শিরোনাম
◈ আরাকান আর্মির শহর দখল, বাড়িঘর জ্বালিয়ে ফের রোহিঙ্গাদের বিতাড়ন ◈ জাবালিয়া শরণার্থী শিবির গুঁড়িয়ে দিচ্ছে ইসরায়েল, ২৪ ঘন্টায় নিহত ৮৩ ◈ সারাদেশে ঝড় ও বজ্রবৃষ্টির শঙ্কা ◈ স্কুলের টয়লেটে আটকা শিশু, ৬ ঘণ্টা পর বের হতে সক্ষম  ◈ পাসপোর্ট অফিসে ভোগান্তি কিছুটা কমেছে, জনবল বাড়ানোর তাগিদ  ◈ কিরগিজস্তানের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে, বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের ঘরে থাকার পরামর্শ দূতাবাসের ◈ কিরগিজস্তানে বিদেশি শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা: সাহায্য চাইলেন বাংলাদেশিরা  ◈ সংসদ ভবন এলাকায় দুই প‌ক্ষে‌র সংঘর্ষে শিক্ষার্থী নিহত ◈ আবারও বাড়লো সোনার দাম, ভরি ১১৮৪৬০ টাকা ◈ দেশের উন্নয়ন দেখে বিএনপি’র মাথা খারাপ হয়ে গেছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

প্রকাশিত : ০৬ মে, ২০২৪, ০৭:৩৫ বিকাল
আপডেট : ০৭ মে, ২০২৪, ০৩:৩৭ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

বেশিরভাগই হিট স্ট্রোক, ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়া 

রাজধানীর হাসপাতালগুলোতে রোগীর অতিরিক্ত চাপ 

সালেহ্ বিপ্লব: [২] দীর্ঘ তাপপ্রবাহে ঢাকার হাসপাতালগুলোতে রোগী ভর্তির হার উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। অধিকাংশই রোগী হিট স্ট্রোক, জ্বর, সর্দি, ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত এবং এদের মধ্যে শিশুদের সংখ্যা বেশি। অতিরিক্ত রোগীকে চিকিৎসা দিতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা। ইউএনবি

[৩] সোমবার অনেকটা স্বস্তি মিললেও তার আগের কয়েক দিন ধরে ঢাকাসহ দেশের বেশিরভাগ অঞ্চলের ওপর দিয়ে তাপপ্রবাহ বয়ে গেছে। এর মধ্যে রয়েছে লোডশেডিংয়ের সমস্যা। এ কারণে হাসপাতালগুলোতে বেড়েছে গরমজনিত সমস্যায় অসুস্থ রোগীর সংখ্যা। তাপপ্রবাহে সবচেয়ে বেশি কাবু হচ্ছে শিশুরা। এরই মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে শ্রেণিকক্ষের কার্যক্রম শুরু হয়েছে।

[৪] রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে রোগীরা আসছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সরেজমিনে দেখা যায়, হাসপাতালে এসে অতিরিক্ত গরমে আরও অসুস্থ হয়ে পড়ছেন রোগীরা। বেহাল অবস্থা তাদের স্বজনদেরও। ওয়ার্ডে ভর্তি ও মেঝেতে থাকা প্রায় সবাই হাতপাখা কিংবা ছোট টেবিল ফ্যান কিনে ব্যবহার করছেন।

[৪.১] ঢাকার নদ্দা থেকে ঢাকা মেডিকেলে এসেছেন আবুল মালেক। তার ছেলে নাদিম জানান, হাসপাতালে সিট খালি না থাকায় আমার বাবাকে ফ্লোরে রেখেই চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এই গরমে খুবই খারাপ অবস্থা।

[৪.২] অন্যান্য রোগীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, হাসপাতালের অধিকাংশ ফ্যান নষ্ট। হাসপাতালের ভেতরে পর্যাপ্ত বাতাসের অভাব, রোগীর চাপ ও ফ্যান স্বল্পতায় বিপর্যস্ত অবস্থায় আছেন অধিকাংশ রোগী। 

[৫] এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেন, স্টোররুমে যেসব ফ্যান ছিলো, কর্মীদের বলেছি; যেখানে নষ্ট ফ্যান আছে সব পরিবর্তন করে দিতে। যেখানে নতুন করে ফ্যান লাগানো যায় সেখানে ফ্যান সংযুক্ত করতে বলেছি।

