ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের ব্যবসায়িক সম্পর্ক সব সময়ই রাজনীতির সঙ্গে সব সময় ওঠানামা করে। বাংলাদেশে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গত বছরের আগস্টে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হন এবং ভারতে আশ্রয় নেন। সেই ঘটনার পর থেকেই দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক অস্বস্তি তৈরি হয়।
চলমান রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক টানাপোড়েনের মধ্যেও বাংলাদেশের শাড়ি ব্যবসায়ীরা কলকাতার সায়েন্স সিটি ময়দানে শুরু হওয়া ইন্ডিয়া ইন্টারন্যাশনাল গ্র্যান্ড ট্রেড ফেয়ার-২০২৫ (আইআইজিটিএফ)—এ অংশ নিচ্ছেন। বড় এই বাণিজ্য মেলায় সক্রিয়ভাবে অংশ নেওয়ার পাশাপাশি বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা দিল্লি, মুম্বাই ও বেঙ্গালুরুর মতো বড় শহরগুলোতেও শাড়ি বিক্রি করছেন।
তবে এবারের মেলায় অনেক বাংলাদেশি ব্যবসায়ী এখনো ঢাকাই জামদানি, মসলিন ও টাঙ্গাইল শাড়ি বিক্রি করছেন। ভারতীয় ক্রেতাদের কাছে এই শাড়িগুলো সৌন্দর্য ও নৈপুণ্যের জন্য জনপ্রিয়। তাই ক্রেতারা আগ্রহের সঙ্গে প্রচুর কিনছেন।
আইআইজিটিএফে অংশ নেওয়া আয়াত জামদানির রোহান বলেন, ‘আমরা ৪০ বছর ধরে ব্যবসা করছি। ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে আমাদের নিজস্ব উৎপাদনকেন্দ্র আছে। দাদা–নানার সময়ে ব্যবসা আরও ভালো ছিল, কারণ তখন অনলাইনে কেনাকাটার সুযোগ ছিল না।’
রোহান আরও বলেন, ‘ডিজিটাল ব্যবস্থার কারণে বিক্রি অনেকটা কমে গেছে। আসলে করোনাভাইরাস মহামারির আগেই ব্যবসা ভালো ছিল। এখন মূলত আগের ক্রেতারাই আবার কিনতে আসেন।’
আইআইজিটিএফে অংশ নেওয়া আরেক বাংলাদেশি শাড়ি ব্যবসায়ী মো. নাসিরউদ্দিন অপু বলেন, ‘বড় কোনো পরিবর্তন হয়নি। ভারতের ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশে যান, আমরাও এখানে আসি। এভাবেই চলা উচিত।’
অপু যোগ করেন, ‘১০০ জনের মধ্যে হয়তো দুজন দ্বন্দ্বের কথা বলে, তারা বলে আমাদের কাছ থেকে কিনবে না। কিন্তু এর বাইরে সবকিছু ঠিক আছে। আমরা টানা ৩০ বছর ধরে এই মেলায় আসছি। শুধু ব্যবসা আগে ভালো ছিল। দুর্গাপূজা সামনে হলেও প্রত্যাশা অনুযায়ী সাড়া মেলেনি।’
জামদানি শাড়ির ব্যবসায়ী মো. নাজমুল খান বলেন, শেখ হাসিনা বাংলাদেশ ছাড়ার আগে ব্যবসা দেশে ভালোই ছিল। তিনি আরও বলেন, ‘আমি ভারতীয় সংস্কৃতি ভালোবাসি, কিন্তু সমস্যা হলো আমি এখানে থাকতে পারি না।’
সূত্র: দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস