ভারতীয় ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেস-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নাকামোতো ২০০৮ সালে বিটকয়েনের শ্বেতপত্র প্রকাশ করেন এবং ২০০৯ সালে প্রথম বিটকয়েন ব্লক মাইন করেন। কিন্তু ২০১১ সালের পর তিনি ইন্টারনেট থেকে হঠাৎ উধাও হয়ে যান। তাঁর পরিচয় আজও রহস্যে ঘেরা। কেউ জানে না তিনি একা একজন ব্যক্তি, নাকি একাধিক ব্যক্তির একটি দল।
বিটকয়েনের স্রষ্টা হিসেবে পরিচিত রহস্যময় ব্যক্তি সাতোশি নাকামোতো এখন বিশ্বের ১২ তম ধনী। তাঁর মালিকানাধীন বিটকয়েনের মূল্য বর্তমানে প্রায় ১২৮.৯২ বিলিয়ন ডলার।
ক্রিপটো এক্সচেঞ্জ ‘বিটস্ট্যাম্প’-এর তথ্য অনুযায়ী, নাকামোতোর কাছে প্রায় ১০ লাখ ৯৬ হাজার বিটকয়েন রয়েছে। তাঁর মোট সম্পদ এখন প্রযুক্তি উদ্যোক্তা মাইকেল ডেলের থেকেও বেশি।
নাকামোতোর পরিচয় নিয়ে বহু নাম সামনে এসেছে। কেউ কেউ তাঁকে সফটওয়্যার ডেভেলপার হ্যাল ফিনি বলে সন্দেহ করেছেন। আবার কেউ বলেছেন, তিনি কম্পিউটার বিজ্ঞানী নিক স্যাবো কিংবা ইলন মাস্ক নিজেই। সাবেক টুইটার সিইও জ্যাক ডরসির নামও এ ক্ষেত্রে উচ্চারিত হয়েছে। তবে সবাই তাদের সংশ্লিষ্টতা অস্বীকার করেছেন।
এদিকে অস্ট্রেলীয় কম্পিউটার বিজ্ঞানী ক্রেইগ রাইট একমাত্র ব্যক্তি যিনি নিজেকে নাকামোতো দাবি করে আসছেন। কিন্তু ২০২৪ সালে যুক্তরাজ্যের আদালত তাঁকে মিথ্যাবাদী আখ্যা দেন এবং ‘আইনি সন্ত্রাসবাদ’-এর দায়ে অভিযুক্ত করে তাঁকে ১২ মাসের কারাদণ্ড দেন। যদিও পরে ক্রেইগের শাস্তি স্থগিত রাখা হয়েছে।
এই রহস্য উদ্ঘাটনের জন্য একাধিক অনুসন্ধান হয়েছে। এমনকি এই বিষয়ে ‘মানি ইলেকট্রিক: দ্য বিটকয়েন মিস্টেরি’ নামে একটি প্রামাণ্যচিত্রও নির্মাণ করেছে এইচবিও চ্যানেল। এই প্রামাণ্যচিত্রটিতে পরিচালক কলেন হোবাক পিটার কে. টড নামে এক ব্যক্তিকে সন্দেহ করলেও টড তা অস্বীকার করেছেন।
নিউইয়র্ক পোস্টের প্রতিবেদন অনুযায়ী, নাকামোতো একজন ৩৭ বছর বয়সী জাপানি ব্যক্তি হতে পারেন। যদিও ওই ব্যক্তির অনলাইন সক্রিয়তার সময়সূচি যুক্তরাজ্যের দিনের সময়ের সঙ্গে বেশি মিলে যায়। বিটকয়েন কোড বিশ্লেষণেও দেখা গেছে, তিনি ‘সিপ্লাস-প্লাস’ ভাষায় অত্যন্ত দক্ষ ছিলেন।
২০২৫ সালের মার্চে প্রকাশিত বেঞ্জামিন ওয়ালেসের ‘দ্য মিস্টেরিয়াস মিস্টার নাকামোতো’ বইয়ে বলা হয়েছে, ‘নাকামোতো এমন এক রহস্যময় সত্তা, যিনি আদৌ আছেন কি না, তা-ও অনিশ্চিত।’
তবে তাঁর নাম আজ বিশ্বের ধনীদের তালিকায়। আর ক্রিপটো মুদ্রার ইতিহাসে তাঁর অবদান এক অমোঘ কিংবদন্তি। অনুবাদ: আজকের পত্রিকা