নোয়াখালী প্রতিনিধি: নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলায় ছাত্রদলের আহবায়কের পদ পাওয়ার পর সরকারি খাস জায়গার গাছ কেটে দোকানঘর নির্মাণে বেপরোয়া হয়ে ওঠার অভিযোগ ওঠেছে রিয়াজ মাহমুদ নামের এক ছাত্রদল নেতার বিরুদ্ধে।
সরেজমিন জেলার হাতিয়া উপজেলার চরইশ্বর ইউনিয়ন কাজীর বাজারে গেলে স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করে বলেন, হাতিয়া উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব রিয়াজ মাহমুদ কাজীর বাজারে সরকারি জায়গার গাছ কেটে সেখানে দোকানঘর নির্মাণের কাজ শুরু করেন। ওই সময় প্রশাসনের কয়েক ধাপের অভিযান ও জরিমানায় সাময়িক সময়ের জন্য কাজ বন্ধ হয়। তাঁর এ দখলবাজির বিরুদ্ধে চরইশ^র ইউনিয়ন তাঁতী দলের সভাপতি ও স্থানীয়রা অভিযোগ তোলেন। যার ভিত্তিতে গত ১১ জুলাই বিভিন্ন জাতীয় ও স্থানীয় দৈনিকে রিয়াজ মাহমুদের দখলবাজির বিরুদ্ধে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, গত ১২ জুলাই চরইশ^র ইউনিয়ন তাঁতী দলের সভাপতিকে দল থেকে অব্যাহতি দেয় সংগঠনটি। এরপরই গত ১২ আগস্ট খাস জায়গা দখলের পুরস্কার হিসেবে মো. রিয়াজ উদ্দীন (রিয়াজ মাহমুদ) কে উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব থেকে পদোন্নতি দিয়ে করা হয় উপজেলা ছাত্রদলের আহবায়ক। রিয়াজ মাহমুদ নতুন পদ পেয়ে আরো বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। তিনি প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে পুনরায় শনিবার (১৬ আগস্ট) সকাল থেকে শুরু করেন খাস জায়গায় বন্ধ থাকা দোকানঘরের নির্মাণ কাজ।
স্থানীয়রা জানায়, রিয়াজ মাহমুদ উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব থাকাকালে গত ৪ জুলাই তাঁর নেতৃত্বে একদল লোক রাতের আঁধারে এই খাস জায়গার দেড় লাখ টাকা মূল্যের অন্তত ৩০টা কাঠ গাছ কেটে ফেলে। পরে তারা ওই জায়গায় দোকানঘর নির্মানের কাজ শুরু করেন। প্রশাসন বিভিন্ন সময় বাধা দিলে তারা আবারো কাজ শুরু করেন। পরে তাদের টিমের খবির বেপারি নামের এক ব্যক্তিকে ঘটনাস্থলে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করে ভ্রাম্যমান আদালত এবং ৯ জুলাই বিকেলে রিয়াজ মাহমুদ পুনরায় দোকানঘরের কাজ শুরু করলে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ঘটনাস্থলে গিয়ে উচ্ছেদ অভিযান করে দোকানঘর ভেঙে দেয়।
কাজীর বাজারের একাধিক ব্যবসায়ী জানান, আশপাশের শতশত ব্যবসায়ী ও জেলেদের সমন্বয়ে বাজারে মাছ ব্যবসার পুরোনো কেন্দ্র থাকার পরও খাস জায়গার গাছ কেটে তারা অপেশাদারি ২-৩জন ব্যক্তিকে ভাড়া করে এনে ডাক বাক্স বসায়। রিয়াজ মাহমুদের নেতৃত্বাধীন রিপন চন্দ্র দাস, আকতার হোসেন কিরন, শাহীন, খবির বেপারী, কামরান ও রহমান এ অনিয়ম-বিশৃঙ্খলা চালিয়ে আসছে।
অভিযোগের বিষয়টি অস্বীকার করে হাতিয়া উপজেলা ছাত্রদলের আহবায়ক রিয়াজ মাহমুদ বলেন, এই বিষয়ে আমি কিছু জানি না। আগে এরকম একটা অভিযোগ-ষড়যন্ত্র হয়েছে। এটা আমার দল থেকে যাচাই-বাচাই হয়েছে, পরে এটা সমাধানও হয়েছে। এখন আমি নতুন করে কমিটি পাওয়ার পর পুরনো ষড়যন্ত্রের পুনরাবৃত্তি হচ্ছে। এবিষয়ে আপনারা উপজেলা প্রশাসনের বক্তব্য নিতে পারেন।
হাতিয়া নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. আলা উদ্দিন বলেন, ওই জায়গায় মাছ বাজার করতে দেওয়া হবে না, এই মর্মে দুইবার অভিযান চালানো হয়েছে। তবে জায়গাটি সরকারি এটা আগে আমার জানা ছিলনা। এখন জায়গাটি সরকারি নাকি ব্যক্তিগত তা বের করার জন্য আমার সার্ভেয়ার এবং তহসিলদারকে নির্দেশ দিয়েছি। তারা হয়তো আগামী দুই-একদিনের মধ্যে আমাতে জানাবে। সেই ক্ষেত্রে জায়গাটি সরকারি হলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।