মাসুদ আলম: রাজধানীর যমুনা ফিউচার পার্কের সামনে বাসের ধাক্কায় নর্দান বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নাদিয়া সুলতানা নিহতের ঘটনায় চালক ও হেলপারকে ২ দিনের রিমান্ড দিয়েছেন আদালত। সোমবার ভাটারা থানার মামলায় বাসচালক মো. লিটন (৩৮) ও হেলপার মো. আবুল খায়েরকে (২২) ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে ঢাকা মহানগর আদালতে হাজির করে পুলিশ। শুনানি শেষে আসামিদের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
ভাটারা থানার ওসি আবুল বাসার মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান বলেন, সোমবার সকালে বাড্ডার আনন্দনগরের সার্জেন্ট টাওয়ারের পেছনে ভাড়া বাসা থেকে আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়। আদালত চালক ও হেলপারকে ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। বাসচালক লিটন ভোলা সদরের ইলিশার মো. কালু মিয়ার ছেলে ও হেলপার আবুল খায়ের একই জেলার সদরের বিদুরিয়া গ্রামের হাসেম গরামীর ছেলে।
এদিকে সোমবার সংবাদ সম্মেলনে পুলিশের গুলশান বিভাগের ডিসি আ. আহাদ বলেন, রোববার দুপুরে নর্দান বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের প্রথম সেমিস্টারের শিক্ষার্থী নাদিয়া মোটরসাইকেলযোগে উত্তরা থেকে আসছিলেন। মোটরসাইকেল চালাচ্ছিলেন তার বন্ধু একই বিশ্ববিদ্যালয়ের ইইই দ্বিতীয় সেমিস্টারের ছাত্র মেহেদী হাসান। যমুনা ফিউচার পার্কের সামনে ভিক্টর পরিবহনের একটি বাস দ্রুত ও বেপরোয়া গতিতে মোটরসাইকেলে ধাক্কা দিলে নাদিয়া রাস্তায় পড়ে যায়। মাথার ওপর দিয়ে বাসের চাকা যাওয়ায় ঘটনাস্থলেই নাদিয়ার মৃত্যু হয়।
তিনি আরও বলেন, পরে ভাটারা থানা পুলিশ ঘাতক বাসটি আটক করে। নাদিয়া পটুয়াখালী গলাচিপা পূর্ব নেটার জাহাঙ্গীর হোসেনের মেয়ে। রাজধানীর উত্তরার ৯নং সেক্টর, রোড নং-৯/১ বাসায় থাকতেন নাদিয়া। নাদিয়ার মৃত্যুর পর ভাটারা থানায় মামলা করেন তার বাবা জাহাঙ্গীর। ঘাতক চালক ও হেলপারকে গ্রেপ্তারে ভাটারা থানার ওসির নেতৃত্বে একাধিক টিম অভিযান শুরু করে। রাতেই সিসি টিভি ফুটেজ সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করে অভিযুক্ত বাসের চালক ও হেলপারকে শনাক্ত করা হয়।
ডিসি বলেন, রাজধানীর সড়কে শিক্ষার্থী মৃত্যুর ঘটনায় ঘাতক হিসেবে বাসই বেশি দেখা যায়। ভিক্টর পরিবহনের বাসচাপায় এর আগেও শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। ওই সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোরতায় বাসে বাসে রেষারেষি বন্ধ হয়েছিল। এখন আবার শুরু হয়েছে।
আ. আহাদ বলেন, গুলশান ক্রাইম ও ট্রাফিক বিভাগসহ ডিএমপি সড়ক পরিবহন আইন মানার জন্য সচেতনতামূলক কাজ করে যাচ্ছি। আমরা যারা সাধারণ যাত্রী ও পথচারী, সড়কে চলাচলের ক্ষেত্রে সবাইকে আইন নিয়ম-কানুন মানতে হবে, জানতে হবে। তদন্তে অবশ্যই দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
সুপ্রভাতের নাম বদলে ভিক্টর হওয়া বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। আসামিদের রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে এসব বিষয়ে জানতে চাওয়া হবে।
নাদিয়ার বাবা জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, মেয়ের স্বপ্ন ছিল বড় ফার্মাসিস্ট হবে। আমার সব শেষ। আমি পরিবার নিয়ে খেয়ে না খেয়ে লাখ লাখ টাকা খরচ করে মেয়েকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করেছিলাম।
এমএ/এসবি২
আপনার মতামত লিখুন :