নোয়াখালী প্রতিনিধি: নোয়াখালীর সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সাম্প্রতিক আউটসোর্সিং দরপত্র প্রক্রিয়ায় মনগড়া ও পক্ষপাতমূলক শর্ত সংযোজনের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ অনুযায়ী, দরপত্রের শর্ত এমনভাবে সাজানো হয়েছে যাতে নির্দিষ্ট কিছু ঠিকাদার ছাড়া অন্যদের অংশগ্রহণ কার্যত অসম্ভব হয়ে পড়ে।
সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত ২৭ জুলাই ২০২৫ তারিখে জনবল (আউটসোর্সিং) নিয়োগের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়। শর্তাবলীতে বলা হয়েছে—গত অর্থবছরে ১ কোটি টাকার ব্যাংক স্টেটমেন্ট এবং নোটিশ জারির সময় অন্তত ১ কোটি টাকা ব্যাংকে স্থিতি থাকতে হবে। আগামী ১৭ আগস্ট দরপত্র সম্পন্ন হওয়ার কথা রয়েছে।
প্রতিযোগিতা সীমিত করার অভিযোগ
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক দরপত্র ক্রেতা জানান, শর্তগুলো ইচ্ছাকৃতভাবে কঠিন করে প্রতিযোগিতা সীমিত করা হয়েছে, যাতে পূর্বনির্ধারিত ঠিকাদার কাজ পায়। এতে দরপত্র প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, কার্যালয়ের একটি সিন্ডিকেট দরপত্র নিয়ন্ত্রণ করছে এবং পূর্বেও একই ঠিকাদারকে একাধিক অর্থবছরে কাজ পাইয়ে দিয়েছে।
বিতর্কিত শর্ত ও বিধিভঙ্গ
দরপত্র যাচাই করে দেখা যায়—
পিপিআর তফসিল ২ এর ৯০(ঝ) অনুযায়ী ৫০ লাখ টাকার বেশি দরপত্র সেন্ট্রাল প্রকিউরমেন্ট টেকনিক্যাল ইউনিটে প্রকাশ করতে হয়, কিন্তু এর কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
সিন্ডিকেটের প্রভাবের অভিযোগ
কিছু দরপত্র ক্রেতা দাবি করেন, সিভিল সার্জন কার্যালয়ের প্রধান সহকারী ফিরোজ আলমের পৃষ্ঠপোষকতায় একটি সিন্ডিকেট কাজ করছে। তাদের মতে, এই ধরনের অনিয়ম প্রশাসনিক স্বচ্ছতা ও সরকারি অর্থের সঠিক ব্যবহার ব্যাহত করছে। দ্রুত তদন্ত ও ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা।
কর্তৃপক্ষের প্রতিক্রিয়া
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সিভিল সার্জন ডা. মরিয়ম সিমি বলেন, “দরপত্রের বিষয়ে আমি বিশেষজ্ঞ নই, এখনই অভিযোগগুলো শুনলাম। যাচাই করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” শর্তগুলো পিপিআর অনুযায়ী দেওয়া হয়েছে কিনা—এ প্রশ্নে তিনি বলেন, “বিষয়টি জেনে তারপর জানাবো।” তবে সিন্ডিকেটের বিষয়ে তিনি অস্বীকার করে বলেন, “আগের সিন্ডিকেট বদলি হয়ে গেছে, এখন আর কোনো সিন্ডিকেট নেই।”
চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, “দরপত্র প্রক্রিয়ায় নিয়ম মেনে কাজ করার নির্দেশনা দেওয়া হবে। অনিয়ম হলে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”