শিরোনাম
◈ দেশ ছাড়লেন হাসিনার সেই চাচা! ◈ বুধবার কারামুক্ত হ‌চ্ছেন পাকিস্তানের সা‌বেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান?  ◈ জি৭ শীর্ষবৈঠকের আগে ন‌রেন্দ্র মোদীকে হুমকি খলিস্তানপন্থীদের, হুঁশিয়ারি কানাডার সাংবাদিককেও ◈ স্পেনকে হারিয়ে উয়েফা নেশন্স লিগ চ্যাম্পিয়ন পর্তুগাল ◈ বাংলাদেশ ও সিঙ্গাপুর ম্যাচের নিরাপত্তায় থাকবে সোয়াট টিম ◈ মধ্য রাতে দেশে ফিরেছেন সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ◈ প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তারেক রহমানের বৈঠক হলে দেশের জন্য পজিটিভ মেসেজ: প্রেস সচিব (ভিডিও) ◈ সচিবালয় ও যমুনার আশপাশে সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ : ডিএমপি ◈ অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতার ইঙ্গিত: রেমিট্যান্স ও রফতানিতে নজরকাড়া অগ্রগতি ◈ মানুষ রোজা রাখবে নাকি নির্বাচনের প্রচারণা করবে, প্রশ্ন রিজভীর (ভিডিও)

প্রকাশিত : ২৪ জুলাই, ২০২২, ১২:০৪ দুপুর
আপডেট : ২৪ জুলাই, ২০২২, ১২:০৪ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

উত্তম কুমার যেভাবে হন মহানায়ক

মাজহারুল ইসলাম: উত্তম কুমারের পারিবারিক নাম অরুণকুমার চট্টোপাধ্যায়। ১৯৮০ সালের ২৪শে জুলাই ৫৪ বছর বয়সে এই মহানায়ক কোলকাতায় ওগো বধূ সুন্দরী ছবির শুটিং করতে করতে হৃদরোগে আক্রান্ত মারা যান।  

এ উপলক্ষে কলকাতা শহরের বিভিন্ন জায়গায় তাকে স্মরণ করে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। চলচ্চিত্র ছাড়াও তিনি মঞ্চেরও একজন সফল অভিনেতা ছিলেন। ভুবন ভোলানো হাসিই ছিল মহানায়ক উত্তম কুমারের অন্যতম পরিচয়। বাংলা সিনেমার এই আইকন আজও বেঁচে আছেন কোটি মানুষের হৃদয়ে। 

উত্তম কুমার প্রথমবার ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়েছেন একজন এক্সট্রা শিল্পী হিসেবে। পরে নায়ক হিসেবে ক্যারিয়ার শুরুতে টানা ৭টা সিনেমা ফ্লপ হয়েছে তার। কিন্তু এরপরও তিনি কীভাবে হয়ে ওঠলেন মহানায়ক?

এর উত্তর খুঁজতে গেলে প্রথমে বলতে হবে উত্তম কুমারের কঠোর পরিশ্রম আর অধ্যবসায়ের কথা। হাল ছেড়ে না দিয়ে একের পর এক চেষ্টাই তাকে এনে দিয়েছে মহানায়কের খেতাব।  

১৯২৬ সালের ৩ সেপ্টেম্বর কলকাতার ভবানীপুরে মধ্যবিত্ত পরিবারের জন্মেছিলেন এই কিংবদন্তি নায়ক। তার আসল নাম ছিল অরুণ কুমার চট্টোপাধ্যায়। সিনেমায় এসে হয়ে যান উত্তম কুমার। তার অভিনয় খ্যাতি কতটা ছিল মানুষের মুখের একটি উক্তিই এর বড় প্রমাণ। আজও বাঙালিকে বলতে শোনা যায়- ‘নিজেকে কী উত্তম কুমার মনে হয়?’

