শেখ হাসিনা পরিবার ও ১০ ব্যবসায়ী গ্রুপের বাইরে প্রাথমিকভাবে চিহ্নিত আরও ১২৫ অর্থ পাচারকারীকে আইনের আওতায় আনার উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ২০০ কোটি টাকা ও তদূর্ধ্ব ঋণ নিয়ে ফেরত না দেওয়া ইচ্ছাকৃত এসব ঋণখেলাপি ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের তথ্য নিয়ে কাজ করছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। এরকম আরও ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের তথ্য থাকলে বিএফআইইউতে দিতে হবে। সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংকের সভাকক্ষে বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের নিয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ আলোচনা হয়।
বৈঠক সূত্রে জানা যায়, আন্তর্জাতিক আইনি সংস্থার মাধ্যমে এ অর্থ ফেরত আনা হবে। উদ্ধার করা অর্থের একটি অংশ দিয়ে দেওয়ার শর্তে এসব ল’ফার্ম নিয়োগের আলোচনা চলছে। এরই মধ্যে ২০টি প্রতিষ্ঠান এতে আগ্রহ দেখিয়েছে। সব ঠিক থাকলে আন্তর্জাতিক এসব ল’ফার্ম নিজ ব্যবস্থাপনায় অর্থ এনে দেবে। অর্থ বাংলাদেশের অনুকূলে আসার পর তাদের অংশ দিতে হবে। এসব আইনি প্রতিষ্ঠানকে বেশকিছু তথ্য দিতে হবে। বিশেষ করে বাংলাদেশ থেকে যে জালিয়াতি, অনিয়ম-দুর্নীতি কিংবা অবৈধভাবে উপার্জিত অর্থ বাইরে নেওয়া হয়েছে, এখানকার আদালতের মাধ্যমে সেই তথ্য নিশ্চিত করতে হবে। অর্থ পাচার করে নেওয়া সম্ভাব্য দেশের তালিকা, ঋণের পরিমাণ, ঋণের বিপরীতে বন্ধকী সম্পত্তির মূল্য, ব্যবসার ধরনসহ বিভিন্ন তথ্য দিয়ে সহায়তা করতে হবে।
বৈঠকে উপস্থিত একজন কর্মকর্তা সমকালকে জানান, ভুয়া ঋণ নিয়ে কে কোন দেশে সম্পদ গড়েছে, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে অনানুষ্ঠানিকভাবে ব্যাংকগুলোর তা জানা। বড় পাচারকারীদের বিষয়ে বিভিন্ন সময়ে গণমাধ্যমে রিপোর্ট হয়েছে। এসব তথ্যের ভিত্তিতে এখন আনুষ্ঠানিকভাবে তথ্য সংগ্রহ করা হবে। এর পর পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার উদ্যোগ নেওয়া হবে।
১৯ মে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর জানান, ব্যাংক লুট বা বিভিন্ন উপায়ে অর্থ আত্মসাৎকারীদের এক লাখ ৭৫ হাজার কোটি টাকার দেশি-বিদেশি সম্পদ জব্দ করা হয়েছে। লুটেরাদের জব্দ অর্থ ব্যবস্থাপনায় আলাদা একটি তহবিল হচ্ছে।
ইতোমধ্যে শেখ হাসিনা পরিবার ও ১০ ব্যবসায়ী গ্রুপের অর্থ পাচার ও জালিয়াতি তদন্তে ১১টি যৌথ দল কাজ শুরু করেছে। উৎস: সমকাল।