সুজন কৈরী: [২] গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তির নাম মো. জুনায়েদ মিয়া। রোববার র্যাব-৩ এর একটি দল টঙ্গী এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে।
[৩] র্যাব জানায়, ব্যবসার জন্য ৩ লাখ ৪০ হাজার টাকা ধার করে এনে আরেক অংশীদার তাজুলকে দিয়েছিলেন ভুক্তভোগী সাইফুল ইসলাম। ১ মাসের মধ্যে পুরো টাকা ফেরত দেয়ার শর্ত থাকলেও না দিয়ে উল্টো সাইফুলকেই গলাকেটে এবং মাথা বিচ্ছিন্ন করে হত্যা করেন জুনায়েদ। হত্যার দায় টাকা ধার দেয়া ব্যক্তিদের ওপর চাপানোর উদ্দেশ্য ছিল জুনায়েদের।
[৪] সোমবার দুপুরে র্যাব-৩ এর কার্যালয়ে ক্লুলেস এই হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, গত বছরের ৯ সেপ্টেম্বর নরসিংদীর শিবপুর এলাকায় গলাকেটে মাথা বিচ্ছিন্ন করে সাইফুলকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। হত্যার পরদিন সাইফুলের স্ত্রী বাদী হয়ে ব্যবসায়িক অংশীদার তাজুল ইসলাম ও অজ্ঞাতপরিচয় বেশ কয়েকজন ব্যক্তিকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
[৫] তিনি জানান, ভিকটিম সাইফুল এবং আসামি তাজুল নরসিংদীর শিবপুরের বাসিন্দা। তারা দুজনেই দীর্ঘদিন ধরে একসঙ্গে গরুর ব্যবসা করতেন। ব্যবসার জন্য ভিকটিম সাইফুল অপর দুই ব্যবসায়ী হাসিম ও মোমেনের কাছ থেকে এক মাস পরে পরিশোধ করবেন এমন শর্তে ৩ লাখ ৪০ হাজার টাকা ধার করে এনে অংশীদার তাজুলকে দেন। শর্ত অনুযায়ী ১ মাস শেষে তাজুলের কাছে টাকা চাইলেই সমস্যার শুরু হয়।
[৬] অপরদিকে হাসিম ও মোমেন তাদের পাওনা টাকা পরিশোধ না করার কারণে ভিকটিম সাইফুলকে চাপ প্রয়োগ ও কটূক্তি করতে থাকেন। ফলে ভিকটিম সাইফুল মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েন। পরে সাইফুল এলাকার স্থানীয় লোকজনদের সহযোগিতায় একটি গ্রাম্য শালিসের মাধ্যমে তাজুলের সঙ্গে টাকা পরিশোধের বিষয়টি স্ট্যাম্পের মাধ্যমে চুক্তি করে নেন। এতে শর্ত থাকে ১৫ দিনের মধ্যে সব টাকা পরিশোধ করে দেয়ার। তবে চুক্তির স্ট্যাম্পে সই হওয়ার পর তাজুল ক্ষিপ্ত হয়ে সালিশ থেকে উঠে যান এবং সাইফুলকে দেখে নেয়ার হুমকি দেন।
[৭] এরই ধারাবাহিকতায় গত ৯ সেপ্টেম্বর সাইফুলকে ব্যবসার কথা বলে ফোন করে ঈদগাঁ মাঠে ডেকে নেয়া হয়। সেখানে তাজুল ও সাইফুল কথা কাটাকাটি শুরু করেন। একপর্যায়ে তাজুল সাইফুলের গলায় থাকা গামছা পেঁচিয়ে ধরেন। সেইসঙ্গে জোনায়েদ এবং শাকিল জাপটে ধরলে সাইফুল অজ্ঞান হয়ে যান। ওই অবস্থায় সাইফুলকে জুনায়েদের সহায়তায় তাজুল দা দিয়ে কুপিয়ে মাথা বিচ্ছিন্ন করে ফেলেন এবং ঘটনাস্থল থেকে সবাই পালিয়ে যান।
[৮] সাইফুলকে হত্যা করে দায় হাসিম ও মোমেনের ওপর চাপিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা অপরাধীদের ছিল জানিয়ে র্যাব-৩ এর অধিনায়ক বলেন, সাইফুলের সঙ্গে তাজুলের টাকা-পয়সা লেনদেন নিয়ে মনোমালিন্যের কারণেই তাকে হত্যা করা হয়েছে।
[৯] লে. কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, এই ঘটনায় দায়ের করা মামলায় তাজুল ইসলামের সঙ্গে সরাসরি জড়িত অন্যান্য আসামিদের অজ্ঞাতপরিচয় হিসেবে দেওয়া হয়েছে। পরে তাজুল এবং সোলাইমান আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হয়। তাজুলের স্বীকারোক্তি এবং সোলাইমানের জবানবন্দিতে এই নৃশংস হত্যার অন্যতম সহযোগী জোনায়েদ এবং শাকিলের নাম প্রকাশ পায়। ঘটনার পর থেকেই জোনায়েদ এবং শাকিল পলাতক ছিলেন। সম্পাদনা: সমর চক্রবর্তী
এসকে/এসবি২
আপনার মতামত লিখুন :