বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শরীরকে সুস্থ রাখতে এবং মারণ রোগের ঝুঁকি কমাতে প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় এই উপাদানগুলো থাকা অত্যন্ত জরুরি।
স্বাস্থ্য ডেস্ক: সুস্থ জীবনযাপনের জন্য ভিটামিন ও খনিজ অপরিহার্য উপাদান। শরীরের প্রায় সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ কাজে, যেমন— কোষের বৃদ্ধি, বিপাকক্রিয়া এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরিতে এদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শরীরে প্রয়োজনীয় ভিটামিনের ঘাটতি হলে তা ক্যান্সারের মতো মারাত্মক রোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলতে পারে। তাই কোনোভাবেই এই বিষয়টিকে অবহেলা করা উচিত নয়।
আসুন জেনে নেওয়া যাক, কোন কোন ভিটামিন ও খনিজের অভাবে ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়তে পারে।
অ্যাসকরবিক অ্যাসিড নামে পরিচিত ভিটামিন সি একটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা পানিতে দ্রবণীয়। এটি আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, ক্ষত সারাতে সাহায্য করে এবং ত্বকের জন্য প্রয়োজনীয় কোলাজেন তৈরি করে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, শরীরে ভিটামিন সি-এর ঘাটতি খাদ্যনালী, পাকস্থলী এবং ফুসফুসের ক্যান্সারের ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়িয়ে দেয়।
ভিটামিন এ একটি ফ্যাট-দ্রবণীয় ভিটামিন, যা দৃষ্টিশক্তি, কোষের বিকাশ এবং রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। এর সক্রিয় রূপ, যা রেটিনয়েড নামে পরিচিত, কোষের বৃদ্ধি ও মৃত্যু নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে, ভিটামিন এ-এর অভাব পাকস্থলী, খাদ্যনালী এবং ফুসফুসের মতো নির্দিষ্ট কিছু ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
হাড়ের স্বাস্থ্য, ক্যালসিয়াম বিপাক এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণে ভিটামিন ডি অপরিহার্য। এটি একটি ফ্যাট-দ্রবণীয় ভিটামিন। বিশ্বের একটি বড় অংশের মানুষ, বিশেষ করে যারা পর্যাপ্ত সূর্যালোক পান না, তারা ভিটামিন ডি-এর অভাবে ভোগেন। একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, ভিটামিন ডি-এর নিম্ন মাত্রা স্তন, প্রোস্টেট, কোলোরেক্টাল (মলাশয়) এবং অগ্ন্যাশয়ের ক্যান্সারের ঝুঁকি বৃদ্ধির সঙ্গে সম্পর্কিত।
সেলেনিয়াম কোনো ভিটামিন না হলেও এটি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ট্রেস খনিজ (Trace Mineral)। এর শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গুণ রয়েছে, যা কোষকে অক্সিডেটিভ ক্ষতি থেকে রক্ষা করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করে। শরীরে সেলেনিয়ামের ঘাটতি ত্বক, ফুসফুস, প্রোস্টেট এবং কোলোরেক্টাল ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ:
ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে একটি সুষম খাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলা আবশ্যক। প্রতিদিনের খাবারে পর্যাপ্ত পরিমাণে রঙিন শাকসবজি, ফলমূল এবং প্রোটিন যোগ করে এই ভিটামিন ও খনিজগুলোর চাহিদা পূরণ করা সম্ভব। তবে মনে রাখা জরুরি, চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনো সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করা উচিত নয়। শরীরে কোনো নির্দিষ্ট উপাদানের অভাব রয়েছে কিনা, তা জানতে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
সূত্র: বিভিন্ন স্বাস্থ্যবিষয়ক গবেষণা ও বিশেষজ্ঞ মতামতের ভিত্তিতে সংকলিত।