জাফর ইকবাল, খুলনা: [২] তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন লার্নিং এন্ড আর্নিং ডেভেলপমেন্ট প্রকল্পের আওতায় সোমবার খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে দিনব্যাপী ‘স্মার্ট কর্মসংস্থান মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মেলা উপলক্ষ্যে সকাল ১১টা ৪৫ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য জগদীশ চন্দ্র বসু একাডেমিক ভবনের সাংবাদিক লিয়াকত আলী মিলনায়তনে দক্ষতা উন্নয়ন, উদ্ভাবন এবং তথ্যপ্রযুক্তির বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সেমিনার ও আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
[৩] আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মোসাম্মাৎ হোসনে আরা বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে তথ্য প্রযুক্তির দিক থেকে দেশ অনেক এগিয়ে গেছে। দেশ এখন ২০৪১ সালের স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার অভিলক্ষ্যে যাত্রা শুরু করেছে। স্মার্ট বাংলাদেশে সকল কাজই হবে প্রযুক্তি নির্ভর। এজন্য সরকারের আইসিটি বিভাগ ক্ষেত্রে প্রযুক্তি নির্ভর দক্ষ মানবশক্তি গড়ে তুলতে কাজ করছে।
[৪] তিনি আরও বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে স্মার্ট সিটিজেনের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ স্মার্ট সিটিজেনের মাধ্যমেই স্মার্ট গভর্ন্যান্স, স্মার্ট সোসাইটি, স্মার্ট ইকোনমি গড়ে উঠবে।
[৫] উপ-উপাচার্য বলেন, শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা শেষ করে চাকরি বা কর্মসংস্থান খোঁজ করে। এই সময়ে তাদেরকে দক্ষ করে তুলতে লার্নিং এন্ড আর্নিং ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট নানা ধরনের প্রশিক্ষণ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। যা এই সমস্ত শিক্ষার্থীদের কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
[৬] তিনি বলেন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় গুড গভর্ন্যান্সের অনন্য উদাহরণ। আমরা সবকিছুতেই স্মার্ট হতে চাই। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি অটোমেশন সম্পন্ন হয়েছে, যাতে শিক্ষার্থীরা স্মার্ট কার্ড ব্যবহার করে বই ইস্যু থেকে শুরু করে লাইব্রেরি সংক্রান্ত সকল কাজ সম্পাদন করতে পারছে।
[৭] আলোচনা অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর অমিত রায় চৌধুরী। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ডিজিটাল বাংলাদেশ অতিক্রম করে আমরা এখন স্মার্ট বাংলাদেশের পথে এগিয়ে যাচ্ছি। প্রযুক্তির এই পরিবর্তনের সাথে সকলকে খাপ খাইয়ে নিতে হবে। তা নাহলে আমরা নিজেদের উন্নয়ন করতে পারবো না। আমাদের যে বিপুল তারুণ্য রয়েছে তারা আগামীতে সম্পদে, জ্ঞানে, দেশপ্রেম ও মূল্যবোধে এগিয়ে যাবে এবং আগামী বাংলাদেশ গোটা পৃথিবীকে নেতৃত্ব দেবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
[৮] বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর খান গোলাম কুদ্দুস। তিনি বলেন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্র্যাজুয়েটরা সব দিক থেকে যোগ্য। তাদের জন্য এই স্মার্ট কর্মসংস্থান মেলা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। বর্তমান উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন এর নেতৃত্বে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম ও সুখ্যাতি আজ দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিদেশেও ছড়িয়ে পড়েছে।
[৯] তিনি আরও বলেন, ২০৪১ সালের বুদ্ধিদীপ্ত, পেপারলেস, ক্যাশলেস, গ্রিন-ক্লিন স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ও এগিয়ে চলেছে। বিশ্ববিদ্যালয়কে স্মার্ট হিসেবে গড়ে তুলতে এখানে নানা উদ্যোগ বাস্তবায়িত হচ্ছে।
[১০] তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের বাস্তবায়নাধীন লার্নিং এন্ড আর্নিং ডেভেলপমেন্ট প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক (উপসচিব) মো. হুমায়ুন কবীরের সভাপতিত্বে আলোচনা অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও বক্তব্য রাখেন একই প্রকল্পের উপ-পরিচালক মো. শরিফুল ইসলাম। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বিষয়ক পরিচালক প্রফেসর মো. শরীফ হাসান লিমন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ইসিই ডিসিপ্লিনের প্রফেসর সেহরীশ খান।
[১১] মোটিভেশনাল স্পিকার হিসেবে বক্তব্য রাখেন সিএসই ডিসিপ্লিনের সহযোগী অধ্যাপক শেখ আলমগীর হোসেন। অনুষ্ঠানে উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকে সফলতার গল্প শোনান উম্মে কুলসুম ও রিংকু বৈরাগী। মুক্ত আলোচনা পর্বে অংশ নেন তুষার রায়, মো. তানভীর আহমেদ খান, মুহিমা মোস্তারি ও রাজু।
[১২] এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ডিসিপ্লিনের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, আইসিটি বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা এবং এ অঞ্চলের তরুণ উদ্যোক্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। এর আগে মুক্তমঞ্চ সম্মুখস্থ মাঠে ফিতা কেটে স্মার্ট কর্মসংস্থান মেলার উদ্বোধন করেন উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মোসাম্মাৎ হোসনে আরা। উদ্বোধনের পর তিনি অতিথিদের নিয়ে মেলার স্টলগুলো পরিদর্শন করেন।
[১৩] এসময় বিশেষ অতিথি বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর অমিত রায় চৌধুরী, রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর খান গোলাম কুদ্দুস, ছাত্র বিষয়ক পরিচালক প্রফেসর মো. শরীফ হাসান লিমন, লার্নিং এন্ড আর্নিং ডেভেলপমেন্ট প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক (উপসচিব) মো. হুমায়ুন কবীর, উপ-পরিচালক মো. শরিফুল ইসলামসহ অন্যান্য অতিথিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। এ মেলায় দেশের প্রথম সারির ২০টির অধিক আইসিটি কোম্পানি অংশগ্রহণ করে।
প্রতিনিধি/একে