শিরোনাম
◈ স্বামীর দীর্ঘ ১৭ বছর পর মুক্তিতে যা বললেন লুৎফুজ্জামান বাবরের স্ত্রী ◈ চোখ বেঁধে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে, মদ্যপ অবস্থায় জিজ্ঞাসাবাদ চলে লাথি চড় থাপ্পড় ◈ নির্বাচন কমিশনের অধীনে থাকছে জাতীয় পরিচয়পত্র সেবা: সিইসি ◈ ভারত-পাকিস্তান বাগযুদ্ধ! ◈ দ্রুত বাংলাদেশে নির্বাচন চায় যুক্তরাষ্ট্র-ভারত: দিল্লির বিদায়ী মার্কিন রাষ্ট্রদূত ◈ ৫০ জনের মৃত্যুর শঙ্কা স্পেন যাওয়ার পথে, ৪৪ জনই এশিয়ার ◈ সাইফ আলী খানের ওপর হামলার চাঞ্চল্যকর তথ্য দিলো পুলিশ ◈ ৯৯ শতাংশ শেষ থার্ড টার্মিনালের কাজ, নভেম্বরে উদ্বোধন ◈ খালেদা জিয়া নির্বাচন করতে পারবেন, তারেক রহমানের দুই বাধা ◈ ভারতের সঙ্গে কোনো গোপন চুক্তি আছে কিনা, যা জানাল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

প্রকাশিত : ০৭ ডিসেম্বর, ২০২৪, ০৪:২৮ দুপুর
আপডেট : ১৬ জানুয়ারী, ২০২৫, ১১:০০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ফ্যাটি লিভার থেকে মুক্ত থাকতে জেনে নিন

ফ্যাটি লিভার রোগটির ইতিহাস অনেক পুরোনো। অ্যালকোহলিক, নন-অ্যালকোহলিক—দুই ধরনের ফ্যাটি লিভার দেখা যায়। প্রাদুর্ভাব থাকলেও এই রোগ নিরাময় করা সম্ভব।

কারণ

মদ্যপান, হেপাটাইটিস সি ভাইরাসের সংক্রমণ, লিভারের জিনগত কিছু অসুখ, ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া, গর্ভাবস্থা, অপুষ্টি, দ্রুত ওজন কমানো।

তবে ইনসুলিন হরমোন ঠিকমতো কাজ না করলেও ফ্যাটি লিভার হতে পারে। এর পেছনে রয়েছে অতিরিক্ত ওজন বা স্থূলতা। ফলে স্থূলকায় ডায়াবেটিস রোগীদের শতকরা ৭৫ জন ফ্যাটি লিভারে আক্রান্ত হন।

লক্ষণ কী

অধিকাংশ ক্ষেত্রে ফ্যাটি লিভারের তেমন কোনো লক্ষণ দেখা যায় না। অন্যান্য পরীক্ষা করানোর

পর বিষয়টি ধরা পড়ে। তবে এ রোগে আক্রান্ত রোগীদের অবসাদ ও দুর্বলতার কথাগুলো জানা যায়। এই অসুখ আরও অগ্রসর হলে পেটের ডান পাশে ব্যথা, পেটে চাকা অনুভব করা, জন্ডিস, রক্তবমি, এমনকি কালো পায়খানা হওয়ার এর লক্ষণ প্রকাশ পায়।

ঝুঁকিতে যাঁরা

স্থূলকায় মানুষেরা এই রোগের সর্বোচ্চ ঝুঁকিতে থাকেন। এ ছাড়া ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ

ও রক্তে কোলেস্টেরলের সমস্যায় ভোগা ব্যক্তিরা এই রোগের উচ্চ ঝুঁকিতে থাকেন।

লিভারে চর্বি জমার পরিণতি

লিভারে চর্বি জমার ফল নানা রকম হতে পারে। নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভারে শুধু চর্বি

