রায়হান আবিদ, বাকৃবি: [২] প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা পুনর্বহালের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) শিক্ষার্থীরা।
[৩] সোমবার (১০ জুন) বেলা ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিল্পচার্য জয়নুল আবেদীন মিলনায়তনের মুক্তমঞ্চের সামনে সমবেত হন শত শত শিক্ষার্থী। এ সময় তারা ‘কোটা প্রথা নিপাত যাক, মেধাবীরা মুক্তি পাক’ , ‘বঙ্গবন্ধুর বাংলায় বৈষম্যের ঠাই নাই’ ইত্যাদি কোটা বিরোধী স্লোগান দেন। দাবি মেনে না নিলে শিক্ষার্থীরা লাগাতার আন্দোলনের ঘোষণা দেন।
[৪] এসময় ভেটেরিনারি অনুষদের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান তানজিল বলেন, মুক্তিযুদ্ধ শব্দটাকে বিচ্ছেদ করলে আমরা শুধু মুক্তি শব্দটাই পাই, কোথাও বৈষম্য দেখতে পাই না। স্বাধীনতার এত বছর পরে এসেও নতুন করে কোটা বৈষম্য তৈরী করা হলে সেটি মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সাথেই সাংঘর্ষিক। কোটা মূলত পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর অধিকার আদায়ের একটা মাধ্যম। কিন্তু বর্তমানে যারা কোটা সুবিধার আওতাধীন রয়েছে তাদের মধ্যে কেবল প্রতিবন্ধী এবং আদিবাসী ছাড়া কেউই আর পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর আওতায় পড়ে না। বিশেষ বিবেচনায় অবশ্যই মুক্তিযোদ্ধা কোটা রাখা যেতে পারে তবে সেটা কখনোই ৫ শতাংশের বেশি হওয়া উচিত নয়।
[৫] আন্দোলনে আসা আরেক শিক্ষাথী মো. ইরান মিয়া বলেন, স্বাধীনতার ৫২ বছর পরে এসেও সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতির পুনর্বহাল বাংলাদেশের ছাত্রসমাজের সাথে চরম বৈষম্যের প্রতিফলন। ৩০ জুনের মধ্যে বৈষম্যমূলক কোটা পদ্ধতি বাতিল না করলে সারা বাংলার ছাত্রসমাজ দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলবে। তবে প্রতিবন্ধী এবং ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর জন্য কোটা রাখা যেতে পারে।
[৬] নূর-ই-হাফিজা নামের ভেটেরিনারি অনুষদের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, দেশের প্রথম শ্রেণির চাকরি গুলোতে একজন যোগ্য প্রার্থীকে সুযোগ দেওয়া উচিত। কারণ একজন যোগ্য ব্যক্তি দেশকে যেভাবে এগিয়ে নিয়ে যাবে একজন অযোগ্য মানুষ তা পারবে না। মেধার যথাযথ সম্মান যে দেশে করা হবে না সে দেশ মেধাশূণ্য হয়ে যাবে অচিরেই।
[৭] উল্লেখ্য, গত বুধবার সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল সংক্রান্ত পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন হাইকোর্ট। এক রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন। এর ফলে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ৯ম থেকে ১৩তম গ্রেডে নিয়োগ দেওয়ায় আর কোনো বাধা থাকল না বলে জানিয়েছেন রিট আবেদনকারীদের আইনজীবী মনসুরুল হক চৌধুরী। পরদিন থেকেই ওই রায়ের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নামেন। সম্পাদনা: এ আর শাকিল
প্রতিনিধি/এআরএস
আপনার মতামত লিখুন :