জাহাঙ্গীর লিটন, লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুরে স্বামীর পরকীয়া প্রেমের বলি হয়েছেন সেলিনা আক্তার নামের এক গৃহবধূ। পরকীয়া প্রেমের প্রতিবাদ করায় প্রবাস ফেরত স্বামী জসীম উদ্দিন তাকে নির্যাতন করে নৃশংসভাবে হত্যা করে। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের পরে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে প্রভাবিত করার অভিযোগ করেছেন নিহতের স্বজনরা।
এ কারণে খুন করেও গ্রেপ্তার না হয়ে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে অভিযুক্ত জসীম। তাই নিহত গৃহবধূর সংক্ষুব্দ সন্তানরা বাবার গ্রেপ্তার ও ফাঁসির দাবিতে এলাকাবাসীদের নিয়ে রাস্তায় নেমেছে।
এ লক্ষ্যে সোমবার (৫ জুন) সকালে ঢাকা-লক্ষ্মীপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের জকসিন বাজারে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন থেকে এসব অভিযোগ করেন স্বজন ও এলাকাবাসী। এতে অংশ নেয় নিহতের চার ছেলে-মেয়ে। তারা হলো রোজিনা আক্তার, আসমা আক্তার, লাভলী আক্তার ও আব্দুল আজিজ। এছাড়া স্থানীয় শতাধিক এলাকাবাসী মানববন্ধনে অংশ নেয়।
এ সময় নিহতের ভাই মোক্তার হোসেন জানান, সদর উপজেলার বাঙ্গাখাঁ ইউনিয়নের কাচারী বাড়ীর প্রবাসী জসীম উদ্দিন তার ভগ্নিপতি। অর্থের লোভ দেখিয়ে সে বিভিন্ন নারীর সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে দৈহিক সম্ভোগ করে থাকে। এসব নারীদের অনেককে সে (জসীম) বিদেশে নিয়ে গিয়েও সম্ভোগ করেছে বলে অভিযোগ করে জানান। সবশেষ শাহিন আক্তার সাথী নামের এক নারীর সাথে পরকীয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্বামী জসীমের সাথে বিবাদ হয় স্ত্রী সেলিনা আক্তারের। এর জের ধরে গত ২৭ মে সেলিনাকে তার বাবার বাড়ি থেকে নিজ বাড়িতে ডেকে নিয়ে নির্মম নির্যাতন শেষে হত্যা করে। পরে মুখে বিষ ঢেলে দেয়।
এ ঘটনায় সদর থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ প্রভাবিত হয়ে মামলা গ্রহণ করেনি বলে দাবি করেন নিহতের ভাই। এছাড়া মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে সদর হাসপাতালের চিকিৎসককে প্রভাবিত করে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে হত্যাকে আত্মহত্যার ঘটনা বলে সৃজন করে। একারণে ঘটনার এক সপ্তাহ পর ভাই মোক্তার হোসেন বোনের হত্যার বিচার চেয়ে লক্ষ্মীপুর আদালতে অভিযোগ দায়ের করেন। এতে ভগ্নিপতি জসীম সহ ১২ জনকে অভিযুক্ত করা হয়।
তিনি এ ঘটনার বিচারিক তদন্ত সাপেক্ষে খুনীদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। মানববন্ধনে অংশ নিয়ে নিহত গৃবধূর তিন কন্যা ও এক ছেলে তাদের বাবার বিচার দাবি করে।
এসময় বড় মেয়ে রোজিনা আক্তার কান্নাজড়িত কন্ঠে বক্তব্যে জানায়, তাদের বাবা পরকীয়া প্রেমে জড়িত ছিল। তার মা সেলিনা এসবে বাধা দেয়। এর জের ধরে বাবা তার মা-কে নির্মম নির্যাতন করে হত্যা করে। তাই মায়ের হত্যাকারী বাবা জসীমের ফাঁসির দাবি জানায় সে।
লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আনোয়ার হোসেনের সাথে কথা বলার চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।
সদর থানার ওসি মোসলেহ উদ্দিন বলেন, এ ঘটনায় থানায় অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত করছে পুলিশ।
প্রতিনিধি/এসএ
আপনার মতামত লিখুন :