রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ সংযোগ সড়ক টিটিপাড়ায় নির্মিত ছয় লেনের রেলওয়ে আন্ডারপাসটি আগামী সপ্তাহেই জনসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হচ্ছে। এই আন্ডারপাস চালু হলে দীর্ঘদিনের ভোগান্তির অবসান হবে এবং মতিঝিলের সঙ্গে মুগদা, মান্ডা, মানিক নগর ও সবুজবাগ এলাকার সংযোগ সড়কে ট্রেনের সিগনালে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকতে হবে না।
ভোগান্তির ইতি:
আন্ডারপাসটি না থাকায় টিটিপাড়া রেল ক্রসিংয়ে ট্রেন আসা-যাওয়ার কারণে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হতো। স্থানীয়দের অভিযোগ ছিল, মাত্র আধা কিলোমিটার পথ পেরোতেই কখনো কখনো এক ঘণ্টা পর্যন্ত সময় লেগে যেত।
যানজট এড়াতে অনেককে খিলগাঁও বা গোলাবাগ হয়ে দীর্ঘ পথ ঘুরে যাতায়াত করতে হতো।
আন্ডারপাসের বিশেষত্ব:
পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের আওতায় নির্মিত এই আন্ডারপাসটির দৈর্ঘ্য ৩৩৮ মিটার এবং চওড়া ৩১ মিটার।
এটি ছয় লেন বিশিষ্ট, যার মধ্যে:
চারটি লেন মোটরচালিত যানবাহনের জন্য (বাস, ট্রাক, মাইক্রোবাস, পিকআপ)।
দুটি আলাদা লেন রিক্সা, ভ্যান ও সাইকেলের মতো নন-মোটরচালিত বাহনের জন্য। পথচারীদের হাঁটার জন্য রয়েছে ফুটপাথ।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের মতে, পথচারী ও নন-মোটরচালিত ট্রাফিকের জন্য পৃথক লেনের সুবিধাসম্পন্ন এটি ঢাকা শহরের প্রথম রেলওয়ে আন্ডারপাস।
জলাবদ্ধতা নিরসনে আধুনিক ব্যবস্থা: আন্ডারপাসটি নির্মাণে ঢাকার জলাবদ্ধতার বিষয়টি বিশেষভাবে মাথায় রাখা হয়েছে। বৈজ্ঞানিক ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনার অংশ হিসেবে এখানে একটি অত্যাধুনিক পাম্প হাউস নির্মাণ করা হয়েছে। এতে চারটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন স্বয়ংক্রিয় পাম্প থাকবে, যা সংক্রিয়ভাবে পানি নিষ্কাশন করবে। প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, বিগত বর্ষা মৌসুমে কাজ চলাকালীনও এখানে এক দিনের জন্য পানি জমেনি।
নাগরিক স্বস্তি: প্রায় দুই বছর ধরে আন্ডারপাস নির্মাণ চলাকালে স্থানীয়দের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হলেও দ্রুতই এটি খুলে দেওয়ার খবরে তারা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন। নাগরিকরা আশা করছেন, আন্ডারপাস চালু হলে জ্যাম ছাড়াই খুব দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছানো সম্ভব হবে এবং সিগনালে আর দাঁড়াতে হবে না।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা দ্রুত সংযোগ সড়কগুলো মেরামত করার পাশাপাশি সরকারি এই স্থাপনা দেখভালে নাগরিকদের দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। চ্যানেল ওয়ান নিউজ