শিরোনাম
◈ পাইলট বিমানটি ঘনবসতি এলাকা থেকে জনবিরল এলাকায় নেওয়ার চেষ্টা করেন: আইএসপিআর ◈ মা, আমার সব জ্বলে’ — স্কুলে বিমান বিধ্বস্ত হয়ে দগ্ধ ইউশা ◈ সাগারিকার এক হালিতে বিধ্বস্ত নেপাল, সাফে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ ◈ সুন্দরবনের উপকূলে চার শতাব্দীর পুরনো কালীবাড়ি-শিববাড়ি পরিণত হতে যাচ্ছে প্রত্নতাত্ত্বিক ঐতিহ্যে ◈ বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনের উপকূলে বর্ষায় প্রাণ ফেরে বাধালের নৌকার হাটে ◈ সাপের কামড় খেয়ে সাপ নিয়ে হাসপাতালে হাজির তিনজন ◈ কুড়িগ্রামে বিপৎসীমার অতি কাছে তিস্তা নদীর পানি ◈ উড্ডয়নের কিছুক্ষণের মধ্যেই বিমানে সমস্যা আঁচ করেন পাইলট তৌকির ইসলাম, জানিয়েছিলেন কন্ট্রোল রুমেও ◈ শনাক্ত মৃতেদহ পরিবারের কাছে দ্রুত হস্তান্তর করা হবে: প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় ◈ কুড়িগ্রামের ৭ উপজেলায় নির্মিত হচ্ছে সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ

প্রকাশিত : ২০ জুলাই, ২০২৫, ০১:২৫ রাত
আপডেট : ২১ জুলাই, ২০২৫, ১০:০০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

শুক্রাণুর প্রতিযোগিতা নয়, ডিম্বাণুর নির্বাচন: গবেষণায় ভাঙল বহু বছরের ধারণা

গর্ভধারণ নিয়ে আমাদের বহু বছরের প্রচলিত ধারণাটি ছিল একটি প্রতিযোগিতার গল্প—যেখানে লক্ষ লক্ষ শুক্রাণু ডিম্বাণুকে নিষিক্ত করার জন্য দৌড়ে নামে এবং দ্রুততম ও শক্তিশালী শুক্রাণুটিই বিজয়ী হয়। কিন্তু সাম্প্রতিক গবেষণা এই ধারণাকে সম্পূর্ণ বদলে দিয়েছে। নতুন তথ্য অনুযায়ী, শুক্রাণুরা প্রতিযোগিতা করে না, বরং ডিম্বাণুই সক্রিয়ভাবে নিজের পছন্দের শুক্রাণুকে বেছে নেয়।

বিজ্ঞানবিষয়ক লেখিকা স্টার ভার্টনের সদ্য-প্রকাশিত বই ‘দ্য স্ট্রংগার সেক্স’-এ এই বিষয়টি আবারও জোরালোভাবে উঠে এসেছে।

প্রচলিত ধারণা কী ছিল?
পুরনো ধারণা অনুযায়ী, ডিম্বাণু ছিল এক নিষ্ক্রিয় লক্ষ্যবস্তু। লক্ষ লক্ষ শুক্রাণুর মধ্যে তীব্র প্রতিযোগিতার পর যে শুক্রাণুটি সবার আগে ডিম্বাণুর প্রাচীর ভেদ করতে পারত, সেটিই নিষেকে সফল হতো। বাকিরা এই দৌড়ে পিছিয়ে পড়ত।

নতুন গবেষণা কী বলছে?
গবেষণা প্রমাণ করেছে যে, ডিম্বাণু মোটেই নিষ্ক্রিয় নয়, বরং এটি একটি সক্রিয় নিয়ন্ত্রক। ডিম্বাণু রাসায়নিক সংকেত পাঠিয়ে শুক্রাণুদের আকর্ষণ করে এবং নিজের জন্য সবচেয়ে "যোগ্য" ও স্বাস্থ্যকর শুক্রাণুটিকে বেছে নেয়। অর্থাৎ, এটি কোনো প্রতিযোগিতা নয়, বরং একটি নির্বাচন প্রক্রিয়া।

নারী ও পুরুষের প্রজনন কৌশলের পার্থক্য
এই গবেষণায় নারী ও পুরুষের প্রজনন পদ্ধতির বিবর্তনগত পার্থক্য তুলে ধরা হয়েছে:

  • পুরুষের কৌশল: পুরুষদের প্রজনন কৌশল অনেকটাই মাছ বা উভচর প্রাণীদের মতো। তারা লক্ষ লক্ষ শুক্রাণু তৈরি করে, যা মূলত "সংখ্যার খেলা" (numbers game)। এখানে শুক্রাণুর গুণমানের চেয়ে সংখ্যার উপর বেশি জোর দেওয়া হয়।

  • নারীর কৌশল: অন্যদিকে, নারী শরীর অত্যন্ত নির্বাচিত পথে হাঁটে। জন্মের সময় লক্ষ লক্ষ ডিম্বাণু থাকলেও, প্রজননকালে মাত্র ৩০০-৪০০টি ডিম্বাণু নিষিক্ত হওয়ার যোগ্য হয়ে ওঠে এবং প্রতি মাসে মাত্র একটি ডিম্বাণু প্রস্তুত হয়। এটি "গুণমানের খেলা" (quality game)।

কেন এই পার্থক্য এবং নির্বাচন?
বিজ্ঞানীরা এর প্রধান কারণ হিসেবে "নিয়ন্ত্রণ"-কে চিহ্নিত করেছেন।

১. অভ্যন্তরীণ নিষেক: স্তন্যপায়ী প্রাণীদের নিষেক প্রক্রিয়াটি দেহের অভ্যন্তরে ঘটে। ফলে পুরো প্রক্রিয়ার নিয়ন্ত্রণ থাকে নারীশরীরের হাতে।
২. স্বাস্থ্যকর প্রজন্ম নিশ্চিত করা: যেহেতু স্তন্যপায়ী প্রাণীরা একসঙ্গে কম সংখ্যক সন্তানের জন্ম দেয়, তাই সেই সন্তানের সুস্থ ও সবল হওয়ার সম্ভাবনা নিশ্চিত করা জরুরি। ডিম্বাণুর এই নির্বাচন প্রক্রিয়াটি নিশ্চিত করে যে, জিনগতভাবে সবচেয়ে উপযুক্ত শুক্রাণুটিই যেন নিষেকে অংশ নেয়।

উপসংহার
সুতরাং, নিষেক প্রক্রিয়াটি শুক্রাণুর দৌড় প্রতিযোগিতা নয়, বরং ডিম্বাণুর দ্বারা পরিচালিত একটি সূক্ষ্ম এবং বুদ্ধিদীপ্ত নির্বাচন। এই আবিষ্কার কেবল একটি প্রচলিত ভুল ধারণাকেই ভাঙেনি, বরং নারীদেহ ও তার প্রজনন প্রক্রিয়া সম্পর্কে আমাদের জ্ঞানের অভাবকেও চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে।

 
 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়