শিরোনাম
◈ নুরুল হুদাকে হেনস্থা নিয়ে পাল্টা-পাল্টি বক্তব্য, যা বললেন দুই উপদেষ্টাসহ বিএনপির নেতারা ◈ ইরানকে সরাসরি সামরিক সহায়তা না দেওয়ার যুক্তি তুলে ধরলেন পুতিন ◈ করোনায় তিনজনের মৃত্যু, শনাক্ত ১৯ ◈ মার্কিন হামলার পর হরমুজ প্রণালি এড়িয়ে চলছে তেলবাহী জাহাজ, বিশ্ববাজারে অস্থিরতার আশঙ্কা ◈ চীনের গ্রেট হলে বিএনপি ও সিপিসির মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত ◈ নুরুল হুদার সঙ্গে অসদাচরণে শাস্তির দাবি বিএনপির, ‘মব জাস্টিস’ নীতিতে বিশ্বাস করে না দল: রিজভী ◈ গুমের সঙ্গে জড়িত ছিল ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা: গুম কমিশনের প্রতিবেদন ◈ কেউ ব্যক্তিগত মাইলফলকের জন্য খেলে না : শান্ত ◈ ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার ঘটনায় বাংলাদেশের উদ্বেগ ◈ রিয়াল মা‌দ্রিদের রুডিগার ক্লাব বিশ্বকাপে বর্ণবাদী আচরণের শিকার

প্রকাশিত : ২৩ জুন, ২০২৫, ০৪:১৪ দুপুর
আপডেট : ২৩ জুন, ২০২৫, ০৮:১৬ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ইইউ বাজারে চমক দেখাল বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাত, চীনকে ছাড়িয়ে যাওয়ার পথে

ফাইল ছবি

ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) বাজারে চলতি বছরের প্রথম চার মাসে (জানুয়ারি-এপ্রিল ২০২৫) বৈশ্বিক বাণিজ্যে প্রবল গতি দেখা গেছে। ইউরো স্ট্যাটের সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান বলছে, এ সময়ে ইইউর বৈশ্বিক আমদানি ১৪ দশমিক ২১ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩২ দশমিক ৪৯ বিলিয়ন ডলারে। রফতানি পণ্যের পরিমাণ বেড়েছে ১৫ দশমিক ৮৪ শতাংশ, যদিও ইউনিট মূল্যে গড়ে ১ দশমিক ৪১ শতাংশ পতন ঘটেছে।

এই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাত দেখিয়েছে চমকপ্রদ সাফল্য। ২০২৫ সালের প্রথম চার মাসে ইইউতে বাংলাদেশের পোশাক রফতানি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮ দশমিক ০৭ বিলিয়ন ডলারে, যা গত বছরের একই সময়ে ছিল ৬ দশমিক ৫১ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২৩ দশমিক ৯৮ শতাংশ। রফতানি পরিমাণ বা ভলিউম বেড়েছে ১৯ দশমিক ৭১ শতাংশ এবং ইউনিট দামে বেড়েছে ৩ দশমিক ৫৭ শতাংশ—যা বাংলাদেশের পোশাক খাতে গুণগত উন্নয়নের প্রমাণ।

প্রতিদ্বন্দ্বীদের পারফরম্যান্স: বাংলাদেশের পাশাপাশি চীন, ভারত, পাকিস্তান ও কম্বোডিয়াও উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। চীনের রফতানি দাঁড়িয়েছে ৮ দশমিক ৩৯ বিলিয়ন ডলারে, যা গত বছরের তুলনায় ২১ দশমিক ৪৯ শতাংশ বেশি। বিশেষ দৃষ্টিগোচর বিষয় হলো, চীনের ইউনিট দাম বেড়েছে ৭ দশমিক ৩৭ শতাংশ—যা বাজারে মূল্যবোধের উন্নয়ন নির্দেশ করে।

