শিরোনাম
◈ বৃটেনে বাংলাদেশি প্রভাবশালীদের সম্পত্তি লেনদেন নিয়ে গার্ডিয়ানের বিস্ফোরক প্রতিবেদন ◈ জামায়াতের সমাবেশে বাংলাদেশে নতুন রাজনৈতিক মেরুকরণের বার্তা ◈ এনসিপির নিবন্ধনে ঘাটতি: ৩ আগস্টের মধ্যে সংশোধনের সময় দিয়েছে ইসি ◈ ট্রাম্পের ক্ষোভে ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল, মামলা ১০ বিলিয়ন ডলারের ◈ নারী সাফ অনূর্ধ্ব-২০ চ্যাম্পিয়নশিপে শ্রীলঙ্কাকে ৫-০ গোলে উড়িয়ে দিয়ে শিরোপার দ্বারপ্রান্তে বাংলাদেশ ◈ বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র শুল্ক আলোচনা: ইউরোপীয় ইউনিয়নের পর্যবেক্ষণ ও ভূ-রাজনৈতিক উদ্বেগ ◈ রাজধানীর পল্লবীতে বাসে আগুন দিল দুর্বৃত্তরা ◈ ব্রহ্মপুত্রে চীনের দৈত্যাকার বাঁধ: ভারত ও বাংলাদেশের উদ্বেগ উপেক্ষা করেই প্রকল্পের উদ্বোধন ◈ জাতীয় মানবাধিকারের নামে সমকামিতার অফিস করতে দিবো না: মামুনুল হক ◈ মির্জা ফখরুলের ভাইয়ের ওপর হামলার প্রধান আসামি গ্রেফতার

প্রকাশিত : ১৯ জুলাই, ২০২৫, ১১:১৪ রাত
আপডেট : ২০ জুলাই, ২০২৫, ০৩:০০ রাত

প্রতিবেদক : মনজুর এ আজিজ

নারীদের মৃত্যু নিবন্ধনে ব্র্যাক জেমস পি গ্রান্ট স্কুল অব পাবলিক হেলথের গবেষণা প্রকাশ

নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশে নারীদের মৃত্যু নিবন্ধনের বাধা ও সহায়ক উপাদান নিয়ে পরিচালিত একটি গুণগত গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে। ফলাফলে দেখা গেছে-সচেতনতার অভাব, নারীদের সম্পত্তির মালিকানা না থাকা, প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের অভাব এবং সরকারি দপ্তরগুলোর সমন্বয়ের ঘাটতি রয়েছে।

শনিবার (১৯ জুলাই) রাজধানীর দি ওয়েস্টিন হোটেলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এ গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করা হয়। উচ্চপর্যায়ের এ গবেষণাটি পরিচালনা করতে আর্থিক সহায়তা করেছে ব্র্যাক জেমস পি গ্রান্ট স্কুল অব পাবলিক হেলথ (ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়), জনস হপকিন্স ব্লুমবার্গ স্কুল অব পাবলিক হেলথের ডেটা ফর হেলথ ইনিশিয়েটিভের জেন্ডার ইকুইটি ইউনিট এবং ভাইটাল স্ট্র্যাটেজিজ। 

গবেষণায় দেখা গেছে, বাংলাদেশের নাগরিক নিবন্ধন ব্যবস্থায় এখনও নারীদের মৃত্যু নিবন্ধনের হার উল্লেখযোগ্যভাবে কম। রংপুর বিভাগে পরিচালিত এই গবেষণায় নারীদের মৃত্যু নিবন্ধনে সামাজিক, প্রশাসনিক এবং আইনি চ্যালেঞ্জগুলো তুলে ধরা হয়েছে এবং সমাধানের জন্য বাস্তবভিত্তিক পরামর্শ প্রদান করা হয়েছে।

গবেষণা প্রকাশ অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মমুনুর রশিদ বলেন, গ্রামে নারীদের ভূমি বা সম্পত্তির মালিকানা না থাকায় পরিবারগুলো প্রায়ই তাদের মৃত্যু নিবন্ধনের প্রয়োজন অনুভব করে না। এটি একটি বড় সামাজিক ও নীতিগত সমস্যা। রংপুরে করা গবেষণায় দেখা গেছে- ২০২৩-২০২৪ সালে মোট ২০,২০২টি মৃত্যুর মধ্যে মাত্র ৬,৫৩৭টি (৩২%) নারীর নিবন্ধন হয়েছে। 

