রতন কুমার রায়, ডোমার (নীলফামারী) প্রতিনিধি: নীলফামারীর ডোমার সেবা হাসপাতালে চিকিৎসকের দায়িত্ব অবহেলায় এক প্রসূতি মায়ের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। মৃত্যুর ঘটনা ধামাচাপা দিতে স্বজনদের দেড় লাখ টাকায় রফাদফা করতে বাধ্য করান বলে মৃত প্রসূতির স্বজনরা অভিযোগ করেন।
বুধবার (২২শে অক্টোবর) সকালে সরেজমিনে গিয়ে মৃত প্রসূতির মা মিনু রানী ও তার স্বজনরা জানান, গত সোমবার আমরা প্রসূতি চন্দনা রানীর (১৯) প্রসব ব্যাথা উঠলে সেবা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে ডাক্তার আইনুল হক রোগীর পরিক্ষা নিরিখা করে জানান রোগীর আর অন্য কোন সমস্যা নেই এবং সিজার করার পরামর্শ দেয়।
গতকাল মঙ্গলবার বিকাল তিনটায় চন্দনা রানীকে সিজার করায় ডা. আইনুল ইসলাম। সিজার শেষে রোগীকে বেডে আনা হয়।এসময় চন্দনার রক্তক্ষরণ হতে থাকে, রক্তে বিছানা ভিজে যায়। আমরা ডাক্তারকে বলি হয় রক্তপাত বন্ধ করেন, না হয় রোগীকে রেফার্ড করেন, আমরা রোগীকে রংপুরে নিয়ে যাবো। ওরা রোগীকে রেফার্ড করেনি। আজ বুধবার সকাল পাঁচটায় বলে আপনারা রোগীকে রংপুরে নিয়ে যান।আমরা দেখি ততোক্ষণে রোগী মারা গেছে। আমরা বারবার বলার পড়েও তারা রোগীকে নিতে দেয়নি।ওরা ইচ্ছাকৃত রোগীকে মেরে ফেলেছে। আমরা এর বিচার চাই। ওরা জোরপূর্বক মিমাংসার কাগজে স্বাক্ষর করে নিয়েছে।দুই একজন ছাড়া সবাই ওদের পক্ষের ছিল। কাগজে স্বাক্ষর নেওয়ায় পরে আমাদের দেড় লাখ টাকা হাতে ধরিয়ে দিয়েছে।
উল্লেখ্য, চন্দনা রানী ডিমলা উপজেলার বালাপাড়া ইউনিয়নের মধ্য সুন্দর খাতা গ্রামের জগন্নাৎ চন্দ্রের মেয়ে।এবং একই উপজেলার বাবুরহাট এলাকার দীনেশ চন্দ্রের ছেলে দিপক চন্দ্রের স্ত্রী। মৃতের পরিবার সূত্রে জানাযায়, দিপক চন্দ্রের সাথে চন্দনা রানীর বিয়ে হয়েছিল প্রায় দশ বছর আগে। দাম্পত্য জীবনে তাদের তৃপ্ত চন্দ্র (৮)নামে এক ছেলে রয়েছে। সিজারে দ্বিতীয় ছেলের জন্ম দেয় চন্দনা। শিশুটি বর্তমানে সুস্থ্য রয়েছে।
এব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রায়হান বারী বলেন, আমরা অভিযোগ পাইনি, তবে শুনেছি। কোন সংবাদ মাধ্যমে খবরটা প্রকাশ হলে, আমরা স্বপ্রনোদিত হয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করব।
ডোমার থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরিফুল ইসলাম জানায়, কোন অভিযোগ পাইনি। তবে জিডি মুলে পরিবারের হাতে লাশ দেওয়া হয়েছে ।
এবিষয়ে সেবা হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ও সার্জন ডা: আইনুল হককে (০১৭৫৮১২৩৪৪৫) একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তিনি ফোন রিসিভ না করে কলটি কেটে দেন। ফলে তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।