শিরোনাম
◈ ইসরায়েল ইরানে পরমাণু বোমা ফেললেই, পাকিস্তান পরমাণু হামলা চালাবে নেতানিয়াহুর দেশে, এবার কি তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ? ◈ দেখা হলে সাকিবকে  জিজ্ঞাসা করবো কেন আমার বিরু‌দ্ধে ভুল তথ্য দি‌য়ে‌ছি‌লেন : তা‌মিম ইকবাল ◈ টাইমড আউট নি‌য়ে বাংলাদেশের উপর আর ক্ষোভ নেই ম্যাথুসের ◈ আগামী ২ অ‌ক্টোবর পাকিস্তানের বিরু‌দ্ধে  ম্যাচ দিয়ে বাংলা‌দে‌শের বিশ্বকাপ অভিযান শুরু  ◈ ইসরায়েলের দিকে আবারও ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ, বাজছে সতর্কতামূলক সাইরেন ◈ বাংলাদেশে রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধের সুযোগ সৃষ্টির জন্য আইন সংশোধনে ফলকার তুর্কের উদ্বেগ ◈ সাংবাদিক পরিচয়ে গেস্টহাউসে কক্ষে কক্ষে তল্লাশি চালানো সেই ব্যক্তি গ্রেপ্তার ◈ খুব দেরি হওয়ার আগেই’ ইরানের আলোচনায় ফেরা উচিত: ট্রাম্পের হুঁশিয়ারি ◈ ভুটান থে‌কে ফি‌রে জাতীয় দলের ক্যাম্পে যোগ দি‌লেন ঋতুপর্ণা, মারিয়া ও মনিকা ◈ সেনাপ্রধানের সঙ্গে জাতিসংঘের গুমবিষয়ক প্রতিনিধিদলের সাক্ষাৎ

প্রকাশিত : ১৬ জুন, ২০২৫, ০৩:৫৩ দুপুর
আপডেট : ১৬ জুন, ২০২৫, ১০:০০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

লক্ষ্মীপুরে আইনজীবী-কর্মচারী হাতাহাতির ঘটনায় দুই আইনজীবীর বিরুদ্ধে মামলা : আদালত বর্জন

জহিরুল ইসলাম শিবলু, লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি : লক্ষ্মীপুরের আদালতে একটি জামিনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে একজন বিচারকের আদালত বর্জন করেছেন আইনজীবীরা। এ সময় আইনজীবীদের সঙ্গে আদালতের কর্মচারীদের হাতাহাতি ও এজলাসে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। এজলাসের স্টেনোগ্রাফার আশরাফুজ্জামান আহত হন। এ ঘটনায় দুই আইনজীবীকে আসামি করে আদালতে মামলা করেছেন আহত স্টেনোগ্রাফার আশরাফুজ্জামান। সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের (সদর-আমলি আদালত) বিচারক আবু সুফিয়ান মোহাম্মদ নোমানের আদালতে এই মামলা দায়ের করা হয়। পরে আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে আইনজীবী আশিকুর রহমান ও মিরাজ পলোয়ানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। রোববার বিকেলে এই মামলা দায়ের করা হয়। সোমবার সকালে আদালত পরিদর্শক মো. আবদুল জলিল মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এর আগে গতকাল আইনজীবী ও কর্মচারীর হাতাহাতির ঘটনায় আদালত প্রাঙ্গণে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।

এদিকে জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট মো. রফিক উল্যাহ আইনজীবীদের বিরুদ্ধে মামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, ‘একজন আইনজীবীর বাসার গেট চুরির মামলায় আসামিদের জামিন দেন বিচারক। আসামিদের রিমান্ডের আবেদন ও জামিনের বিরোধিতা করলেও তা আমলে নেননি তিনি। ফলে ন্যায়বিচার পাননি আইনজীবীরা। বিষয়টি জেলা জজসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি এবং ওই বিচারকের অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত আদালত বর্জনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। রোববার আদালতের কার্যক্রম শুরু হলে শুধু এজলাসে গিয়ে ওই আদালত বর্জনের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিই। কোনো হট্টগোল বা হামলা হয়নি।’

