নুর উদ্দিন, ছাতক সুনামগঞ্জ : সুনামগঞ্জের ছাতকে ষোল বছরের এক দরিদ্র পরিবারের কিশোরিকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ফুঁসলিয়ে ধর্ষণের পর সে এখন পাঁচ মাসের অন্ত:সত্বা। থানার এক দারোগা, দুই জনপ্রতিনিধিসহ গ্রাম্য প্রভাবশালী মাতব্বররা মিলে বিষয়টি ধামাচাপার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার চরমহল্লা ইউনিয়নে মনিয়াসের গ্রামে।
জানা যায়, উপজেলার চরমহল্লা ইউনিয়নের আহারগাঁও গ্রামের শুকুর আলীর লম্পট ছেলে সাজু মিয়া স্থানীয় মনিয়াসের গ্রামের ওই কিশোরির সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলে। এক পর্যায়ে তাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে একাধিকবার জোরপূর্বক ধর্ষন করে ওই লম্পট। ফলে হতদরিদ্র পরিবারের কিশোরি কন্যা অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। লোক লজ্জার ভয়ে বিষয়টি গোপন রাখে কিশোরির পরিবার।
বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে লম্পট ধর্ষক লাপাত্তা হয়ে যায়। ধর্ষককে বাঁচাতে দুই জনপ্রতিনিধিসহ গ্রাম্য প্রভাবশালী মাতব্বররা অপতৎপরতা অব্যাহত রেখেছে। এর মধ্যে ছাতক থানার উপ-পরিদর্শক ও ইউনিয়নের বিট পুলিশ সারোয়ার হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। কিন্তু বড় অংকের অর্থ পেয়ে আইনী প্রদক্ষেপ গ্রহণ না করে তিনিও বিষয়টি ধামাচাপার পক্ষে মতামত দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
এদিকে, ধর্ষককে বাঁচাতে বড় অংকের উৎকুচের বিনিময়ে স্থানীয় মহিলা ইউপি সদস্য আনোয়ারা বেগম উঠেপড়ে লেগেছেন। এ বিষয়ে স্থানীয় মাতব্বরদের নিয়ে গেল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ভিকটিমের চাচাত ভাই যুবলীগ নেতা সাদিকের নেতৃত্বে তার নিজ বাড়িতে সালিশ বৈঠকে বসেন। বৈঠকে ধর্ষক সাজুকে আড়াল করে তার ছোট ভাই তাজ উদ্দীনের সাথে ভিকটিমকে বিয়ে দেওয়ার জন্য পরিবারকে চাপ প্রয়োগ করা হয়। অসহায় ভিকটিমের পরিবার তাদের চাপে পড়ে মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছে না। বিধায় অন্যায় প্রস্তাবে তারা রাজিও হয়েছেন। ভিকটিম পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা অন্যদিকে বয়সের জটিলতা। এ কারণে বিয়ের আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা সম্ভব হবে না। এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে অসহায় ভিকটিমকে ফাঁসানো হচ্ছে। আর রক্ষা করা হচ্ছে ধর্ষককে।
সচেতন মহলের দাবী, কিশোরি অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় বিষয়টি আইনের চোখে ধর্ষণ হিসেবে বিবেচিত। এছাড়া অন্তঃসত্ত্বা কিশোরিকে জোরপূর্বক ধর্ষকের ছোট ভাইয়ের সাথে বিয়ে দেওয়াও বেইআইনি। যা নারী-শিশু নির্যাতন দমন আইনের গুরুতর লঙ্ঘন। দ্রুত আইনি পদক্ষেপের মাধ্যমে ভিকটিমের নিরাপত্তা নিশ্চিতসহ ধর্ষক সাজুর শাস্তি নিশ্চিত করার জোর দাবি এলাকাবাসীর। অন্যতায় বড় ধরণের ক্ষতির সম্মুখিন হতে পারে ভিকটিম ও তার পরিবার।
ইউপি সদস্য আনোয়ারার সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে তাদেরকে পাওয়া যায়নি।
থানার উপ-পরিদর্শক সারোয়ার হোসেন এর সাথে মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করছেন নি। ছাতক থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সফিকুল ইসলাম খান বলেন, এ বিষয়ে মামলা প্রক্রিয়াধিন।