[৫.১] তিনি আরও বলেন, এখানে তো অনেক রোগী আসে, অনেক বেশি ভিড়। তাই অনেকেই নিজের লাইট-ফ্যান ব্যবহার করেন। তাই আমি টেকনিশিয়ানদের বলে দিয়েছি যাতে আলাদা লাইনের ব্যবস্থা করা হয়, সেখান থেকে তারা লাইন নিয়ে ফ্যান, লাইট যেন জ্বালাতে পারে।

[৬] গরমে সবচেয়ে কাহিল অবস্থা বৃদ্ধ ও শিশুদের। ঢাকা মেডিকেল কলেজের শিশু ওয়ার্ডে পা ফেলার জায়গা নেই। বিছানা না পাওয়ায় মেঝেতে রেখেই চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে শিশুদের। জরুরি বিভাগ ও আউটডোরের মেডিসিন বিভাগে রোগীর চাপ সবচেয়ে বেশি।

[৬.১] কুর্মিটোলা হাসপাতাল, মুগদা হাসপাতাল, আইসিডিডিআর,বি ও ঢাকা শিশু হাসপাতালে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঈদের পর থেকে দ্বিগুণ রোগী ভর্তি হয়েছে হাসপাতালগুলোতে। যার বেশিরভাগই ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়া রোগী।

[৭] ঢাকা শিশু হাসপাতালের জেনারেল পেডিয়াট্রিক্স বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও একাডেমিক পরিচালক অধ্যাপক ডা. ফরিদ আহমেদ বলেন, বেশি তাপপ্রবাহের কারণে হিট স্ট্রোক, জ্বর, সর্দি, ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়া রোগে সবচেয়ে বেশি কাবু হচ্ছে শিশুরা। যার ফলে হাসপাতালে ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়া রোগীদের মধ্যে বেশির ভাগই শিশু। এত বেশি শিশু ভর্তির ফলে এখন সিট সংকট প্রকট হয়েছে।

[৭.১] এছাড়াও শিশুদের আরও বিভিন্ন রোগের আশঙ্কা রয়েছে বলে জানান তিনি। এ বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানোর পাশাপাশি শিশুদের রাস্তার পাশের খাবার খাওয়া থেকে বিরত রাখার পরামর্শ দেন ডা. ফরিদ আহমেদ।

[৭.২] একই সঙ্গে জ্বরের পাশাপাশি ঘণ্টায় তিনবারের বেশি বমি হলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে বলেও জানান তিনি।

[৭.৩] ডা. ফরিদ আরও বলেন, গরম বেশি পড়লে সাধারণত ডায়রিয়া, জন্ডিস, পানিবাহিত রোগ, হেপাটাইটিস এ ও ই ভাইরাসের প্রকোপ বেড়ে যায়। এ সময়ে প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে বের হওয়া উচিত না।

[৭.৪] এছাড়া বাইরে থেকেই এসেই এসি ছেড়ে দেওয়া, ঠান্ডা পানি খাওয়া কিংবা রাস্তার পাশের শরবত পান থেকে বিরত থাকতে পরামর্শ দেন তিনি।

[৮] জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ এবং সাবেক রোগ নিয়ন্ত্রক পরিচালক অধ্যাপক ডা. বেনজির আহমেদ জানান, বর্তমানে যে দাবদাহ, একেবারেই অসহনীয়। দাবদাহের কারণে কলেরাসহ অনেক রোগ তৈরি হতে পারে। তাপপ্রবাহ চলমান থাকলে শিশুদের জন্য আরও বড় সমস্যা হতে পারে। পাশাপাশি হাসপাতালে রোগীদের সংখ্যা আরও বেড়ে যেতে পারে।’

[৮.১] তিনি আরও জানান, শরীর যে তাপমাত্রায় স্বাভাবিকভাবে কাজ করতে পারে, এমন উচ্চ তাপমাত্রায় তা পারে না। নানা ধরনের শারীরিক ক্রিয়া-বিক্রিয়ায় অস্বাভাবিক হয়ে যায়। সরাসরি হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে কারো জীবন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে। আবার কারো কারো অন্য ধরনের অসুস্থতা ও সংক্রমণও হতে পারে। সম্পাদনা: এম খান

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়