শাহাজাদা এমরান, কুমিল্লা: কুমিল্লার তিতাস উপজেলার সাহাবৃদ্ধি গ্রামের হানিফ ভূইয়ার ছেলে ট্রাক্টরচালক নজরুল ইসলামকে (৩৫) কুপিয়ে হত্যার পর হাত-পা আলাদা করে চারটি বস্তায় ভরে খালে ফেলে দেয় ঘাতকেরা। এ ঘটনায় আটক হওয়া হোসেন ও তাঁর স্ত্রী স্মৃতি আক্তার দম্পতি হত্যার দায় স্বীকার করেছে। তবে নিহতের পরিবারের দাবি—এটি পরকীয়ার কারণে নয়, বরং পূর্ব শত্রুতার জেরেই এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে।
নজরুলের মা আয়শা বেগম অভিযোগ করে বলেন, স্থানীয় দুই হোসেন—শশুর ও জামাই—মিলে পরিকল্পিতভাবে তাঁর ছেলেকে হত্যা করেছে। কয়েক বছর আগে গ্রামের একটি ঘটনায় শালিসে নজরুলের সক্রিয় ভূমিকার কারণে হোসেন মিয়া ক্ষিপ্ত হয়ে প্রতিশোধ নিতে চেয়েছিল। সেই শত্রুতার জেরেই এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে দাবি করেন তিনি।
নিহতের পিতা হানিফ ভূইয়া জানান, হত্যাকাণ্ডের পর স্মৃতির বাবা হোসেন ও মা লাকী আক্তার নাতি-নাতনিকে নিয়ে পালিয়ে গেছে। তিনি বলেন, “আমার ছেলের বিরুদ্ধে যে পরকীয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে, তা মিথ্যা। প্রকৃত খুনিদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।”
নজরুলের স্ত্রী বৃষ্টি আক্তারও একই অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, “আমার স্বামীর নামে যে পরকীয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা।”
স্থানীয় সমাজসেবক মোস্তাক আহমেদ ভূইয়া বলেন, হত্যাকাণ্ডটি পরিকল্পিতভাবে ঘটানো হয়েছে এবং একাধিক ব্যক্তি এর সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে। হত্যায় ব্যবহৃত অস্ত্র নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি।
তিতাস থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শহীদ উল্যাহ জানান, নিখোঁজ জিডির ভিত্তিতে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় হোসেন ও তার স্ত্রী স্মৃতিকে আটক করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা নজরুলকে বাড়ি ডেকে নিয়ে কুড়াল দিয়ে হত্যার কথা স্বীকার করে। তাদের দেখানো মতে চার বস্তায় রাখা হাত-পা উদ্ধার করা হয়েছে। আদালতের মাধ্যমে দম্পতিকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে এবং তাদের রিমান্ড চাওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ৬ আগস্ট রাতে নজরুলকে ফোনে ডেকে নেয় স্মৃতি আক্তার। এরপর থেকে তিনি নিখোঁজ ছিলেন।