শিরোনাম
◈ ১৬ই জুলাই রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা ◈ রহস্যময় নাকামোতো এখন বিশ্বের ১২তম ধনী, বিটকয়েন সম্পদ ১২৮ বিলিয়ন ডলার ◈ শাহবাগ মোড় অবরোধ করলো স্বেচ্ছাসেবক দল ◈ বিএসবির খায়রুল বাশারকে আদালত প্রাঙ্গণে ডিম নিক্ষেপ, কিল-ঘুষি ◈ গণপ্রতিরোধের মুখে শেখ হাসিনা পালাতে বাধ্য হয়েছিলেন: ভোলায় নাহিদ ইসলাম  ◈ গৌরনদীতে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার বদলি আদেশ ঘিরে অবরোধ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ৩ ◈ ফ্যাসিস্টদের জায়গা এই বাংলার মাটিতে হবেনা: ঢাকা রেঞ্জ ডিআইজি ◈ ফরিদপুরে চায়না দুয়ারির ফাঁদে অস্তিত্ব-সংকটে দেশীয় প্রজাতির মাছ ◈ বিনা বিচারে ৩০ বছর কারাভোগের পর মুক্তি পেলেন কানু মিয়া ◈ সেনাপ্রধানের নির্দেশে সিএমএইচ-এ নিয়ে যাওয়া হলো গরম পানিতে ঝলসানো দরিদ্র নারীকে

প্রকাশিত : ১৪ জুলাই, ২০২৫, ০৮:৪৩ রাত
আপডেট : ১৫ জুলাই, ২০২৫, ০৮:০০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

সাম্প্রতিক বন্যায় গোমতীর চরে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি, কৃষকের মাথায় হাত

শাহাজাদা এমরান,কুমিল্লা: চাষ শেষ। ফসল প্রায় উঠিয়েই ফেলেছেন। আর দুই দিন পরই বিক্রির কথা ছিল। এর মধ্যে হঠাৎ টানা বৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢলে গোমতী নদীর পানি বেড়ে যায়। মুহূর্তেই তলিয়ে যায় চরাঞ্চলের ফসলের মাঠ। চোখের সামনে পানিতে ডুবে গেল মাসের পর মাসের পরিশ্রম।

এমন বাস্তবতার মুখোমুখি হয়েছেন কুমিল্লার গোমতী নদী ঘেঁষা অন্তত ছয় উপজেলার শত শত কৃষক। সদর দক্ষিণ, বুড়িচং, ব্রাহ্মণপাড়া, দেবিদ্বার, মুরাদনগর ও তিতাস উপজেলার চরে বন্যায় তলিয়ে গেছে হাজার হাজার হেক্টর জমির করলা, মরিচ, মুলা, শসা, ধনে পাতা, মিষ্টি কুমড়া, বরবটি ও আরও নানা ধরনের সবজি।

আদর্শ সদর উপজেলার কৃষক গোমতি চরের কৃষক সাগর সর্দার বলেন, দুই একর জমিতে করলা আর শাকসবজির চাষ করেছিলেন। তিনি বলেন, ‘আর মাত্র দুই দিন পর সবজি বাজারে নিতাম। কিন্তু হঠাৎ পানি উঠে সব তলিয়ে গেল। আমি ব্যাংক ঋণ আর কিস্তিতে কৃষিকাজ করছি। এবার প্রায় ১২ লাখ টাকার ক্ষতি হলো। শুধু আমি না, এই চরের আরও অন্তত ২০ জন কৃষকের একই অবস্থা।’

তিনি আরও বলেন, ‘করলা যেটুকু মাচায় ছিল, সেগুলো নৌকায় গিয়ে তুলছি। কিন্তু অন্য সব ফসল পানির নিচে। ঋণ কেমনে শোধ করব বুঝতে পারছি না।’ কাচিয়াতলি এলাকার কৃষক শাহাদাত হোসেন ও মিন্টু মিয়া বলেন, ‘গত বছরও বন্যা হয়েছিল, কিন্তু এবার ফলন ভালো ছিল বলে ক্ষতিটা অনেক বেশি। মরিচ, ধনে পাতা, মুলা সব ছয় ফুট পানির নিচে। মাচার কিছু করলা ছাড়া কিছুই আর রক্ষা হয়নি।’

জেলা কৃষকেরা জানান, গোমতীর চরগুলো বছরের বেশির ভাগ সময়ই চাষযোগ্য থাকে। বছরে দুই থেকে তিনবার ফসল তুলতে পারেন তাঁরা। ফলে এসব এলাকায় কৃষিই জীবিকার মূল ভরসা। তবে টানা দুই বছরের বন্যায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন অনেক কৃষক পরিবার।জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আইউব মাহমুদ বলেন, ‘গোমতীর চর এলাকায় প্রায় ১১ হাজার হেক্টর জমির ফসল আংশিক বা সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পানি নামার পর প্রকৃত ক্ষতির পরিমাণ জানা যাবে। আমরা তথ্য সংগ্রহ করছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘কৃষকেরা যাতে ঘুরে দাঁড়াতে পারেন, সে জন্য নানা পরামর্শ ও উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। যদি সরকারি প্রণোদনার বরাদ্দ আসে, তাহলে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা সেটি পাবেন।’ এদিকে ক্ষতির অঙ্কের চেয়েও বেশি আঘাত করেছে অনিশ্চয়তা। সামনে কিস্তির চাপ, বাজারের দেনা আর সংসারের খরচ। সেই ভেবেই এখন কপালে হাত চরাঞ্চলের হাজারো কৃষক।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়