শিরোনাম
◈ বিদ্যুৎ আমদানিতে আদানির ৪০ কোটি ডলারের ‘শুল্ক ফাঁকির’ অনুসন্ধানে দুদক ◈ হাইকোর্টে চিন্ময় দাসের জামিন ◈ আবারও ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে গোলাগুলি ◈ আজ গভীর রা‌তে বা‌র্সেলোনা ও ইন্টার মিলান মু‌খোমু‌খি ◈ প্রতিনিয়ত যুদ্ধের হুমকি, প্রস্তুতি না রাখা আত্মঘাতী: প্রধান উপদেষ্টা ◈ বড় সুখবর দ্বৈত নাগরিকত্বের আবেদনকারীদের জন্য ◈ টি-টোয়েন্টি সি‌রিজ খেল‌তে পাকিস্তানে যাচ্ছে বাংলাদেশ ◈ আমার স্বামী চায় আমি খোলামেলা জামা পরি: মডেল পিয়া বিপাশা ◈ বিচারকাজে বাধা ও হুমকি: শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ ◈ ২০২৪ সালের ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য প্রধান উপদেষ্টার ঘর হস্তান্তর: সেনাবাহিনীর দক্ষতায় অর্ধেক খরচে সফল বাস্তবায়ন

প্রকাশিত : ২৭ মার্চ, ২০২৫, ০৫:২০ বিকাল
আপডেট : ৩০ এপ্রিল, ২০২৫, ০২:০০ রাত

প্রতিবেদক : মনজুর এ আজিজ

রেমিটেন্সে রেকর্ড, ২৬ দিনে এলো ৩ বিলিয়ন ডলার!

মনজুর এ আজিজ : প্রপার চ্যানেলে প্রতিদিনই বাড়ছে প্রবাসী আয় বা রেমিটেন্স আসার গতিপ্রবাহ। আর ঈদ সামনে রেখে চলতি মাসের (মার্চ) প্রথম ২৬ দিনেই রেমিটেন্স এসেছে প্রায় ৩ বিলিয়ন (২৯৫ কোটি ডলার) ডলারের রেমিটেন্স। বাংলাদেশি মুদ্রায় (প্রতি ডলার ১২২ টাকা হিসাবে) যার পরিমাণ প্রায় ৩৬ হাজার কোটি টাকা। সে হিসাবে প্রতিদিন আসছে প্রায় ১১.৩৪ কোটি ডলার বা প্রায় ১৩৮৪ কোটি টাকা করে। দেশের ইতিহাসে এর আগে কখনও এত পরিমাণ রেমিটেন্স আসেনি।

এর আগে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ (প্রায় ২৬৪ কোটি ডলার) রেমিটেন্স আসে গত ডিসেম্বরে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ প্রবাসী আয় এসেছে গত মাস ফেব্রুয়ারিতে (প্রায় ২৫৩ কোটি ডলার)। বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানান, নতুন সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই বেড়ে যায় প্রবাসী আয়ের গতি। একই সঙ্গে কমেছে হুন্ডি ও অর্থপাচার। আবার খোলাবাজারের মতোই ব্যাংকে রেমিটেন্সের ডলারের দাম পাওয়া যাচ্ছে। এসব কারণে প্রবাসীরা বৈধ পথে রেমিটেন্স পাঠাতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন। তাছাড়া আসন্ন ঈদুল ফিতরকে কেন্দ্র করে আরও বেশি বেড়েছে রেমিটেন্স আসার গতিপ্রবাহ।

চলতি (২০২৪-২৫) অর্থবছরের আট মাসে রেমিটেন্স এসেছে ১ হাজার ৮৪৯ কোটি ডলার, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে প্রথম আট মাসে ১ হাজার ৪৯৪ কোটি ডলারের রেমিটেন্স। সে হিসাবে গত অর্থবছরের প্রথম আট মাসের চেয়ে চলতি অর্থবছরের প্রথম আট মাসে রেমিটেন্স বেড়েছে ৩৫৫ কোটি ডলার।