উল্লেখ্য, রায়পুর প্রিন্সিপাল কাজী ফারুকী স্কুল এন্ড কলেজের ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক আহম্মেদ কাউসার উদ্দিন জামানের (৩৫) বিরুদ্ধে ৬ জুন সদর থানায় চুরির মামলা দায়ের করেন তারই প্রতিবেশী জেলা জজ আদালতের আইনজীবী আবু তৈয়ব। মামলায় আরও দুজনকে আসামি করা হয়। ওই মামলায় আসামি কাউসার ও রুবেল গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে ছিলেন। এরপর ১০ জুন সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৩ এর বিচারক এম সাইফুল ইসলাম তাদের জামিন মঞ্জুর করেন। এ নিয়ে তাৎক্ষণিক ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানায় আইনজীবী সমিতির নেতৃবৃন্দসহ আইনজীবীরা।

আদালত সূত্র জানায়, ৯ জুন আসামিদের জামিন প্রার্থনা করা হয়। এতে আসামিপক্ষ উল্লেখ করেন, মামলার বাদী আইনজীবী হওয়ায় আদালতে তাদের পক্ষে কোনো আইনজীবী জামিন শুনানিতে অংশ নিতে ইচ্ছুক নন। আসামিরা তাদের পক্ষে আইনজীবী না পেয়ে জামিন শুনানির জন্য লক্ষ্মীপুর লিগ্যাল এইড অফিসে আইনি সহায়তা চান। সেখান থেকে দুজন আইনজীবীকে শুনানি করতে বলা হলেও তারা হেনস্তার ভয়ে জামিন শুনানিতে অংশ নেননি। অন্যদিকে বাদীপক্ষের আইনজীবী আসামিদের বিরুদ্ধে জামিনের বিরোধিতা করেন। পরদিন ১০ জুন নথি প্রাপ্তি সাপেক্ষে জামিন শুনানির জন্য রাখা হয় এবং তদন্তকারী কর্মকর্তা পাঁচ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন।

বিষয়টি নিয়ে আদালতের পর্যালোচনায় উঠে আসে, ঈদুল আজহার ছুটির কারণে আদালতের স্বাভাবিক কার্যক্রম বন্ধ ছিল। ৬ জুন আসামিদের গ্রেপ্তারের পর থেকে চার দিন তারা জামিন শুনানির সুযোগ পাননি। বাদী একজন আইনজীবী হওয়ায় আসামিরা পক্ষে কোনো আইনজীবীও পাননি। ১৪ জুন পর্যন্ত আদালত বন্ধ থাকায় এবং মামলায় জামিন অযোগ্য কোনো গুরুতর অভিযোগ না থাকায় উভয় পক্ষের শুনানি শেষে দরখাস্ত নিষ্পত্তি করে আদালত। বিচারক চার দিনের হাজতবাস ও ঈদ বিবেচনায় কাউসার ও রুবেলকে ১০০ টাকার মুচলেকায় একজন গণ্যমান্য ব্যক্তির জিম্মায় জামিন দেন।

এ নিয়ে আইনজীবীদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়। রোববার (১৫ জুন) ঈদের ছুটি শেষে আদালতের কার্যক্রম শুরু হলে আইনজীবী সমিতি বিচারক এম সাইফুল ইসলামের আদালত বর্জনের সিদ্ধান্ত নেয়। সকালেই সাত-আটজন আইনজীবী বিচারকের কক্ষে ঢুকে বর্জনের ঘোষণা দেন। এ সময় হট্টগোল ও উত্তেজনার সৃষ্টি হলে বিচারক আদালত কর্মচারীদের দরজা বন্ধ করে দিতে বলেন। এতে আইনজীবী ও কর্মচারীদের মধ্যে হাতাহাতি হয়। এজলাসের স্টেনোগ্রাফার আশরাফুজ্জামান আহত হন এবং বিচারক বিচারকার্য শেষ না করেই এজলাস ত্যাগ করেন।
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়