শিরোনাম
◈ প্লট–ফ্ল্যাট বরাদ্দে সচিব, এমপি, মন্ত্রী, বিচারপতিসহ যাঁদের কোটা বাতিল ◈ নির্বাচনে ঋণখেলাপিরা অংশ নিতে পারবেন না: অর্থ উপদেষ্টা ◈ জনগণই নির্ধারণ করবে আগামী দিনে কারা রাষ্ট্র পরিচালনা করবে : নিপুণ রায় ◈ জর্ডান-মিসরকে নিয়ে বৃহত্তর ইসরায়েল প্রতিষ্ঠা করতে চান নেতানিয়াহু ◈ বৃহস্পতিবার যেসব এলাকায় গ্যাস থাকবে না ◈ চানখাঁরপুলে ৬ হত্যা: ‘পুলিশের পোশাক পরা লোকদের হিন্দিতে কথা বলতে শুনি’ ◈ আপনারে কে এখানে বসাইছে, তার কইলজা খুলিহালাইম, আপনার কইলজাও খুলমু: : কুমিল্লায় বিএনপি নেতার হুমকি ◈ ১১৭ দেশে এই প্রথম নজিরবিহীন তল্লাশি, এস আলম গ্রুপের ৪৭০ ‘শ্যাডো’ কোম্পানিতে লুকানো ২ লাখ কোটি টাকা ◈ আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দায়িত্ব দেয়ার জন্য স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ পুলিশ কর্মকর্তার খোঁজে হিমশিম পুলিশ প্রশাসন ◈ বাংলা‌দে‌শে ইহুদিবিদ্বেষী মন্তব্য, নিরাপত্তা বাহিনীর নির্যাতনসহ যেসব বিষয় উঠে এসেছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিবেদনে

প্রকাশিত : ১২ আগস্ট, ২০২৫, ০৫:৪২ বিকাল
আপডেট : ১৩ আগস্ট, ২০২৫, ১০:০০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

রেকর্ড মুনাফা ৬ ব্যাংকের, সর্বোচ্চ লোকসান ৫টির

২০২৫ সালের প্রথম ছয় মাস ব্যাংকখাতের জন্য কেমন ছিল? এর উত্তর নির্ভর করছে, গত ১৫ বছরে তালিকাভুক্ত ব্যাংকগুলো কাদের ঋণ দিয়েছে তার ওপর।

২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে জুনের মধ্যে কম মাত্রার খেলাপি ঋণ এবং ট্রেজারি বন্ড থেকে উল্লেখযোগ্য ও নিরাপদ মুনাফা নিয়ে ছয়টি তালিকাভুক্ত বাণিজ্যিক ব্যাংক রেকর্ড মুনাফা করেছে।

একই সময়ে পাঁচটি ব্যাংক সম্মিলিতভাবে ছয় হাজার কোটি টাকার লোকসানে পড়েছে। ২০২৪ সালের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর তাদের মন্দ ঋণের প্রকৃত তথ্য প্রকাশ পেলে এই পরিস্থিতির উদ্ভব হয়। এর ফলে তাদেরকে অনেক বেশি প্রভিশন রাখতে হচ্ছে।

আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ব্র্যাক, পূবালী, প্রাইম, ইস্টার্ন, যমুনা ও ব্যাংক এশিয়া এ বছরের প্রথম ছয় মাসে রেকর্ড মুনাফাধারী ব্যাংক। তাদের সম্মিলিত আয় বেড়েছে ৮০ শতাংশ।

বিপরীতে, এবি, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী, আইএফআইসি, ন্যাশনাল ও সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক সর্বোচ্চ লোকসান দেখিয়েছে। সম্মিলিতভাবে তাদের লোকসান ছয় হাজার কোটি টাকা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংকিং ও বীমা বিভাগের অধ্যাপক মো. মাইন উদ্দিন বলেন, 'খেলাপি ঋণই এটা নির্ধারণ করে দিয়েছে।'

তিনি বলেন, 'যদি কোনো ব্যাংকের খেলাপি ঋণ বেশি থাকে, তাহলে সুদ থেকে তাদের আয় হয় না। ওই খেলাপি ঋণের জন্য উল্টো তাদের লাভ থেকে প্রভিশন রাখতে হয়। ফলে, সেটা সরাসরি মুনাফা কমিয়ে ফেলে।'

