দিয়ে এসব প্রতিষ্ঠানের প্রতি ঝুঁকে পড়ছেন। ফলে ক্লাসে পাঠদানে ঘাটতি থেকে যাচ্ছে। এছাড়া কোচিং সেন্টারগুলো শিক্ষায় বৈষম্য বাড়াচ্ছে। যার যত বেশি অর্থ আছে সে তত এগিয়ে যাচ্ছে। যার অর্থ নেই সে প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়ছে। কোচিং বাণিজ্যের প্রসার এবং কোচিং সেন্টারগুলোকে এভাবে স্থানীয় সরকারের অধীনে নিবন্ধন প্রদান কোনোটিই গ্রহণযোগ্য নয়।’

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শিক্ষার্থীদের প্রধান লক্ষ্য ছিল বৈষম্য বিলোপ। যদি শিক্ষায় বৈষম্য দূর করতে হয় তাহলে সরকারকে অবশ্যই কোচিং বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ করতে হবে জানিয়ে রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, ‘সারা দেশে নিয়ন্ত্রণহীনভাবে এ ধরনের প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। সরকারের এদিকে গুরুত্ব দেয়া জরুরি। একান্তই যদি কিছু প্রতিষ্ঠান সহায়ক হিসেবে রাখতে হয় তাহলে সেটা স্থানীয় সরকার নয়, বরং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে নীতিমালা মেনে পরিচালনার বিধান করা উচিত।’

এ বিষয়ে একাধিকবার চেষ্টা করেও শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব রেহানা পারভীনের বন্তব্য পাওয়া সম্ভব হয়নি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়