ভারতের রফতানি দাঁড়িয়েছে ২ দশমিক ০১ বিলিয়ন ডলার, প্রবৃদ্ধি ২০ দশমিক ৫৮ শতাংশ। পাকিস্তানের প্রবৃদ্ধি ২৩ দশমিক ৪২ শতাংশ, মোট রফতানি ১ দশমিক ৪২ বিলিয়ন ডলার। এদিকে কম্বোডিয়া সবচেয়ে বেশি ৩১ দশমিক ৭৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি নিয়ে ১ দশমিক ৫৬ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। ভিয়েতনামও পিছিয়ে নেই—১৫ দশমিক ৬২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি নিয়ে রফতানি দাঁড়িয়েছে ১ দশমিক ৪৮ বিলিয়ন ডলার এবং ইউনিট দামে উন্নতি হয়েছে ৫ দশমিক ৬৮ শতাংশ।

তবে বিপরীত চিত্র টানছে তুরস্ক। তাদের রফতানি ৫ দশমিক ৪১ শতাংশ কমে এসে ঠেকেছে ৩ দশমিক ১০ বিলিয়ন ডলারে।

বাজার বিশ্লেষণ ও চ্যালেঞ্জ: বিশ্লেষকরা বলছেন, বাংলাদেশের জন্য একটি উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হলো—পণ্যের পরিমাণ ও মূল্যের ভারসাম্যপূর্ণ প্রবৃদ্ধি। চীন এখনো এগিয়ে থাকলেও, বাজারে বাংলাদেশের অবস্থান শক্ত হচ্ছে। বিশেষ করে ইউরোপীয় ক্রেতারা এখন ‘সাসটেইনেবল’ এবং ‘ভ্যালু ফর মানি’ পণ্যকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন—যা বাংলাদেশের অনুকূলে কাজ করছে।

তবে এ পথ একেবারে মসৃণ নয়। যুক্তরাষ্ট্রে পাল্টা শুল্ক আরোপ ও বাণিজ্য অস্থিরতার মধ্যে ইউরোপে চীনের আধিপত্য বৃদ্ধির আশঙ্কা বাড়ছে। সেই সঙ্গে ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের ফলে বৈশ্বিক সরবরাহব্যবস্থায় অস্থিরতা, পরিবহন ব্যয় ও ঝুঁকি বেড়েছে—যা ব্যবসায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

ভবিষ্যৎ করণীয়: বিজিএমইএর সাবেক পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, ‘বর্তমানে ইইউতে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি আশাব্যঞ্জক হলেও প্রতিযোগিতা খুবই তীব্র। আমাদের ইউনিট দাম কিছুটা বাড়লেও, চীন ও ভিয়েতনাম অনেক ক্ষেত্রে এগিয়ে। কাজেই এখন থেকেই আগাম প্রস্তুতি নিতে হবে। নতুন ইউরোপীয় নীতিমালা ও নিয়ম-কানুন মেনে চলা এবং বাজার বৈচিত্র্যকরণই ভবিষ্যতের মূল চাবিকাঠি।’

তিনি আরও বলেন, ‘শুধু ইউরোপ ও আমেরিকান বাজারের ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে নতুন নতুন সম্ভাব্য বাজারে প্রবেশ করার মাধ্যমেই টেকসই রফতানি প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করা যাবে।’

উল্লেখ্য, ২০২৫ সালের প্রথমার্ধে ইইউ বাজারে বাংলাদেশ তার সক্ষমতার প্রমাণ রেখেছে। তবে বিশ্ববাজারের দ্রুত পরিবর্তনশীল প্রেক্ষাপটে টিকে থাকতে হলে গুণগতমান, প্রযুক্তি ব্যবহার, শ্রমিক অধিকার ও পরিবেশবান্ধব উৎপাদনে আরও জোর দিতে হবে। একইসঙ্গে সরকার ও শিল্পপতিদের সম্মিলিত কৌশলই নির্ধারণ করবে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ পোশাক রফতানির পথরেখা। উৎস: বাংলাট্রিবিউন।

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়