এ এইচ সবুজ, গাজীপুর: ভাতকে বাঙালিদের জীবনের অন্যতম প্রধান খাদ্য হিসেবে দেখা হলেও গাজীপুরের কাপাসিয়ার শামসুদ্দিন এক ব্যতিক্রম উদাহরণ। জন্মের পর থেকে একবারও ভাত মুখে তুলেননি তিনি।
উপজেলার টোক ইউনিয়নের ঘোষেরকান্দি এলাকার মৃত মোঃ ছফির উদ্দিন-মৃত মোসা: আছিয়া খাতুনের ঘরে জন্ম নেয়া শামসুদ্দিনের বয়স বর্তমানে ৬২ বছরেরও বেশি। পাঁচ ভাই ও এক বোনের মধ্যে শামসুদ্দিন সবার বড়।
একেবারে শিশুকাল থেকেই কখনো ভাত খাননি তিনি। মিষ্টি, রুটি, চিড়া-মুড়ি জাতীয় শুকনো খাবারেই তার প্রধান খাদ্যাভ্যাস গড়ে উঠেছে। নিজেই জানান, ‘ভাতের গন্ধেই অস্বস্তি লাগে, ছোটবেলা থেকেই খাই না, এখন আরও পারি না।’
প্রতিদিন তিন বেলা ভাতের পরিবর্তে তিনি খেয়ে থাকেন চিড়া, মুড়ি, বিস্কুট ও রুটি।
এলাকার সাবেক ব্যাংক কর্মকর্তা আলামিন হোসেন জানান, ছোটবেলা থেকেই শামসুদ্দিনকে ভাতবিমুখ হিসেবেই দেখেছি। বিষয়টি শুনলে অনেকেরই অবাক লাগতে পারে।
এছাড়াও আরো বেশ কয়েকজন এলাকাবাসী জানান, ভাত দেখলেই তার বমি হয়। বাংলাদেশে এমন ঘটনা সত্যিই বিরল।
শামসুদ্দিন আরো বলেন, পরিবারের সবাই যখন ভাত খায়, তখন শামসুদ্দিন সেখানে বসেন না। তার জন্য আগেই শুকনো খাবার রাখা হয়। কোনো অনুষ্ঠান বা বিয়েতে তিনি অন্যদের সঙ্গে একসঙ্গে ভাত খান না, বরং নিজের খাবার সঙ্গে নিয়ে দূরে বসে খান।
তিনি আরো বলেন, ১৯৮০ সালে তার বিয়ের সময়েও তিনি বরযাত্রীর সাথে বসে খান নি। আলাদাভাবে বসে খেয়েছেন রুটি,মুড়ি অন্যান্য সবজি। এমনিতেও কোথাও কোন আচার অনুষ্ঠানে গেলে বাড়ি থেকে রুটি ব্যাগে ভরে নিয়ে যান শামসুদ্দিন।
এছাড়াও শামসুদ্দিন ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রণালয়ের অধীনে দিনাজপুরে একটি অফিসে অফিস সহকারী হিসেবে ৬-৭ বছর চাকরি করেছেন। একটি দুর্ঘটনায় আহত হওয়ার পর চাকরিটা ছেড়ে চলে আসেন।
এলাকাবাসী মনে করেন, জন্ম থেকে ভাত না খেয়েও সুস্থ-সবল থাকা শামসুদ্দিন একটি অনন্য দৃষ্টান্ত।