শাহীন খন্দকার: [২] তরুণী-নারীরা ইদানিং যে সকল ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছেন, তার মধ্যে স্তন ক্যান্সারে বেশি হচ্ছে। যে কোন বয়সেই এই রোগ বাসা বাধঁতে পারে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের অভিমত। নারীর পাশাপাশি পুরুষেরাও এই রোগে আক্রান্ত হতে পারেন। তবে পুরুষদের ক্ষেত্রে স্তন ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি কম। তবে প্রাথমিক অবস্থাতে ধরা পড়লে রোগ নিরাময়ে সুযোগ বেশি থাকে।
[৩] অনকোলজি বিভাগের (সার্জিক্যাল অনকোলজি) ডা. মো. রাসেল বলেন, ক্যান্সার কিন্তু বহু ক্ষেত্রেই রোগ ধরা পড়ে অনেক দেরিতে। ঠিক কি কারণে এই রোগ হয়, তা নিশ্চিত করে বলা না গেলেও বেহিসাবি জীবনযাপন, অস্বাস্থ্যকর খাওয়া দাওয়া, প্রাত্যহিক বিভিন্ন বদভ্যাস এই মারণরোগ ডেকে আনতে পারে।
[৪] সার্জিক্যাল অনকোলজি অধ্যাপক ডা. মো. রাসেল বলেন, ২০-৩০ বছর বয়সিদের সতর্ক থাকা বাঞ্ছনীয়। ২০-৩০ বয়স হলেই মেয়েরা সেল্ফ ব্রেস্ট স্ক্রিনিং অর্থাৎ নিজেরাই স্তন ক্যান্সার পরীক্ষা করতে পারেন। তিনি আরও বলেন, বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও বাড়ে। এজন্য সচেতনতা দরকার। ব্রেস্ট ক্যান্সার, জরায়ু মুখ ক্যান্সার পরীক্ষার জন্য সারা দেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ট্রেনিং প্রজেক্ট চলমান রয়েছে। যার মাধ্যমে প্রান্তিক পর্যায়ের চিকিৎসকরা প্রশিক্ষিত হয়ে রোগীদের সেবা দিচ্ছেন।
[৪] এক প্রশ্নের উত্তরে অধ্যাপক ডা. মো. রাসেল বলেন, পরিবারের কারও ক্যানসারের ইতিহাস থাকলে। হরমোন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপি স্তন ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ায়। স্তনে কোনও রকম সংক্রমণ বা অন্য কোনও রোগ হলে।
[৫] রোজকার জীবনে কোন কোন অভ্যাসে বদল আনলে স্তন ক্যানসারের ঝুঁকি কমে প্রশ্নের উত্তরে ডা. মো. রাসেল বলেন জীবনযাপনে অনিয়ম করলে চলবে না। ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হলে কিন্তু নিয়ম করে শরীরচর্চা করতে হবে।ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকলে শরীরে হরমোনের ভারসাম্য বিঘ্নিত হয় না। খাওয়াদাওয়ার অনিয়মে ওজন বাড়ে।
[৬] বাইরের তেল-ঝাল-মশলা জাতীয় অস্বাস্থ্যকর খাবার, প্রক্রিয়াজাত খাবার, প্যাকেটজাত খাবার খাওয়ার অভ্যাসে রাশ টানা জরুরি। শরীরের ওজন বয়স এবং উচ্চতা অনুযায়ী স্বাভাবিকের চেয়ে বৃদ্ধি পেলে স্তন ক্যানসারের ঝুঁকি তৈরি হয়। বদলে ডায়েটে বেশি করে ফল, শাকসব্জি, গোটা শস্য, লিন প্রোটিন বেশি করে রাখতে হবে।
[৭] বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে, স্তন্যপান করালে কিন্তু স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেকটাই কমে। স্তন্যদানের সময় শরীরে হরমোন ঘটিত নানা রকম বদল আসে, যা স্তনের কোষগুলির অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি রোধ করতে সাহায্য করে।
[৮] স্তনে কোনও রকম অস্বাভাবিক বদল দেখলেই সতর্ক হোন। স্তনে কোনও রকম মণ্ড দেখতে পেলে, স্তনবৃন্তের রং বদলে গেলে, স্তনবৃন্ত থেকে কোনও রকম তরল বেরোলে কিংবা স্তনে ব্যথা হলে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। সম্পাদনা: কামরুজ্জামান
আপনার মতামত লিখুন :