হৃদয় হাসান, কুমিল্লা : কুমিল্লার চান্দিনায় বাসার ছাদে প্রেমিক যুগলকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখে ফেলায় সোহেল মিয়া (৩৫) নামে এক দারোয়ানকে চারতলার ছাদ থেকে ফেলে হত্যার অভিযোগ উঠেছে।
সোমবার (১৮ আগস্ট) সকালে রাজধানীর জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন কেন্দ্র (পঙ্গু হাসপাতাল) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। এর আগে শনিবার (১৬ আগস্ট) রাত ৯টার দিকে চান্দিনা উপজেলা সদরের পল্লী বিদ্যুৎ রোডের একটি বাসায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত সোহেল দেবীদ্বার উপজেলার সুলতানপুর গ্রামের ইমতিয়াজ মিয়ার ছেলে। তিনি চান্দিনা পল্লী বিদ্যুৎ রোডের ইসলাম ট্রেডার্স নামের প্রতিষ্ঠানে দারোয়ান হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
ঘটনার বিবরণ
স্থানীয় সূত্র জানায়, ইসলাম ট্রেডার্স মালিক শিহাব মিয়ার বাসার নিচতলায় ভাড়া থাকেন মাকসুদা আক্তার খুকি নামের এক নারী, যিনি স্থানীয় একটি হাসপাতালে সেবিকা হিসেবে চাকরি করেন। তার ভাগনে আহাদ মিয়া (১৭) কোরপাই সাদাত জুট মিলে শ্রমিক হিসেবে কাজ করে। কাজের সুবাদে একই মিলের শ্রমিক ফেরদৌসী আক্তার (২০)-এর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে আহাদের।
শনিবার রাতে খালা বাসায় না থাকায় আহাদ তার প্রেমিকাকে নিয়ে বাসার ছাদে যায়। সেখানে ঘনিষ্ঠ অবস্থায় তাদের দেখে ফেলেন দারোয়ান সোহেল। তিনি মোবাইলে ভিডিও ধারণ করতে গেলে ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে আহাদ ও ফেরদৌসী তাকে ছাদ থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয় বলে অভিযোগ। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে চান্দিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে সেখানে তার মৃত্যু হয়।
নিহতের নিকটাত্মীয় আনিছ বলেন, “আপত্তিকর ভিডিও ধারণ করায় ক্ষিপ্ত হয়ে প্রেমিক যুগল সোহেলকে ছাদ থেকে ফেলে দেয়।”
বাসার মালিক শিহাব বলেন, “আমি ওই প্রেমিক যুগলকে চিনতাম না। খবর পেয়ে ঢাকায় থেকে ছুটে এসে দেখি পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করছে।”
মাকসুদা আক্তার খুকি বলেন, “আমি হাসপাতালে যাওয়ার সময় বাসায় তালা দিয়ে যাই। ঘটনার পর বাসায় এসে দেখি পুলিশসহ অনেক মানুষ জড়ো হয়েছে, তবে আমার ভাগনা ও তার প্রেমিকাকে পাইনি।”
চান্দিনা থানার ওসি জাবেদ উল ইসলাম জানান, “ঘটনার পর আমরা তাৎক্ষণিক পুলিশ পাঠাই। সোহেল চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যাওয়ার পর নিহতের পরিবার জানিয়েছে তারা মামলা করবে না।”