নিনা আফরিন ,পটুয়াখালী : পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলায় দোকানঘরে আগুন লাগানোর অভিযোগে অভি (১৪) ও শান্ত (১৫) নামে দুই কিশোরকে খুটির সঙ্গে বেঁধে অমানবিক নির্যাতন করা হয়েছে। এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে শুরু হয় তোলপাড়।
স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শী সুত্রে জানা গেছে, উপজেলার কালাইয়া ইউনিয়নের বগী খালের তুলাতলা এলাকায় গত ৯আগষ্ট শনিবার রাত সারে ১২টার একটি মুদি দোকানের বৈদ্যতিক মিটার বাস্ট হয়ে আগুন লাগে। এরপরেই দোকানদার মাহবুব ও তার লোকজন দোকানের অদুরের সড়ক থেকে কিশোর অভি ও শান্তকে আগুন লাগানোর সন্দেহে আটক করে এবং তাদের খুটির সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন চালায়। নির্যাতনের ভিডিও মোবাইলে ধারণও করে রাখেন নির্যাতনকারীরা।
ভিডিওতে দেখা যায়, কয়েকজন মিলে দুই কিশোরকে দোকানের খুঁটির সঙ্গে পেছন দিকে হাত বাঁধা অবস্থায় লাঠিপেটা করছে। ভিডিওতে অন্যদের ‘বল, কে আগুন দিতে পাঠাইছে, কত টাকা দিছে? পাঁচ হাজার টাহা দিছে? আগুন লাগলে এইহানে ঘরগুলা থাকতে? কেডা পাঠাইছে আবার ক? কয় টাহা লইছোছ? পাঁচ হাজার? আবার ক? কেরাসিন লইয়া আইছোস। এসব কথা জিজ্ঞাসা করতে শোনা যায়।
নির্যাতনের একপর্যায়ে কালাইয়া ইউনিয়ন সেচ্ছাসেবক দলের সাবেক আহবায়ক রিজভি নামে এক ব্যক্তির নাম স্বীকারোক্তি দেয় দুই কিশোর। পরে খবর দিলে বাউফল থানার পুলিশের এসআই মো. ইব্রাহিম মোল্লা ঘটনাস্থালে গিয়ে ওই দুই কিশোরকে থানায় নিয়ে যান।
দোকানি মাহবুব জানান, তিনি দোকানের পেছনের দিকটায় থাকেন। বিদ্যুতের মিটার বাষ্টের শব্দ শুনে উঠে দেখেন মিটারে আগুন ধরে গেছে। মিটারে কাপড় পেঁচিয়ে কেরোসিন দিয়ে আগুন লাগানো হয়। কেরোসিনের বোতল পড়ে থাকতে দেখি। এর কিছুক্ষণ পরে ওই দুই কিশোর সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয় লোকজন তাদের আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা আগুন লাগানোর কথা স্বীকার করেন।
একটি সুত্রে জানা যায়, স্থানীয় ভাবে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ থাকার কারণে একটি পক্ষ অপর পক্ষকে ফাঁসানের জন্য কিশোরদের নির্যাতন করে স্বিকারোক্তি নেওয়া হয়।
পরে বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আকতারুজ্জামান সরকার বলেন, আগুন লাগানোর সত্যতা পাওয়া যায়নি। কিশোরদের তাদের আত্মীয়ের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।