এম শামীম, রাবি: [২] রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) সায়েন্স ক্লাবের আয়োজন 'অমর একুশে গ্রন্থ কুটির-২০২৪’ চার দিনব্যাপী বই মেলার শেষ দিন আজ। মেলার শেষদিন ও ২১শে ফেব্রুয়ারি ছুটির দিন হওয়ায় দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড়ে জমে উঠেছে এবারের বই মেলা।
[৩] বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) বিকাল ৫টায় শহীদ বুদ্ধিজীবী চত্বরের সামনে বই মেলায় ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়।
[৪] সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সায়েন্স ক্লাবের আয়োজনে চার দিনব্যাপী বই মেলার শেষ দিন আজ, এছাড়াও ২১শে ফেব্রুয়ারি ছুটির দিন হওয়ায় দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড়ে বইয়ের স্টলগুলো কানায় কানায় পরিপূর্ণ। সায়েন্স ক্লাবের আয়োজনে এবারের বইমেলায় ২০টি স্টলে প্রায় ৩০ হাজার বই স্থান পেয়েছে। প্রতিটি স্টলেই শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা তাদের পছন্দের বই কিনতে ভিড় জমাচ্ছেন। মেলার শেষদিন হওয়ায় শিক্ষকরা তাদের পরিবার নিয়েও এ মেলায় অংশ নিচ্ছেন এবং ক্যাম্পাসের বাইরে থেকেও অনেক বইপ্রেমী মানুষ এ মেলায় অংশ নিচ্ছেন।
[৫] আয়োজকদের মতে, আজ মেলার শেষদিন হওয়ায় গত তিনদের তুলনায় আজকে মেলায় দর্শনার্থীদের ভিড় অনেকটাই বেশি। বেচাকেনাও আগের চেয়ে অনেকটাই বেড়েছে বলে জানান তারা। আজ রাত ১০ পর্যন্ত চলবে এবারের বই মেলা।
[৬] এদিকে বাংলা উপন্যাস, বাংলা কবিতা, সায়েন্স ফিকশন, থ্রিলার ও অ্যাডভেঞ্চার, ইসলামি বই, কমিকস, শিশুতোষ ও কিশোরসমগ্র, অলিম্পিয়াডের বই, মজার বই, বিজ্ঞানের ম্যাগাজিন, মুক্তিযুদ্ধ ও ভাষা আন্দোলনের বই, রাজনৈতিক বই, ইতিহাসের বই, বিদেশি খ্যাতিমান সাহিত্যিকদের বই, শিশুদের জন্য বিজ্ঞান বাক্স। সেই সঙ্গে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়সহ রাজশাহী অঞ্চলের স্বনামধন্য শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও লেখক-লেখিকাদের লিখিত বই নিয়েও একটি বিশেষ স্টল রয়েছে এবারের মেলায়।
[৭] এবারের মেলায় প্রথমা প্রকাশন, সমকালীন প্রকাশনী, গার্ডিয়ান প্রকাশনী, ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেড, জ্ঞানকোষ প্রকাশনী, সূর্যোদয় প্রকাশনী, পারিজাত প্রকাশনীসহ প্রায় ২০টি প্রকাশনী রয়েছে।
[৮] বাচ্চাদের নিয়ে বই মেলায় ঘুরতে এসেছেন রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান। তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় সায়েন্স ক্লাব একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। বিশ্ববিদ্যালয়ের যেসকল শিক্ষার্থী বইপ্রিপাসু এবং বাচ্চাদের মধ্যে বইয়ের স্পৃহা ছড়িয়ে দিতে তারা যে আয়োজন করেছে সেটি আসলেই মহৎকাজ। আমি আমার বাচ্চাদের নিয়ে এ মেলায় এসেছি, তারা প্রতিটি স্টলে তাদের পছন্দের বই দেখছেন।
[৯] উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের ২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ইশরাত জাহান অবনী বলেন, একুশে ফেব্রুয়ারির ফুল দিয়েই বই মেলায় চলে এসেছি। আজ শেষদিন তাই অনেকক্ষণ থাকবো বই মেলায়। অনেকগুলো স্টলঘুরে দেখে আমি দুইটি বই কিনেছি। আরও কয়েকটি বই কিনবো বলে জানান তিনি।
[১০] বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক শিক্ষার্থী সুমাইয়া সুহি বলেন, বই মেলার জন্য প্রতিবছরই আমরা অপেক্ষা করে থাকি। বই মেলা মানেই ভালো লাগা, কোনটা রেখে কোনটা কিনবো দ্বিধায় পরে যায়। আমি হুমায়ুন আহমেদ স্যারের খুব বড় একজন ফ্রেন্ড। স্যারের কয়েকটি বই আমার পছন্দ হয়েছে। সায়েন্স ক্লাবের এমন আয়োজন আমরা প্রতিবছরেই চাই।
[১১] এ প্রযুক্তির যুগে বইবিমুখ মানুষকে বিজ্ঞান ও সাহিত্যের প্রতি আগ্রহী করে তুলতে রাবি সায়েন্স ক্লাবের এমন উদ্যোগ জানিয়ে ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শেখ সৈকত বলেন, বই পড়ার কোনো বিকল্প নেই। তাই তো বর্তমান স্মার্টফোনের যুগে মানুষকে বই পড়তে আগ্রহী করে তুলতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সায়েন্স ক্লাব এবার পঞ্চমবারের মতো আয়োজন করছে অমর গ্রন্থ কুটির-২০২৪। আমরা এই বইমেলায় পাঠক ও লেখকের অনেক সাড়া পেয়ে থাকি। গত বছর প্রায় ১২লাখ টাকার বিক্রি করা হয়, বই বেশি থাকায় এবার বিক্রি আরও বেশি হবে বলে জানান তিনি।
[১২] সায়েন্স ক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. সায়েম আলম বলেন, আজকে মেলার শেষদিন হওয়ায় মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষ্যে শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শিক্ষার্থীরা মেলায় চলে আসছে। ফলে আমাদের স্টলগুলো দর্শনার্থীদের দ্বারা কানায় কানায় পরিপূর্ণ। আজকে রাত ১০টা পর্যন্ত চলবে আমাদের বই মেলা। আজ বিকেলে দর্শনার্থীদের সংখ্যা আরও বাড়বে। আজকে শেষদিন হওয়ায় বইয়ের কালেকশনে কিছুটা ঘাটতি দেখা দিয়েছে। দর্শকদের চাহিদা পূরণ করতে আবারও বইয়ের কালেকশন নিয়ে আসছি আমরা।
প্রতিনিধি/একে
আপনার মতামত লিখুন :