শিরোনাম
◈ উপজেলার ভোটে এমপি-মন্ত্রীদের হস্তক্ষেপ না করতে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছে: ওবায়দুল কাদের  ◈ শ্রম আইন লঙ্ঘন: ড. ইউনূসসহ ৪ জনের জামিন ২৩ মে পর্যন্ত বৃদ্ধি ◈ ময়মনসিংহে দুই বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ২, আহত ২৬ ◈ ফরিদপুরে বাস-পিকআপ মুখোমুখি সংঘর্ষ, নিহত ১২  ◈ ইরানের হামলার জবাব দেবে ইসরায়েল: সেনাপ্রধান ◈ সৌদিতে কোরবানি ঈদের সম্ভাব্য তারিখ ঘোষণা ◈ শ্রম আইন লঙ্ঘনের সাজাপ্রাপ্ত মামলায় স্থায়ী জামিন চাইবেন ড. ইউনূস ◈ ছুটি শেষে ঢাকায় ফিরছে কর্মজীবী মানুষ ◈ স্বাস্থ্যখাতে নতুন অশনি সংকেত অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স: স্বাস্থ্যমন্ত্রী  ◈ কৃষি খাতে ১০ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যে তিন  বছরে সাড়ে ৩৮ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ

প্রকাশিত : ০৫ মার্চ, ২০২৩, ০৫:৫১ বিকাল
আপডেট : ০৫ মার্চ, ২০২৩, ০৫:৫১ বিকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

মানুষের রোগ নির্ণয়ে আল্ট্রাসনোগ্রাফি সহায়ক শক্তি: ডা. আয়শা 

ডা. আয়শা আক্তার

শাহীন খন্দকার: রাজধানীর শ্যামলী ২৫০ শয্যার টিবি ও অ্যাজমা হাসপাতালের সহকারি পরিচালক ডা. আয়শা আক্তার বলেন, অতিউচ্চ ফ্রিকোয়েন্সি শব্দ তরঙ্গের নামই মূলত আল্ট্রাসনোগ্রাফি। তিনি বলেন, সঠিক রোগ নির্ণয়ের জন্য আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানে আল্ট্রাসনোগ্রাফি সহায়ক শক্তির ভূমিকায় কাজ করে ।এই যন্ত্রটির সাহায্যে শরীরের ভেতরের অঙ্গ প্রতঙ্গের ছবি দেখে রোগ নির্ণয় করা হয়, তবে শব্দ তরঙ্গ ব্যবহারে ঝুঁকির  সম্ভাবনা ও কম। 

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মায়ের গর্ভে শিশুর অবস্থান এবং শিশুর সুস্থতা দেখত জেনেটিক সমস্যাসহ অন্যন্যা কোন সমস্যা আছে কিনা আলট্রা স্নো গ্রাফিক এর মাধ্যমে দেখি। সেই সঙ্গে লিভার কিডনিসহ মানুষের দেহের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের কোন সমস্যা আছে কিনা দেখার জন্য আল্ট্রাসনোগ্রাম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। সেই সঙ্গে কিছু কিছু বায়োপসি করা যায় আল্ট্রাসনোগ্রামের মাধ্যমে আল্ট্রাসনোগ্রাম গাইডেড এফএনএসি আল্ট্রাসাউন্ড শব্দ টা সাধারণ মানুষ কানে শুনতে পায় না। 

 ২ থেকে ১৮ মেগাহার্জের মধ্যে আল্ট্রাসাউন্ড প্রর্বের (probe) ba transducer  মাধ্যমে শব্দ তরঙ্গ ভিতরে পাঠানো হয় প্রতিফলিত হয়ে আসার পরে মনিটর একটা ছবি তৈরি করে । আর এই ছবি দেখে আমরা রোগ নির্ণয় করে থাকি। USG guided FNAC থেরাপিউটিক এবং ইন্টারভেনশন মাধ্যমে রোগ নির্ণয় করা হয়। ট্রান্স ভ্যাজাইনাল আল্ট্রাসাউন্ড নারীর প্রজনন অঙ্গ দেখতে এই আল্ট্রাসাউন্ড উপকারী নারী ডিম্বাশয় ফেলোপিয়ান টিউব, জরায়ু দেখতে ব্যবহৃত হয়ে থাকে।

অপর প্রশ্নের জবাবে ডা. আয়শা বলেন, কারণ নারীর জরায়ুতে কোন ধরনের সমস্যা আছে কিনা বাড়তি বাচ্চা নিতে এবং কেন একজন নারী বন্ধ্যাত্ব হচ্ছে বুঝতে হলে আল্ট্রাসনোগ্রাম মারাত্মক সহায়কশক্তি  উপকারী যন্ত্র। আরো বলেন, জরায়ু ডিম্বাশয় অথবা অন্য কোনো কারণে রক্তপাত হচ্ছে কি না, শুধু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তো সব রোগের সঠিক রোগ জানা যায় না। তাই একজন মানুষের সাথে অবশ্যই জীবন বৃত্তান্ত তার শারীরিক পরীক্ষার এবং সাথে তার  ডায়াগনোস্টিক টেস্ট ইনভেস্টিগেশন সহায়ক ভূমিকা পালন করে।

টিবি হাসপাতালের এই সহকারি পরিচালক বলেন, হার্টের আল্ট্রাসনোগ্রাম যখন করা হয় তখন শব্দতরঙ্গ রক্ত ভেদ করে হার্টের আবরণীতে গিয়ে ফিরে আসে এবং মনিটরে একটি ছবির অবয়ব তৈরি করে। এই ফিরে আসা শব্দতরঙ্গ যে ছবি তৈরি করে, তা দেখেই সনোগ্রাফ স্পেশালিস্ট রোগ সম্পর্কে ধারণা করতে পারেন। সাধারণত সনোগ্রাফি যিনি করেন তিনিও একজন চিকিৎসক। তবে তিনি সনোগ্রাফিতে স্পেশালিস্ট। সনোগ্রাফি করে যথাযথ রোগ নির্ণয় করতে হলে অবশ্যই ডিগ্রিধারী সনোগ্রাফার দিয়ে করাতে হবে।

