যুক্তরাজ্যে সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর আংশিক সম্পদ বিক্রির অর্থ থেকে ৩৫০ মিলিয়ন ডলার ফেরত চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছে ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক (ইউসিবি)।
গত ২৯ জুন যুক্তরাজ্যের সম্পদ ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠান গ্রান্ট থর্নটনকে পাঠানো ওই চিঠিতে ইউসিবি অর্থ ফেরতের অনুরোধ জানায়।
চিঠিতে বলা হয়েছে, আদায় ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতের অংশ হিসেবে ইউসিবি একটি ফরেনসিক অডিট পরিচালনা করছে। এটি ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০২৪ সালের জুলাই পর্যন্ত আগের পরিচালনা পর্ষদের সময়ে অনুমোদিত ও বিতরণ করা ঋণ নিয়ে করা হচ্ছে।
ওই সময় সাইফুজ্জামান চৌধুরী, তার স্ত্রী ও কয়েকজন সহযোগী প্রায় ৩৫০ মিলিয়ন ডলার আত্মসাৎ করেছেন। ইউসিবির দৃঢ় বিশ্বাস, যুক্তরাজ্যের প্রপার্টি কোম্পানিগুলোও এ অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় তাদের সঙ্গে জড়িত।
ইউসিবি সাইফুজ্জামান চৌধুরী, তার স্ত্রী রুখমিলা জামান এবং যুক্তরাজ্যের প্রপার্টি কোম্পানিগুলোর ব্যক্তিগত সম্পদের বিরুদ্ধে দাবি জানিয়েছে।
ব্যাংকটি গ্রান্ট থর্নটনের অংশীদারদের সহায়তা দিচ্ছে, যাতে যুক্তরাজ্যের বাকি প্রপার্টি কোম্পানিগুলো—বিশেষ করে অ্যারামিট প্রপার্টিজ লিমিটেড, রুখসমিলা প্রপার্টিজ লিমিটেড, জেডটিএস প্রপার্টিজ লিমিটেড ও নিউ ভেঞ্চারস (লন্ডন) লিমিটেডে প্রশাসক নিয়োগের প্রক্রিয়া এগিয়ে নেওয়া যায়। প্রয়োজন হলে সাইফুজ্জামান ও তার স্ত্রীর ব্যক্তিগত সম্পদের ক্ষেত্রেও একই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ব্রিটিশ দৈনিক দ্য টেলিগ্রাফ-এর সোমবারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাইফুজ্জামান চৌধুরীর যুক্তরাজ্যের কিছু সম্পদ বিক্রি করে তার ঋণ পরিশোধের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। গ্রান্ট থর্নটনের নিযুক্ত প্রশাসকদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তার কিছু সম্পত্তি বিক্রির, যার মধ্যে লন্ডনসহ দক্ষিণ-পূর্ব ইংল্যান্ডের বিভিন্ন শহরের আবাসিক ভবন রয়েছে।
এই বিক্রির অর্থ দিয়ে ঋণদাতাদের পাওনা শোধ করা হবে। ঋণদাতাদের মধ্যে রয়েছে সিঙ্গাপুরভিত্তিক ডিবিএস ব্যাংক ও ব্রিটিশ অ্যারাব কমার্শিয়াল ব্যাংক।
প্রতিবেদনে আরও জানানো হয়, সাইফুজ্জামানের মালিকানাধীন ছয়টি আবাসন কোম্পানি ইতোমধ্যে প্রশাসনিক প্রক্রিয়ায় চলে গেছে। এসব কোম্পানির মাধ্যমে দেশে তার বিভিন্ন সম্পদ পরিচালিত হতো।
দ্য টেলিগ্রাফ-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষ অবৈধ সম্পদ অনুসন্ধান শুরু করার পর যুক্তরাজ্যে সাইফুজ্জামানের সম্পদের সাম্রাজ্যের তথ্য প্রকাশ পায়। সেখানে তার তিন শতাধিক প্রপার্টি (বাড়ি, ফ্ল্যাট ও অ্যাপার্টমেন্ট) রয়েছে, যেগুলোর মোট মূল্য প্রায় ১৭ কোটি পাউন্ড। অভিযোগ রয়েছে, ব্রিটেনে অর্থ পাচার করে এসব সম্পদ অর্জন করেছেন তিনি।
বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের আবেদনের পর যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সি (এনসিএ) গত জুনে সাইফুজ্জামানের বেশ কিছু সম্পদ জব্দ করে। এর মধ্যে রয়েছে নর্থ লন্ডনের সেন্ট জনস উড এলাকায় ১১ মিলিয়ন পাউন্ড মূল্যের একটি বিলাসবহুল বাড়ি এবং সেন্ট্রাল লন্ডনের ফিটসরোভিয়া এলাকায় একাধিক ফ্ল্যাট। উৎস: যুগান্তর।