জমতে দেখা যায়। নন-অ্যালকোহলিক স্ট্যায়াটোহেপাটাইটিসে (ন্যাশ) চর্বি জমার পাশাপাশি লিভারে প্রদাহ হয়। ফাইব্রাস টিস্যু তৈরি হয়ে যকৃতের কোষকলাগুলো শক্ত হয়ে যেতে থাকে। ফলে লিভারের স্বাভাবিক কাজে ব্যাঘাত ঘটে। ন্যাশ রোগীর শেষ পর্যন্ত লিভার সিরোসিস হতে পারে। এমনকি ফ্যাটি লিভার থেকে লিভার ক্যানসার হওয়ার ঝুঁকিও রয়েছে।

প্রতিরোধ ও প্রতিকার

এটি প্রতিরোধে শরীরে জমে থাকা মেদ ঝরিয়ে ফেলতে হবে। বলা হয়, ফ্যাটি লিভার খুব খারাপ অবস্থায় না গেলে শরীরের ওজনের ৫ থেকে ১০ শতাংশ কমিয়ে ফেলার পর এ রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। নিয়ন্ত্রিত কর্মমুখর জীবনযাপন আর সুষম খাদ্যাভ্যাসের সমন্বয় প্রতিরোধ করতে পারে ফ্যাটি লিভার।

খাদ্যাভ্যাস

মেডিটেরিয়ান ডায়েট লিভারে চর্বি কমানোর জন্য সবচেয়ে ভালো। তবে আমাদের প্রথাগত খাদ্যাভ্যাসে এটি পুরোপুরি রপ্ত করা প্রায় অসম্ভব। কিছু খাবার ফ্যাটি লিভারের রোগীদের অবশ্যই বাদ দেওয়া উচিত। যেমন

  • সাদা চিনি এবং চিনিযুক্ত যেকোনো খাবার, ডেজার্ট, জুস বা পানীয়। খাবারের বাড়তি চিনি চর্বি হিসেবে যকৃতে জমা হয়।
  • উচ্চ তাপমাত্রায় ভাজা খাবার, যেমন চিকেন বা ফ্রেঞ্চ ফ্রাই।
  • রান্নায় ব্যবহার করার পর অতিরিক্ত লবণ, লবণযুক্ত প্রক্রিয়াজাত খাবার।
  • সাদা ভাত, ময়দার তৈরি পাউরুটি এবং পরোটা, নান, নুডলস ও বেকারির খাবার।
  • অ্যালকোহল, রেড মিট (গরু ও খাসির মাংস)।

জীবনাচরণ

স্বাস্থ্যকর খাবারের পাশাপাশি কর্মমুখর জীবনাচরণ খুব বেশি জরুরি। যেমন—

  • সপ্তাহে গড়ে ১৫০ মিনিট হাঁটা বা মাঝারি মাত্রার পরিশ্রম করা।
  • কোথাও একটানা অনেকক্ষণ বসে না থাকা। ৩০ থেকে ৬০ মিনিট পরপর উঠে হেঁটে আসা।
  • বেশি রাত পর্যন্ত না জাগা এবং পর্যাপ্ত ঘুমানো।
  • অফিস থেকে কিছুটা পথ হেঁটে বাসায় আসা। সম্ভব হলে লিফট ব্যবহার না করে সিঁড়ি ব্যবহার করা।

ফ্যাটি লিভার সারিয়ে তোলার তেমন ভালো কোনো ওষুধ নেই। কিন্তু লিভারের নিজেকে সারিয়ে তোলার দারুণ ক্ষমতা রয়েছে। এর চিকিৎসায় ব্যবহার করা

হয় ভিটামিন ই। সঙ্গে ডায়াবেটিস থাকলে তার চিকিৎসা, উচ্চ রক্তচাপের চিকিৎসা, রক্তে কোলেস্টেরলের চিকিৎসা, ওজন বেশি থাকলে তার চিকিৎসা। তবে এই ওষুধগুলোর কোনোটিই ওজন কমানোর

আগে নয়। সঠিক খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত ব্যায়াম এবং চিকিৎসকের পরামর্শে ফ্যাটি লিভার নিয়ন্ত্রণ

করা সম্ভব।

পরামর্শ দিয়েছেন: ডা. অদিতি সরকার, এমডি রেসিডেন্ট গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজি,বিএসএমএমইউ

সূত্র : আজকের পত্রিকা

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়