এর আগে গত ডিসেম্বরে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ২ দশমিক ৬৪ বিলিয়ন ডলারের রেমিটেন্স আসে দেশে। এ নিয়ে অর্থবছরের দ্বিতীয় মাস আগস্ট থেকে টানা সাত মাস দুই বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করে। অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে রেমিটেন্স এসেছে ১৯১ কোটি ৩৭ লাখ ৭০ হাজার ডলার, আগস্টে এসেছে ২২২ কোটি ১৩ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার, সেপ্টেম্বরে এসেছে ২৪০ কোটি ৪১ লাখ, অক্টোবরে এসেছে ২৩৯ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার, নভেম্বর মাসে এসেছে ২২০ কোটি ডলার, ডিসেম্বরে এসেছে ২৬৪ কোটি ডলার, জানুয়ারিতে ২১৯ কোটি ডলার এবং ফেব্রুয়ারিতে এসেছে ২৫৩ কোটি ডলার। 

একক মাস হিসাবে আগে কখনোই এত পরিমাণ রেমিটেন্স আসেনি। এর আগে করোনাকালীন ২০২০ সালের জুলাই ২ দশমিক ৫৯ বিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স এসেছিল। এবার সেই রেকর্ড ভাঙলো ২০২৪ সালের বিজয়ের মাস ডিসেম্বর। ২০২৪ সালের শেষ মাস ডিসেম্বরের পুরো সময়ে রেমিটেন্স এসেছে প্রায় ২৬৪ কোটি ডলার। যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৬৪ কোটি ৮০ লাখ ডলার বেশি। গত বছরের ডিসেম্বরে এসেছিল ১৯৯ কোটি ১০ লাখ ডলার। ২০২৪ সালের জুলাই মাস বাদে বাকি ১১ মাসই দুই বিলিয়ন ডলারের বেশি রেমিটেন্স এসেছে।

প্রবাসী আয় বৃদ্ধির ফলে দেশের ব্যাংকগুলোর ডলার সংকট অনেকটাই কমেছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। তারা বলছেন, ডলারের দাম নিয়ে যে অস্থিরতা ছিল, সেটিও অনেকটা স্বাভাবিক হয়ে এসেছে। এর আগে ব্যাংকগুলোর মধ্যে প্রতিযোগিতা করে রেমিটেন্সের ডলার কেনার প্রবণতা বেশি ছিল। ফলে একসময় প্রতি ডলারের দর ১২৮ টাকা পর্যন্ত উঠেছিল। তবে এখন ব্যাংকগুলো বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্ধারিত সর্বোচ্চ ১২৩ টাকার মধ্যেই রেমিটেন্স ডলার কিনছে, যা আমদানির ক্ষেত্রেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে।

প্রবাসী আয় হলো দেশে বৈদেশিক মুদ্রা জোগানের একমাত্র দায়বিহীন উৎস। এর বিপরীতে কোনও বৈদেশিক মুদ্রা খরচ করতে হয় না, বা কোনও দায়ও পরিশোধ করতে হয় না। অপরদিকে রপ্তানি আয়ের ক্ষেত্রে কাঁচামাল ও যন্ত্রপাতি আমদানি করতে বিদেশি মুদ্রা খরচ হয়। বিদেশি ঋণ পরিশোধেও ডলার প্রয়োজন হয়। ফলে প্রবাসী আয় বাড়লে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও দ্রুত বৃদ্ধি পায়।

বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রবাসীদের রেমিটেন্স বাড়লে দেশের অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা আসবে, মুদ্রাস্ফীতিও নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হবে। বিশেষ করে ঈদ সামনে রেখে এই উচ্চমাত্রার রেমিটেন্স দেশে খুচরা বাজার ও ভোক্তা ব্যয়ের ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়