তিনি আরও বলেন, যেসব ব্যাংকের খেলাপি ঋণ কম, তারা ট্রেজারি বন্ডে বেশি বিনিয়োগ করতে পেরেছে। সম্প্রতি ট্রেজারি বন্ডে উচ্চ হারে সুদ দিয়েছে। এই আয় ঝুঁকিমুক্ত ও সম্পূর্ণ সুরক্ষিত। এর জন্য কোনো প্রভিশনও রাখতে হয়নি। ফলে ওই ব্যাংকগুলোর মুনাফা বেড়েছে।

তালিকাভুক্ত ব্যাংকগুলোর মধ্যে ব্র্যাক ব্যাংক সর্বোচ্চ ৭০৮ কোটি টাকার মুনাফা করেছে। এরপর পূবালী ব্যাংক ৫৭৮ কোটি, প্রাইম ব্যাংক ৪১৫ কোটি এবং যমুনা ব্যাংক ও ইস্টার্ন ব্যাংকও ৩০০ কোটি টাকার বেশি মুনাফা করেছে।

২০২৫ সালের প্রথমার্ধে মুনাফা করা অন্যান্য ব্যাংকের মধ্যে রয়েছে সিটি ব্যাংক, ব্যাংক এশিয়া, ঢাকা ব্যাংক, মার্কেন্টাইল ব্যাংক, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক ও সাউথইস্ট ব্যাংক।

বিপরীতে, এবি ব্যাংক ২০২৫ সালের প্রথম ছয় মাসে সর্বোচ্চ এক হাজার ৭৫৮ কোটি টাকা লোকসান করেছে। ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের লোকসান এক হাজার ৬৯১ কোটি টাকা, আইএফআইসি ব্যাংকের এক হাজার ১২৮ কোটি টাকা এবং ন্যাশনাল ব্যাংকের ৯৮৫ কোটি টাকা।

আর্থিক প্রতিবেদনে এবি ব্যাংক জানিয়েছে, মূলত নিট সুদ আয় কমে যাওয়ায় তাদের মুনাফা কমেছে। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় তাদের সুদ থেকে আয় এক হাজার ৪৭৩ কোটি টাকা কমেছে।

ব্যাংকটি জানিয়েছে, খেলাপি ঋণ বেড়ে যাওয়ায় সুদ থেকে তাদের আয় কমেছে। তাদের খেলাপি ঋণ ৩৩ শতাংশ বেড়ে ২৫ হাজার ৭৬৫ কোটি টাকায় পৌঁছেছে।

বেশিরভাগ বড় লোকসানী ব্যাংকের চিত্র একই।

আইএফআইসি ব্যাংক 'সম্পদ মানের অবনতি'কে প্রধান কারণ হিসেবে উল্লেখ করে জানিয়েছে, তাদের নিট সুদ আয় কমে এখন মাইনাস ৯৭০ কোটি টাকা। এক বছর আগে উল্টো ৪৪৩ কোটি টাকা আয় হতো সুদ থেকে।

ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক জানিয়েছে, শ্রেণিভুক্ত বিনিয়োগ বেড়ে যাওয়ায় তাদের নিট বিনিয়োগ আয় বছরে এক হাজার ৯৭৭ কোটি টাকা কমেছে।

ন্যাশনাল ব্যাংক জানিয়েছে, খেলাপিদের কাছ থেকে ঋণ আদায় কম হওয়ায় তারা ঋণ ও অগ্রিমে সুদ হিসাব করতে পারেনি। পাশাপাশি আমানত ও ঋণ গ্রহণে উচ্চ সুদ ব্যয় বহন করতে হয়েছে।

এত প্রতিকূলতার পরও ন্যাশনাল ব্যাংক তাদের আর্থিক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, নতুন বোর্ড ও ব্যবস্থাপনা ঋণ আদায়ের প্রচেষ্টা বাড়িয়ে এবং কম সুদে আমানত সংগ্রহ করে আর্থিক অবস্থার উন্নয়নে কাজ করছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একটি শীর্ষ ব্যাংকের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, গ্রাহকরা তাদের টাকার নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে এই সময়ে সুদের হার কম হলেও শক্তিশালী করপোরেট ব্যবস্থাপনা থাকা ব্যাংকে টাকা স্থানান্তর করেছেন।

ফলে, ভালো ব্যবস্থাপনার ব্যাংকগুলোর আমানত বেড়েছে এবং অন্য ব্যাংকগুলো আমানত পেতে হিমশিম খেয়েছে।

তিনি আরও বলেন, 'আগামী বছরগুলোতেও এই প্রবণতা দেখা যেতে পারে। কাজেই, ভালো ব্যবস্থাপনার ব্যাংকগুলো ভালো করবে।' উৎস: ডেইলি স্টার।

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়