কল্যাণ বড়ুয়া, বাঁশখালী(চট্টগ্রাম) প্রতিনিধিঃ বঙ্গোপসাগরের পটুয়াখালীর কুয়াকাটা উপকূল সংলগ্ন শেষ বয়ার প্রায় ৯০ কিলোমিটার গভীর সমুদ্রে গত ১৭ আগস্ট ভোররাতে ফিশিং ট্রলার ডুবির ঘটনা ঘটে। সে ঘটনায় এফবি মায়ের দোয়া ফিশিং ট্রলারে থাকা ২০ জেলের মধ্যে ১৫ জেলেকে নানা ভাবে উদ্ধার করা সম্ভব হলে ও এখনও পর্যন্ত ফিরে আসেনি বাঁশখালীর সরল ইউনিয়নের কাহারঘোনা গ্রামের একই পাড়ার ৪ জন সহ ৫ জেলে। জেলেদের খুঁজে না পাওয়া ও ফিরে না আসায় এলাকা জুড়ে ও জেলে পরিবার গুলোতে চলছে শোকের মাতম।
সোমবার (২৫ আগষ্ট) সন্ধ্যা পর্যন্ত ফিরে না আসা জেলেরা হলেন সরল ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের কাহারঘোনা গ্রামের মৃত রহমান আলীর পুত্র কামাল উদ্দিন,ফোরুখ আহমদের পুত্র রিয়াজ উদ্দিন, জাকের আহমদের পুত্র মোহাম্মদ রাইহান, মৃত ছৈয়দুল আলমের পুত্র সাহাব উদ্দিন এবং শীলকুপের মনকিচর এলাকার এজাহারের পুত্র আবু তাহের। এদের অধিকাংশ জেলের বয়স ২০ থেকে ৩০/৩৫ এর মধ্যে বলে জানা যায়।
ফিশিং বোট থেকে উদ্ধার হওয়া মোহাম্মদ মোরশেদ বলেন, বাদশার মাঝির নেতৃত্বে ছিলাম আমরা ২০ জন জেলে,সাগরের টেউয়ের কারণে বোটটি কাথ হয়ে যাওয়াতে ডুবে যাওয়ার সময় আমরা বয়া সহ নানা কিছু ধরে বাঁচার চেষ্টা করেছি। পরে টেইয়ের তোড়ে সবাই বিছিন্ন হয়ে যাই। এরপর বেহঁশ হয়ে পড়ি, উদ্ধার হওয়ার পর চিকিৎসা হয় হাসপাতালে নিজের হুশ আসে বলে সে জানায়।
স্থানীয় ও নিখৈাঁজ জেলে পরিবার সুত্রে জানা যায়,বাঁশখালীর চাম্বল বাংলা বাজার এলাকার জমির কোম্পানীর মালিকাধীন এফবি মায়ের দোয়া ফিশিং ট্রলার নিয়ে ১৫ আগষ্ট মাছ ধরতে বঙ্গোপসাগরে গেলে ১৭ আগস্ট ভোররাতে বঙ্গোপসাগরের পটুয়াখালীর কুয়াকাটা এলাকার ফিশিং ট্রলার ডুবির ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনার পর ২০ আগস্ট প্রথমে একটি মাছ ধরার ডিঙ্গি ট্রলার ভাসমান অবস্থায় ১৩ জন জেলেকে উদ্ধার করে। পরে অপর একটি ট্রলার থেকে আরও একজন এবং একই দিন সকালে পায়রা বন্দরের ২০ কিলোমিটার গভীর সমুদ্র থেকে এফবি সাজেদা নামের আরেকটি ট্রলার থেকে আরও একজন জেলেকে উদ্ধার করা হয়।
এছাড়া ২৩ আগস্ট শনিবার সকালে কুয়াকাটা সূর্যোদয় পয়েন্টে গঙ্গাবতী এলাকা থেকে নিখোঁজ এক অজ্ঞাত (৩৫) জেলের লাশ উদ্ধার করা হয়। উদ্ধার করা লাশটি গায়ের চাদর মোড়ানো ও ক্ষতবিক্ষত হওয়ায় তার পরিচয় সনাক্ত করতে পারেনি এখন ও স্বজনেরা।
এদিকে নিখোঁজ জেলেরা ফিরে না আসার তাদের পরিবার ও একই সাথে ৪জন নিখোঁজ থাকা সরল ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের কাহারঘোনা গ্রামে চলছে শোকের মাতন। নিখোঁজ ৪ জেলের মধ্যে ৩ জনের স্ত্রী সন্তান রয়েছে বলে জানান কাহারঘোনা সংস্কার পরিষদের কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী। সে আরো জানায় অধিকাংশ জেলের পরিবারের জীর্ণদশা ও দিনে এনে দিনে খায় এ অবস্থা। তাদের সহযোগিতা করার জন্য আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি ইতিমধ্যে প্রায় ১ লক্ষ টাকা মত সংগ্রহ হয়েছে। তা আমরা নিখোঁজ জেলে পরিবার গুলোকে বন্টন করব।
গত রবিবার বিকালে বাঁশখালী উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও দক্ষিণ জেলা জামায়াত নেতা অধ্যক্ষ মুহাম্মদ জহিরুল ইসলাম এবং গন্ডামারা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও দক্ষিণ জেলা বিএনপি নেতা মো: লেয়াকত আলী নিখোঁজ জেলে পরিবারের সদস্যদের দেখতে যান এবং তাদের আর্থিক সহযোগিতা করেন বলে বিশ্বস্ত সুত্রে জানা যায়।