বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে যাত্রাবাড়ী থানার একটি হত্যা মামলায় কনটেন্ট ক্রিয়েটর তৌহিদ আফ্রিদিকে ৫ দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছে আদালত। মামলার তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনের শুনানি নিয়ে সোমবার (২৫ আগস্ট) ঢাকার মহানগর হাকিম সারাহ্ ফারজানা হক এ আদেশ দেন।
বেসরকারি টেলিভিশন স্টেশন মাই টিভির চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাসির উদ্দিন সাথীর ছেলে তৌহিদ আফ্রিদিকে রোববার রাতে সিআাইডির একটি দল বরিশাল থেকে গ্রেপ্তার করে। বরিশালের কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মিজানুর রহমান বলেন, বাংলা বাজার এলাকার পপুলার ডায়াগনস্টিক ল্যাবের পাশের একটি ভবন থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর পর তাকে ঢাকায় নিয়ে আসা হয়।
জানা গেছে, কনটেন্ট ক্রিয়েটর তৌহিদ আফ্রিদিকে বরিশাল মহানগরের বাংলাবাজার এলাকার যে বাড়িতে তিনি ছিলেন সেটি তার বাবা নাসির উদ্দিন সাথীর মামা মোতাহার হোসেনের বাড়ি।
ভবনটিতে তার অবস্থান সম্পর্কেও জানতেন না সেখানের বাসিন্দারা। তাকে কখনও দেখেননি তারা। ওইদিন রাত ১০টায় গ্রেপ্তারের পর এলাকাবাসীর মধ্যে এ নিয়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
বরিশাল নগরের বাংলাবাজার সড়কের ‘নিউ হাউজ লেন’ গলিতেই ওই বাড়িটি। এ গলিটি পুরোপুরি আবাসিক এলাকায়।
স্থানীয়দের তথ্য অনুযায়ী, মোতাহারের পরিবার ভবনের দোতলায় থাকেন। পাশের দোতলার ভাড়াটিয়া এবং প্রতিবেশীরা জানান, সোমবার রাতে পুলিশ একজনকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে গেছে। তবে তার পরিচয় সম্পর্কে তারা কিছু জানেন না। এমনকি রাতে গ্রেপ্তারের বিষয়টি দেখেছেন কিনা সেটাও বলতে রাজি হননি।
নিউ হাউজ লেনের মুদির দোকানদার আসাদুজ্জামান বলেন, পুলিশ কখন প্রবেশ করেছে বা গ্রেপ্তার করেছে, তা আমি দেখিনি। পরে শুনেছি। অন্য প্রতিবেশীরা জানান, তারা কখনও তৌহিদকে এ এলাকায় দেখেননি।
প্রতিবেশী এক নারী জানান, একজনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে নিয়ে গেছে। ওই ব্যক্তির সম্পর্কে তারা কিছু জানেন না।
এদিকে গ্রেপ্তারের পর একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওটিতে দেখা যায়, তৌহিদকে পুলিশ সিঁড়ি দিয়ে যখন নামাচ্ছে তখন তার স্ত্রীও নামছেন। নিচে দাঁড়ানোর সময়ও স্ত্রী তার সঙ্গে ছিলেন। ঢাকা থেকে আসা পুলিশের সিআইডির টিম তৌহিদকে গ্রেপ্তার করে। ঘটনাস্থল থেকেই তাকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়।
তৌহিদ আফ্রিদির বাবার বাড়ি বরিশাল নগরের কাউনিয়া জানকিং সিং রোডে। ওই এলাকায় তাদের বাড়িটি ‘মাইটিভি’ বাড়ি বললে যে কেউ চেনে। তার বাবা নাসির উদ্দিন সাথী মাইটিভির চেয়ারম্যান গত ১৭ আগস্ট গ্রেপ্তার হন। এরপর তার পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর হয়। রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠানো হয় তাকে।
মামলার সূত্রে জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে গত বছরের ৫ আগস্ট যাত্রাবাড়ী থানাধীন পাকা রাস্তার ওপর আন্দোলনে অংশ নেন মো. আসাদুল হক বাবু। ঘটনার দিন দুপুর আড়াইটায় আসামিদের ছোড়া গুলি আসাদুলের বুকে ও ডান পাশে লাগে। পরে হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় গত বছরের ৩০ আগস্ট যাত্রাবাড়ী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহতের বাবা জয়নাল আবেদীন। এ মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ২৫ জনকে আসামি করা হয়। এ মামলায় নাসির উদ্দিন ২২ নম্বর ও তার ছেলে তৌহিদ আফ্রিদি ১১ নম্বর এজাহারনামীয় আসামি। উৎস: চ্যানেল২৪