মোস্তাফিজুর রহমান: ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা সাময়িক কর্মবিরতিতে থাকলেও হাসপাতালের স্বাস্থ্যসেবা সঠিকভাবে কার্যক্রম চালু রাখার যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছিল বলে জানিয়েছেন ঢামেক হাসপাতাল পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল নাজমুল হক। তিনি বলেন, তবে এই বিষয়টি কিছু কিছু সংবাদমাধ্যম যথাযথভাবে উপস্থাপিত না করে স্বাস্থ্যসেবা কর্তৃপক্ষ এবং দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার প্রচেষ্টা করেছে, যা অনাকাঙ্খিত এবং দুঃখজনক।
তিনি বলেন, আমরা এ ধরনের ভুল বুঝাবুঝি কখনই আশা করি না এবং কোন তৃতীয় পক্ষ যেন সুযোগের অপব্যবহার না করতে পারে এ ব্যাপারে সবার সহযোগিতা কাম্য। আমরা চাই প্রকৃত দোষী ব্যক্তি চিহ্নিত হোক এবং আইনের আওতায় আনা হোক। ইন্টার্নী চিকিৎসকরা কখনই রোগীর স্বাস্থ্যসেবাকে, দাবী আদায়ের অস্ত্র হিসেবে জিম্মি করেন নাই এবং কর্তৃপক্ষ স্বাস্থ্যসেবা প্রদানে সর্বদা সচেষ্ট ছিল।
১৫ আগস্ট ঢামেক প্রশাসনিক ভবনের সভা কক্ষে দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে হাসপাতাল পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল নাজমুল হক জানান এসব তথ্য। উক্ত সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন ভারপ্রাপ্ত উপপরিচালক আশরাফুল আলমসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা।
বিগত ৮ আগস্ট (রাত আনুমানিক ৯-৩০ মিঃ) হাসপাতালের ক্যাম্পাসের বাইরে শহীদ মিনার চত্বরে অত্র প্রতিষ্ঠানের একজন ইন্টার্নী চিকিৎসক শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত হন। তার পরিপ্রেক্ষিতে যথাযথ কর্তৃপক্ষকে জানানোর পর মহাপরিচালক, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর নিজে উপস্থিত হয়ে পরিচালক মহোদয়, বিভাগীয় প্রধানবৃন্দ, কলেজের অধ্যক্ষ এবং ইন্টার্নী চিকিৎসক পরিষদের নেতৃবৃন্দের সাথে আলোচনা করেন।
সেই প্রেক্ষিতে যেহেতু লাঞ্ছিত ইন্টার্নী চিকিৎসক অভিযোগ করেছিলেন যে, লাঞ্ছনাকারী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হতে পারে সে জন্য তৎক্ষণাৎ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি মহোদয়ের সাথে যোগাযোগ করা হয়। তিনি ইন্টার্নী চিকিৎসকদের চাহিদার প্রেক্ষিতে তার সাথে ইন্টার্নী চিকিৎসক নেতৃবৃন্দের দেখা করার সম্মতি প্রদান করেন। পরবর্তীতে ইন্টার্নী চিকিৎসকগণ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি মহোদয়ের সাথে সাক্ষাৎ করলে তিনি এ ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস প্রদান করেন।
মহাপরিচালক, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর পুলিশ প্রশাসনের সাথে কথা বললে পুলিশ প্রশাসন শাহবাগ থানার সাথে যোগাযোগ করে তৎক্ষণাৎ যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের আদেশ দেন। ইতিমধ্যে শাহবাগ থানায় সাধারণ ডায়েরী করা হয়।
মাননীয় মন্ত্রী মহোদয়কে বিষয়টি অবহিত করা হলে তিনি তাৎক্ষনিকভাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহোদয়ের সাথে পরামর্শ করে পুলিশী কার্যক্রম জোরদার করার ব্যবস্থা করেন এবং এরই ধারাবাহিকতায় পুলিশ সন্দেহভাজন কয়েকজনকে আটক করে প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করেন এবং ইন্টার্নী চিকিৎসক নেতৃবৃন্দের মাধ্যমে সনাক্তকরণের প্রচেষ্টা চালায়।
ইতিমধ্যে পুলিশ সন্দেহজনক কয়েকজনকে শনাক্তকরণের জন্য শাহবাগ থানায় তাৎক্ষনিকভাবে উপস্থিত করে। কিন্তু ঘটনাটি হাসপাতালের বাইরে রাত আনুমানিক সাড়ে নয়টায় ঘটায় আক্রমণকারীকে চিহ্নিত করা সম্ভবপর হয় নাই। ইতিমধ্যে ইন্টার্নী চিকিৎসকরা ক্ষোভ প্রকাশ করে সাময়িকভাবে কর্মবিরতি পালন করেন কিন্তু অন্যান্য ডাক্তারগণ সকলে কাজ করেছেন বিধায় স্বাস্থ্যসেবা প্রদান কোনভাবেই ব্যহত হয়নি।
পরবর্তীতে ১৪ই আগষ্ট ২০২২ ইং ইন্টার্নী চিকিৎসক নেতৃবৃন্দ, প্রফেশনাল নেতৃবৃন্দ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও অন্যান্যরা মিলে বিষয়টি নিষ্পত্তি করেন এবং ইন্টার্নী চিকিৎসকরা কাজে যোগদান করেন।