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের অধীন জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন দপ্তরের রেজিস্ট্রার জাহিদ হোসেন বলেন, পুরুষ ও নারীর মৃত্যু নিবন্ধনের মধ্যে বড় ধরণের বৈষম্য রয়েছে, যা এখন একটি জননীতি ইস্যুতে পরিণত হয়েছে। বর্তমানে আমরা ডিজিটালাইজেশনে অগ্রগতি করেছি। তাই এ সময়ে সরকারি সংস্থা, এনজিও ও সিভিল সোসাইটির মধ্যে আরও সমন্বয় জরুরি হয়ে পড়েছে।

বাংলাদেশ অবস্টেট্রিক্যাল অ্যান্ড গাইনোকোলজিক্যাল সোসাইটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. ফারহানা দেওয়ান বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) পূরণ করতে হলে আমাদের আরও অনেক কাজ করতে হবে। একজন চিকিৎসক হিসেবে আমরা প্রায়ই পরিবারের প্রথম যোগাযোগের মাধ্যম। রোগী বা পরিবারকে মৃত্যুর পর নিবন্ধনের ব্যাপারে সচেতন করতে আমাদের সক্রিয় ভূমিকা নিতে হবে।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর যুগ্ম পরিচালক আলমগীর হোসেন তার বক্তব্যে নারীদের মৃত্যু নিবন্ধনে স্থানীয় মসজিদের ইমাম ও শ্বশানের দায়িত্বে নিয়োজিত ব্যাক্তিদের সংশ্লিষ্ট রাখার আহবান জানান। প্রয়োজনে তাদের কাছে মৃত্যু নিবন্ধনের ফরম দিয়ে রাখার পরামর্শ দেন। কারণ তারা মুসলিমদের জানাজা পড়ানোর পর এবং হিন্দুদের শ্বশানে সমাহিতের পর মৃত্যু নিবন্ধনের কাজটি সেরে ফেলতে পারেন। পরে সেটি সরকারের নির্দিষ্ট অফিসে জমা দিয়ে দেবেন। 

এদিকে গবেষণার মূল ফলাফলে বলা হয়েছে- সচেতনতার অভাব, নারীদের সম্পত্তির মালিকানা না থাকা, প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের অভাব এবং সরকারি দপ্তরগুলোর সমন্বয়ের ঘাটতি। আইনগত বা আর্থিক প্রয়োজনে যেমন উত্তরাধিকার দাবি বা ঋণ নিষ্পত্তির সময় নিবন্ধন হয়। স্থানীয় কর্মকর্তাদের সহায়তা ও সম্প্রদায়ের নেতাদের নির্দেশনাও সহায়ক ভূমিকা রাখে।

আলোচনায় অংশগ্রহণকারীরা একমত হন যে, জীবিত ও মৃত উভয় অবস্থাতেই নারীদের স্বীকৃতি দেওয়া একটি ন্যায়সংগত সমাজ গঠনের জন্য অপরিহার্য। এ জন্য লিঙ্গ-সংবেদনশীল নাগরিক নিবন্ধন ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী করতে হবে।

বিশেষজ্ঞদের প্রস্তাবিত সুপারিশের মধ্যে রয়েছে- লিঙ্গ-সংবেদনশীল সচেতনতামূলক কার্যক্রম জোরদার করা। নিবন্ধনের প্রক্রিয়া সরলীকরণ এবং ব্যয় কমানো। নিবন্ধন দপ্তরসমূহের জনবল ও সক্ষমতা বৃদ্ধি করা। মৃত্যুসনদের আইনি ও প্রশাসনিক ব্যবহার সম্প্রসারণ করা। আইনি প্রণোদনা এবং তৃণমূল পর্যায়ে যোগাযোগ জোরদার করা। অনুষ্ঠানে সরকারি-বেসরকারি ও বিভিন্ন নারী সংস্থার প্রতিনিধিরা বক্তব্য ও তাদের মতামত তুলে ধরেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়