আসাদুজ্জামান সম্রাট (এক্সপো সিটি) দুবাই থেকে: সংযুক্ত আরব আমিরাতের এক্সপো সিটিতে চলমান বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনের মধ্যে শেখ মোহাম্মদ বিন রশিদ আল মাকতুম তার মন্ত্রিসভার বৈঠক করেছেন। যাতে জলবায়ু পরিবর্তন রোধে ইতিমধ্যে গ্রীন এনার্জিখাতে বিনিয়োগ করা ৫০ বিলিয়ন ডলারের সঙ্গে আগামী এক দশকে আরো ৫০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছেন। মন্ত্রিসভার ওই বৈঠকে নতুন ১০টি প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয় যাতে বৈশ্বিক উষ্ণায়নরোধে ভূমিকা রাখবে।
বৈঠকে পরিবেশগত টেকসই উন্নয়ন, জলবায়ু পরিবর্তনের উদ্যোগ এবং প্রাকৃতিক সম্পদ উন্নয়নে দেশের অগ্রগতির বিষয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকে শেখ মোহাম্মদ বলেছেন, গত পাঁচ বছরে মন্ত্রীপরিষদ কর্তৃক স্থায়িত্ব এবং জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়ে ১২০টিরও বেশি সিদ্ধান্তের ফলাফল পর্যালোচনা করেছে। শুধুমাত্র ২০২৩ সালে সংযুক্ত আরব আমিরাত ৬০টিরও বেশি নতুন সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করেছে, যা বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলার কার্যক্রমকে শক্তিশালী করবে।
পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন খাতে সংযুক্ত আরব আমিরাতের জাতীয় কৌশল এবং নীতিগুলিতে অসাধারণ ফলাফল দেখিয়েছে বলে দাবি করেছেন শেখ মোহাম্মদ। গ্রীন ফিউচার ইনডেক্স ২০২৩ অনুসারে দেশটি বিশ্বব্যাপী শক্তির পরিবর্তনে দ্বিতীয় এবং মাথাপিছু সৌর শক্তির ব্যবহারে বিশ্বব্যাপী ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে।
বৈঠকে মন্ত্রিসভা দেশের পরিবেশগত লক্ষ্য অর্জনে ১০টি নতুন উদ্যোগ ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে রয়েছে জৈব বৈচিত্র্য কৌশল ২০৩১-এর সাধারণ কাঠামো, যার লক্ষ্য প্রাকৃতিক ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ, সুরক্ষা এবং টিকিয়ে রাখা। কার্বন নিঃসরণ হ্রাসে সরকারী ও বেসরকারী অবদানগুলো স্বীকৃতি দেয়ার পাশাপাশি কার্বন ক্রেডিটগুলির জন্য একটি জাতীয় রেজিস্ট্রি চালু করার সাথে বর্জ্য সেক্টরকে ডিকার্বনাইজ করার একটি বৈশ্বিক উদ্যোগও গৃহীত হয়েছে।
এদিকে কপ-২৮ সস্মেলনের আর মাত্র দু’দিন বাকি রয়েছে। এখন পর্যন্ত লস এ্যাড ড্যামেজ খাতে ৭৪৬ মিলিলন ডলারের প্রতিশ্রুতি মিলেছে। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সমস্যায় প্রতি বছর লস এ্যান্ড ড্যামেজের আর্থিক মূল্য প্রায় ৪০০ বিলিয়ন ডলার। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গ্রীন ক্লাইমেট ফান্ডে নতুন ৩ বিলিয়ন ডলারের প্রতিশ্রুতি দিলেও এ খাতে প্রয়োজনীয় প্রতিশ্রুতি পাওয়া যায়নি।
বাংলাদেশসহ উন্নয়নশীল দেশগুলো জলবায়ু ক্ষতিগ্রস্থতা কাটিয়ে উঠতে লস এ্যান্ড ড্যামেজ ফান্ড থেকে আর্থিক সহায়তা প্রত্যাশা করে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর জলবায়ু বিষয়ক বিশেষ দূত সাবের হোসেন চৌধুরী। তবে এ ক্ষেত্রেও আরও অনেক সময় ও কর্মকৌশল নির্ধারণের বিষয় রয়েছে বলে মনে করেন তিনি।
এদিকে শ্রীলঙ্কার প্যাভিলিয়নে সাউথ এশিয়ান কো অপারেটিভ এনভায়রনমেন্ট প্রোগ্রাম আয়োজিত ‘স্থল এবং মহাসাগরে প্লাস্টিক দূষণ’ নিয়ে একটি সাইড ইভেন্টে প্লাষ্টিকের ব্যবহার হ্রাসের উপর গুরুত্বারোপ করা হয়। সাকেপের মহাপরিচালক রোকেয়া খাতুন এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন। প্যানেলটি পরিচালনা করছেন সিমোনেটা সিলিগাতো। প্যানেলিস্ট হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভুটানের রিনচেন পেঞ্জোর, নেপালের ডঃ দীপক কুমার খারাল, পালিন্দা পেরেরা ও মিসেস অঞ্জলি দেবরাজা।