মধ্যপ্রাচ্যের খাবারের জগতে খেজুরের বিশেষ স্থান আছে। আর তামর মাহশি হলো সেই ঐতিহ্যের অনন্য প্রতীক। ইরাকের এই ঐতিহ্যবাহী ডেজার্টটি খেজুরের মধ্যে ভরা মিষ্টি উপাদান দিয়ে তৈরি হয় এবং এটি শুধুই মিষ্টি নয়; বরং পুষ্টিকরও।
তামর মাহশি বানাতে প্রথমে খেজুরের বীজ বা পিট আলাদা করা হয়। এরপর খেজুরের মধ্যে ভর্তি করা হয় বাদাম, পেস্তা, আখরোট বা ক্যান্ডি ফ্রুট। কখনো কখনো ভেতরে মিষ্টি ক্রিমও দেওয়া হয়। শেষ পর্যায়ে সামান্য দারচিনি বা এলাচ দিয়ে এর স্বাদ আরও সমৃদ্ধ করা হয়।
ইরাকের পরিবারগুলো বিশেষ করে রমজান মাসে তামর মাহশি প্রস্তুত করে। দিনের রোজা ভাঙার সময় এটি একটি শক্তিশালী এবং পুষ্টিকর স্ন্যাক হিসেবে পরিবেশন করা হয়। খেজুরের প্রাকৃতিক মিষ্টি এবং ভেতরের ক্রিম বা বাদামের সমন্বয় এই ডেজার্ট স্বাদে ভরা, যা শরীর-মন দুটোই তৃপ্তিদায়ক খাবার হিসেবে গড়ে তোলে।
তামর মাহশির জনপ্রিয়তা কেবল ইরাকেই সীমাবদ্ধ নয়। মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য অঞ্চলেও এটি বিশেষ অনুষ্ঠান ও উৎসবে পরিবেশিত হয়। অনেকে মনে করেন, খেজুরের ভেতরে মিষ্টি ভর্তি করার রীতিটি প্রাচীন পারস্য রান্নার ঐতিহ্য থেকে এসেছে।
দেশটির প্রতিটি উৎসব ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানে আনন্দ ও সম্প্রীতির বার্তা বহন করে এই তামর মাহশি।
এ ছাড়া ইরাকে প্রচলিত কিছু জনপ্রিয় ডেজার্টের মধ্যে রয়েছে:
মুহালেবি: দুধ, চিনি ও আঠা বা কর্নস্টার্চ দিয়ে তৈরি এই ক্রিমি আরবিয়ান পুডিংটি গরম অবস্থায় ছোট মোল্ডে ঢেলে ঠান্ডা করে পরিবেশন করা হয়। এতে কখনো কখনো পেস্তা, বাদাম বা নারকেলও যোগ করা হয়।
জেরদে: সাফরন দিয়ে রঙিন করা রাইস পুডিং। এটি ইরান, তুরস্ক ও ইরাকে বিশেষ অনুষ্ঠান ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানে পরিবেশিত হয়।
কেলিচা: ঈদ বা বিবাহ উৎসবে বানানো ঐতিহ্যবাহী কুকি। এতে সাধারণত খেজুর বা আখরোটের ফিলিং থাকে এবং চায়ের সঙ্গে পরিবেশন করা হয়।
জলাবিয়া: পাতলা বাটারের কয়েল ভেজে মধু বা সিরাপে ডুবানো হয়। পার্সিয়ান উৎসের হলেও মধ্যপ্রাচ্য ও দক্ষিণ এশিয়ায় জনপ্রিয়।
দাহী: নাজাফের প্রসিদ্ধ সিরাপ-ভেজা কেক। ভ্যানিলা, দই ও লেবুর রস দিয়ে তৈরি এই ডেজার্টে কার্ডামম বা রোজওয়াটারের স্পর্শ মিষ্টির স্বাদকে বাড়িয়ে দেয়।