তিনি প্রাথমিকভাবে ছবি ও সনোগ্রাফের মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে প্রতিবেদন তৈরি করেন, যা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে রোগটি যথাযথভাবে নির্ণয় করে চিকিৎসায় সহায়তা করে। আল্ট্রাসনোগ্রাম করার সময় যে অংশটি সনোগ্রাফারের হাতে থাকে তা ট্রান্সডিউসার নামে পরিচিত। ত্বকে জেলির মতো এক ধরনের তরলও ব্যবহার করতে হয়।
 
ডা. আয়শা বলেন, স্নায়ুর অতি কাছে যখন ইনজেকশনের মাধ্যমে অ্যানেসথেসিয়া বা অবচেতনকারী প্রয়োগ করা হয় তখন গাইড হিসেবে অনেক সময় আল্ট্রাসনোগ্রাম ব্যবহার করতে হয়। তেমনি হৃদরোগ নির্ণয়ে আল্ট্রাসনোগ্রাম ব্যবহৃত হয়।বহুল প্রচলিত ইকোকার্ডিওগ্রাম আসলে সনোগ্রাম। কালার ডপলারের মাধ্যমে রক্ত প্রবাহ ও হার্টের টিস্যুর অবস্থা অত্যন্ত ভালোভাবে বোঝা সম্ভব। এর মাধ্যমে হার্টের ভাল্ভ কতখানি কর্মক্ষম আছে, কোনো অস্বাভাবিকতা আছে কি না, ভালভুলার রিগারজিটেশন আছে কি না, হার্ট ঠিকমতো রক্ত পাম্প করতে পারছে কি না ইত্যাদিও জানা যায়। আবার রক্তনালি ব্লকড বা সরু হলে আর্টারিয়াল সনোগ্রাফির মাধ্যমে নির্ণয় করা হয়। ভেনাস সনোগ্রাফির মাধ্যমে ডিপ ভেইন থ্রম্বোসিস পর্যালোচনা করা যায়।

তবে ইমার্জেন্সি মেডিসিনে আল্ট্রাসনোগ্রাফির ব্যবহার এখন খুব বেড়েছে, যার মাধ্যমে দ্রুত আঘাতের পরিমাণ ও বিস্তৃতি, পেরিকার্ডিয়াল টেমপোনেড, হেমোপেরিটোনিয়ামের মতো জরুরি অবস্থায় নির্ণয় করে তাৎক্ষণিক চিকিৎসা দেওয়া যায়। আর গলব্লাডার বা অ্যাপেন্ডিক্সের মতো হঠাৎ ব্যথা হয় এমন অসুখও নির্ণয়ে ইমার্জেন্সিতে আল্ট্রাসনোগ্রাম করতে হয়। পরিপাকতন্ত্র বা পেটের আল্ট্রাসনোগ্রাম বহু কারণেই করতে হয়। মূলত পেটের আল্ট্রাসনোগ্রামের মাধ্যমেই কিডনি, লিভার, স্প্লিন, গলব্লাডার, প্যানক্রিয়াজ বা অগ্ন্যাশয়, পেটের টিউমার ইত্যাদি নির্ণয় করা হয়। এছাড়া ও নবজাতকের মাথার ওপরের দিকের নরম অংশ স্ক্যান করে তার মস্তিষ্কে কোনো গঠনগত অসংগতি, হাইড্রোক্যাফালাস, পেরিভেন্ট্রিকুলার লিউকোম্যালাসিয়া ইত্যাদি পরীক্ষা করা হয়। পরে এ নরম অংশ ক্রমেই শক্ত হাড়ে পরিণত হয়ে গেলে আর আল্ট্রাসনোগ্রাম করে মস্তিষ্ক পরীক্ষা করা যায় না। প্রসূতিবিদ্যায় বহু ক্ষেত্রে আল্ট্রাসনোগ্রাম ব্যবহার করতে হয়।

এমন কি গর্ভধারণের প্রাথমিক অবস্থায়ও অনেক সময়ই গর্ভধারণ নিশ্চিতকরণ পরীক্ষা হিসেবেও এটি করা হয়। জন্মানোর আগ পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে আল্ট্রাসনোগ্রাম করে দেখা হয় অনাগত শিশুর সুস্থ্যতাও। ডপলার সনোগ্রাফির মাধ্যমে শিশুর হৃদস্পন্দন বোঝা যায়। এতে শিশুর জন্মগত কোনো হার্টের অসুখ থাকলে তা আগে থেকেই জানা যায়। ইউরোলজির বহু রোগ নির্ণয় সহজ হয়েছে আল্ট্রাসনোগ্রামের ব্যবহারের কারণে। যেমন প্রস্রাবের পর কতখানি প্রস্রাব থলিতে আটকে আছে, তা জানতে সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য পরীক্ষা এটি। আবার প্রজননতন্ত্র, বিশেষ করে জরায়ু ও শুক্রথলির রোগ নির্ণয়েও আল্ট্রাসনোগ্রাম জরুরি। টেস্টিকুলার ক্যান্সার, হাইড্রোসিলি বা ভেরিকোসিলির পার্থক্য বুঝতেও এ পরীক্ষা কাজে লাগে।

এসকেএইচ/এসএ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়