উত্তম কুমারের জীবনের শুরুটা মোটেও মসৃণ ছিল না। সংসারের হাল ধরতে শিক্ষাজীবন শেষ না করেই কলকাতা পোর্টে কেরানির চাকরি শুরু করেন। পরে অভিনয়ের প্রতি গভীর অনুরাগ থেকে কাজ শুরু করেন মঞ্চে। সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে এসে চলচ্চিত্র জগতে প্রতিষ্ঠা পেতে অনেক পরিশ্রম করতে হয়েছে তাকে।

৫০ এর দশকে ‘দৃষ্টিদান’ দিয়ে তার সিনেমা জীবন শুরু হয়। প্রথম ছবি হিসেবে তার ‘দৃষ্টিদান’ ছবিটি ব্যর্থ হয়। অবশেষে রূপালি পর্দায় ‘মায়াডোর’ দিয়ে উত্তম কুমারের শুরু। ‘বসু পরিবার’ ছবিটি দিয়ে খানিকটা পরিচিতি আসে। ১৯৫৩ সালে ‘সাড়ে চুয়াত্তর’ ছবি দিয়ে বাংলা চলচ্চিত্রে ঝড় তোলেন উত্তম কুমার। এই ছবিতেই তিনি প্রথম সুচিত্রা সেনের বিপরীতে অভিনয় করেন। উত্তম-সুচিত্রার প্রথম আবির্ভাবের এই ছবিটি ব্যাপক দর্শকপ্রিয়তা পায়। এই ছবির মধ্য দিয়েই বাংলা চলচ্চিত্র পায় তার সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়তা। শুরু হয় উত্তম যুগ। পঞ্চাশ ও ষাটের দশকে ‘হারানো সুর’, ‘পথে হল দেরী’, ‘সপ্তপদী’, ‘চাওয়া পাওয়া’, ‘বিপাশা’, ‘জীবন তৃষ্ণা’ আর ‘সাগরিকা’-এর মতো কালজয়ী সব ছবি করে সবার হৃদয়ে স্থান করে নেন উত্তম।

একে একে অনেক সাড়া জাগানো চলচ্চিত্রের অভিনেতা তিনি। রোমান্টিক অভিনেতার চূড়ায় অবস্থান করেন উত্তম কুমার। পান মহানায়কের খ্যাতি। শুধু বাংলা ছবিই নয়, বেশ কয়েকটি হিন্দি চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেন উত্তম কুমার। এর মধ্যে ‘ছোটিসি মুলাকাত’, ‘অমানুষ’, ‘আনন্দ আশ্রম’ প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য।

সত্যজিৎ রায়ের ‘নায়ক’ ও ‘চিড়িয়াখানা’ উত্তম কুমারের আরো দুটি সেরা চলচ্চিত্র। উত্তম কুমারকে ভেবেই ‘নায়ক’ ছবি করার কথা ভেবেছিলেন সত্যজিৎ রায়। ‘নায়ক’ উত্তমের ক্যারিয়ারের ১১০তম ছবি। এই ছবিটি আজও সিনেমাপ্রেমীদের মনে এক অন্যরকম আলোড়ন তৈরি করে।

‘সাড়ে চুয়াত্তর’ তাকে চলচ্চিত্র জগতে স্থায়ী আসন করে দেয়। এই ছবিতে তিনি সুচিত্রা সেনের বিপরীতে অভিনয় করেন। এই ছবির মাধ্যমে বাংলা চলচ্চিত্র জগতের সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং সফল উত্তম-সুচিত্রা জুটির সূত্রপাত হয়।

উত্তম কুমার গৌরী দেবীকে বিয়ে করেন। তাদের একমাত্র সন্তান গৌতম চট্টোপাধ্যায় মাত্র ৫৩ বছর বয়সে ক্যান্সারে মারা যান। গৌরব চট্টোপাধ্যায় উত্তম কুমারের একমাত্র নাতি। তিনি বর্তমানে টালিগঞ্জের জনপ্রিয় ব্যস্ত অভিনেতা।

১৯৬৩ সালে উত্তম কুমার তার পরিবার ছেড়ে চলে যান। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত দীর্ঘ ১৭ বছর তিনি তৎকালীন জনপ্রিয় অভিনেত্রী সুপ্রিয়া দেবীর সঙ্গে বসবাস করেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়